২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৩ রজব ১৪৪৬
`

স্থায়ী আবাসনের দাবি উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর

-

স্থায়ী আবাসনসহ মৌলিক চাহিদা পূরণের দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে উর্দুভাষী ক্যাম্পবাসীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও সচিব বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেয়া হয়। মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে উর্দু স্পিকিং পিপলস ইউথ রিহ্যাবিলিটেশন মুভমেন্ট বাংলাদেশ ও এমআরডিএম।
এরপর এক সমাবেশে বক্তারা বলেন, উর্দুভাষী ক্যাম্পবাসীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে মানবেতর জীবনযাপন করছে এবং তারা সব ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার। রাষ্ট্রীয় পরিচয় না থাকায় তাদের সন্তানরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে বিড়ম্বনার মুখে পড়ে। কর্মসংস্থানের কোনো সুযোগ সুবিধা না থাকায় কোনো রকম জীবিকা নির্বাহ করে বেঁচে থাকতে হচ্ছে।
তারা বলেন, উচ্চ আদালত নাগরিক স্বীকৃতি দিলেও ১৬ বছর পার হয়ে গেলেও উর্দুভাষী ক্যাম্পবাসীদের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। উর্দুভাষী ক্যাম্পবাসীদের বিরুদ্ধে বিগত সরকারের সময় পাঁচটি বিস্ফোরক, অগ্নিসংযোগ, গাড়ি ভাঙচুর ও প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ লুটপাটের মামলা করা হয়। এ ছাড়া মিথ্যা মামলায় উর্দুভাষী ক্যাম্পবাসীদের জড়ানো হয়েছে। এ মামলায় আবদুল কুদ্দুস শাওনকে গ্রেফতার করার জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

উর্দুভাষী ক্যাম্পবাসীরা যেখানে বাস করছেন সেখানে প্রতিটি প্রতিটি পরিবারকে ৩ শতাংশ জমি দিয়ে স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে প্রতিটি পরিবার হতে অন্তত একজন ছেলে ও একজন মেয়েকে সরকারিভাবে ডিগ্রি পর্যন্ত ফ্রি শিক্ষা সুযোগ, বিদেশে চাকরির ব্যবস্থাসহ মহিলাদের প্রশিক্ষণ, ক্যাম্প থেকে উচ্ছেদ না করা, সংসদে অন্তত চারজন বিভাগীয় প্রতিনিধি হিসেবে সংসদ সদস্য হওয়ার সুযোগ ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন, সিনিয়র সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, আশরাফ কায়সার, উর্দু স্পিকিং পিপলস ইউথ রিহ্যাবিলিটেশন মুভমেন্ট বাংলাদেশের সভাপতি মো: সাদাকাত খান ফাক্কু ও সাধারণ সম্পাদক শাহিদ আলী বাবলু।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ২০১২ সাল থেকে উর্দুভাষীদের সংগঠন উর্দু স্পিকিং পিপলস ইউথ রিহ্যাবিলিটেশন মুভমেন্টের (ইউএসপিওয়াইআরএম) সভাপতি সাদাকাত খান ফাক্কু স্বৈরাচারবিরেধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। গণতন্ত্রের জন্য তিনি ও তার সংগঠনের নেতাকর্মীদের দীর্ঘ লড়াইয়ের ইতিহাস আছে। তাদের সাথে অবিচার না করে তাদের মানবেতর জীবনযাপন থেকে মুক্ত করতে সরকারকে সহযোগিতা করা উচিত।
নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ্ কায়সার বলেন, সাদাকাত খান ফাক্কু কালশিতে ৯ বিহারিকে পুড়িয়ে হত্যার বিচারের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করেছেন। তখন আমরাও তাদের সাথে রাজপথে ছিলাম। ২০১৮ সালের প্রহসনের নির্বাচনের আগে সাদাকাত খান ফাক্কু ও তার ছেলেসহ ১৭২ জন উর্দুভাষীর নামে স্বৈরাচারের দোসররা গায়েবি মামলা করেছিল। তাদের ওপর হামলা করেছিল। তাদের অফিসে তালা দেয়া হয়েছিল। এখন আবার তাদের ঢালাও মামলায় আসামি করা হচ্ছে। এটি দুঃখজনক।
ইউএসপিওয়াইআরএমের সভাপতি সাদাকাত খান ফাক্কু বলেন, ভলু ও আবদুল কুদ্দুস শাওন নামের দুই উর্দুভাষী নেতা ঢালাও মামলায় কারাগারে আছেন। এর মধ্যে তিন মাস আগে মিরপুর মডেল থানার মামলায় গ্রেফতার ভলুর মা আজকে ইন্তেকাল করেছেন। ভলু তার মাকে মাটি দিতে পারবে কি না সেটা আমরা জানি না। এত দিন আমরা দেশের কথা চিন্তা করে বৃহত্তর কোনো আন্দোলনে যাইনি। উর্দুভাষীদের নামে দায়ের হওয়া এসব এসব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement