দেশে চীনাবাদামের উৎপাদন বাড়ছে
চলতি মৌসুমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৯০ হাজার টন- এস এম রহমান পটিয়া-চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম)
- ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:৫০
পুষ্টিগুণে ভরা জনপ্রিয় খাবার চীনাবাদাম ছোট-বড় সব বয়সের মানুষের কাছে সমান প্রিয়। বর্তমানে দেশে প্রতি বছরই চীনাবাদামের উৎপাদন ও চাষের পরিধি দুটোই বাড়ছে। চলতি মৌসুমে (২০২৪-২৫) ৯৫ হাজার হেক্টর জমিতে এক লাখ ৮৮ হাজার ৯০৯ মেট্রিক টন চীনাবাদাম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশে চীনাবাদামের উৎপাদন বৃদ্ধিব জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় সমগ্র দেশের চরাঞ্চল বিশেষ করে নদীর তীরবর্তী (চর যা বাদাম চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী) এলাকায় চীনাবাদামের উৎপাদন ও চাষের পরিধি বৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ‘বাংলাদেশের চরাঞ্চলে আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তির সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৫ জেলায় ১২১টি উপজেলায় চীনাবাদামের প্রদর্শনী ও কৃষকদের উন্নত প্রশিক্ষণ মাধ্যমে চীনাবাদামের উৎপাদন ও চাষের পরিধি বৃদ্ধির কার্যক্রম শুরু করেছেন যা বর্তমানে চলমান রয়েছে।
গতকাল বিকেলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো: ছাইফুল আলম নয়া দিগন্তকে বলেন, প্রতি বছরই চীনাবাদাম চাষের পরিধি ও উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
এবারো চট্টগ্রাম অঞ্চলসহ দেশের ১৪টি কৃষি অঞ্চলে চীনাবাদামের ভালো ফলন আশা করছেন চাষিরা। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউশন ১২টি বাদামের উন্নত জাত উদ্ভাবন করেন যা দেশজুড়ে চাষিরা আবাদ করছেন। এ কারণে দেশে প্রতি বছর চীনাবাদামের উৎপাদন ও চাষের পরিধি বাড়ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে ২০২১-২০২২ রবি মৌসুমে দেশে ৮৮ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে চীনাবাদাম উৎপাদন হয়েছিল এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর। চলতি মৌসুমে তা বেড়ে (রবি) সমগ্র দেশে ৯৫ হাজার হেক্টর জমিতে এক লাখ ৮৮ হাজার ৯০৯ মেট্রিক টন চীনাবাদাম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর মধ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে ৪৭ হাজার ৬৭২ মেট্রিক টন। ঢাকা অঞ্চলে আট হাজার ৩১৪ হেক্টর জমিতে ১৬ হাজার ১৭২ মেট্রিক টন। ময়মনসিংহ অঞ্চলে দুই হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে চার হাজার ৩৪৩ মেট্রিক টন। কুমিল্লা অঞ্চলে ৭০০ হেক্টর জমিতে এক হাজার ৪১৩ মেট্রিক টন। সিলেট অঞ্চলে দুই হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে তিন হাজার ৯৬০ মেট্রিক টন। রাঙ্গামাটি অঞ্চলে দুই হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে পাঁচ হাজার ৮৩৮ মেট্রিক টন। রাজশাহী অঞ্চলে এক হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে তিন হাজার ৫৫ মেট্রিক টন। বগুড়া অঞ্চলে এক হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে এক হাজার ৭৬২ মেট্রিক টন। রংপুর অঞ্চলে পাঁচ হাজার ৭৬১ হেক্টর জমিতে ১২ হাজার ৩৮০ মেট্রিক টন। দিনাজপুর অঞ্চলে ৯ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে ২৩ হাজার ১৮১ মেট্রিক টন। যশোহর অঞ্চলে এক হাজার ৬৯৬ হেক্টর জমিতে তিন হাজার ৪৮৯ মেট্রিক টন। খুলনা অঞ্চলে ৫৯৫ হেক্টর জমিতে এক হাজার ২২০ মেট্রিক টন। বরিশাল অঞ্চলে ১৮ হাজার ৯৬৮ হেক্টর জমিতে ৩৪ হাজার ৮৫১ মেট্রিক টন। ফরিদপুর অঞ্চলে সাত হাজার ২৭১ হেক্টর জমিতে ১৩ হাজার ৪০৬ মেট্রিক টন।
গতকাল চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা কৃষি অফিসার আবু সালেক বলেন, উপজেলায় এবার ৩০ হেক্টর জমিতে চীনাবাদাম চাষ হয়েছে। তিনি জানান প্রতি বছরের মতো এবারো উপজেলায় চীনাবাদামের ভালো ফলন হবে বলে প্রত্যাশা করছেন। চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি অফিসার আজাদ হোসেন বলেন, উপজেলায় এবার ৫০ হেক্টর জমিতে চীনাবাদাম চাষ হয়েছে এখন ফলন উঠতে কিছুটা সময় লাগবে। আনোয়ারা উপজেলায় এবার ৫৫ হেক্টর জমিতে চীনাবাদামের চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি অফিসার রমজান আলী।
বাংলাদেশের চরাঞ্চলে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক মঈনুল হক বলেন, দেশের ৩৫ জেলায় ১২১টি উপজেলার চরাঞ্চলে চীনাবাদাম উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কৃষকের মধ্যে আধুনিক প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে এবং চলমান রয়েছে।
তৈলবীজ গবেষণা কেন্দ্র গাজীপুরের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রবিউল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে চীনাবাদামের ১২টি উন্নত জাত অবমুক্ত করা হয়েছে। আরো উন্নত জাত উদ্ভাবনের কাজ চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, অবমুক্ত হওয়া প্রতিটি জাতের গড়ে প্রতি হেক্টর জমিতে ২.৫ মেট্রিক টন চীনাবাদাম উৎপাদন হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা