১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৬
`

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে ২৩ শিক্ষক-কর্মকর্তার বাধা

-

প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পার হলেও শেষ হয়নি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ। উদ্যোগ নেয়া হলেও বাধার মুখে পড়তে হয়েছে বারবারই। স্থানীয় কিছু বাসিন্দা আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের বাধায় আটকে যায় বহুল প্রতীক্ষিত এই সীমানা প্রাচীর।
জানা যায়, এর আগে ২০২২ সালের মার্চ মাসে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করেন তৎকালীন ভিসি ড. সৌমিত্র শেখর দে। দুই কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনি প্রায় এক হাজার ৫০০ মিটার দীর্ঘ সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করেন, যা এক বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো অসমাপ্তই রয়ে গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশে প্রাচীর নির্মাণের কাজ শেষ হলেও গত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় স্থানীয়রা নতুন বিজ্ঞান ভবন, বঙ্গমাতা হল সংলগ্ন দেয়াল, বটতলা ও চুরুলিয়া মঞ্চসহ বিভিন্ন অংশ ভেঙে ফেলেন। এ ছাড়া জঙ্গলবাড়ি, নিমাইসিটি ও চারুদ্বীপ সংলগ্ন এলাকার সীমানা প্রাচীরের কাজ নিয়ে শুরু হয় সঙ্কট।
সর্বশেষ ২০২৪ সালের ১৮ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বেষ্টনীর অসম্পন্ন কাজ সম্পন্নের কথা জানায়। সেই সাথে ১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য প্রধান দু’টি গেট ব্যবহার করার অনুরোধ করা হয়।
তবে এবারো বাধার সম্মুখীন হয়েছেন তারা। নির্ধারিত তারিখ পার হলেও শেষ হয়নি সীমানা প্রাচীরের নির্মাণ। একদল স্থানীয় বাসিন্দা ভিসি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে দেখা করে মৌখিকভাবে আবেদন জানায়। তার প্রেক্ষিতে ভিসি তাদের বিকল্প রাস্তা নির্মাণে ১৫ দিন সময় দেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩ শিক্ষক কর্মকর্তা ভিসি বরাবর লিখিত আবেদন জানালে তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আরো ১৫ দিন অর্থাৎ ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত সময় দেন ভিসি। সেই সাথে তাদের ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলে বিকল্প রাস্তা তৈরির কথা বলা হয়। ২৩ শিক্ষক-কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন- ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সেক্রেটারি ড. সোহেল রানা, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ড. নজরুল ইসলাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের সঞ্জয় মুখার্জি, নৃবিজ্ঞান বিভাগের আসিফ ইকবাল আরিফ, নাজমুল ইসলাম (কেয়ারটেকার, এইচআরএম), নাজমুল হুদা (ডেপুটি রেজিস্ট্রার), স্বপন কুমার শীল (উপ-প্রধান প্রকৌশলী), আমিনুল হক (সহকারী রেজিস্ট্রার, কলা অনুষদ), জহিরুল ইসলাম (কেয়ারটেকার, ফিন্যান্স), আবু বকর সিদ্দিক (অফিস সহকারী, মার্কেটিং), মোজাম্মেল হক (ইলেকট্রিশিয়ান, প্রকৌশল বিভাগ), আব্দুল হাই (পাম্প অপারেটর, প্রকৌশল বিভাগ), তাইজুদ্দিন (কেয়ারটেকার, মার্কেটিং) মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন (ইইই বিভাগ), জুনায়েদ কবির (সহকারী হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, অর্থ ও হিসাব), আসাদুজ্জামান আসাদ (নির্বাহী প্রকৌশলী, বিদ্যুৎ), কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কেয়ারটেকার কামরুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম ও শামসুজ্জামান, প্রকৌশল দফতরের এস এম আতিকুল ইসলাম, ভিসির দফতর সেকশন অফিসার তানভীর হাসান, ইইই বিভাগের মৃত আবুল হোসেন ও রেজিস্ট্রার দফতরের গার্ড আব্দুর রাজ্জাক।
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রাচীর নির্মাণ হলে তাদের চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। ক্যান্টনমেন্টেও একাধিক রাস্তা বা পকেট গেট থাকে উল্লেখ করে মেস মালিক আব্দুল হান্নান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার আগেই এখানে রাস্তা ছিল। হঠাৎ করে তা বন্ধ করে দিলে আমাদের সমস্যা হবে। অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ক্যান্টনমেন্টেও একাধিক রাস্তা খোলা রাখা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement