১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪ মাঘ ১৪৩১, ১৭ রজব ১৪৪৬
`

বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ‘নিজ খরচেই’ এবার ভাঙলেন সেই অধ্যক্ষ

-


সরকারিভাবে বরাদ্দ না থাকলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার প্রশাসনকে খুশি রাখতে ‘নিজের পকেট’ থেকে লাখ লাখ টাকা খরচ করে বানানো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটি এবার সেই অধ্যক্ষ ‘নিজ খরচেই’ ভেঙে ফেলেছেন। তবে ম্যুরাল অপসারণ করা হলেও গত বৃহস্পতিবার (সরকারি অফিস সময়) সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি তার পদে বহাল থাকায় জনমনে নানা প্রশ্ন উঠছে।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা দিনাজপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ঢুকে ‘সযত্নে’ ঢেকে রাখা ম্যুরালটির সামনের অংশ ভেঙে গুড়িয়ে দেন। এরপর অধ্যক্ষ মাসুদ রানার নির্দেশে তার কর্মচারীরা ম্যুরালটি একটি ব্যানার দিয়ে মুড়িয়ে ঢেকে রাখেন। তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি। উপরের নির্দেশে তিনি তার কর্মচারীদের দিয়ে ৩ দিন আগেই ভেঙে ফেলেন।

দিনাজপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষের নানা অনিয়ম দুর্নীতির পাশাপাশি নিজ খরচে ম্যুরাল বানানোর সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় নয়া দিগন্তে। বিষয়টি নজরে আসে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ঊর্ধŸতন কর্মকর্তাদের। একজন কর্মকর্তা এবিষয়ে তার কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে। বলেন, তিনি কী কারণে এখনো ম্যুরালটি তার অফিসের সামনে সাজিয়ে রেখেছেন? এমন ক্ষোভ প্রকাশের পর ম্যুরালটি রাতেই ভেঙে ফেলা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
দিনাজপুর টিটিসি সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর প্রধান কার্যালয়ের কতিপয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দীর্ঘদিন যাবৎ তাকে ‘শেল্টার’ দিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে তিনি যা ইচ্ছে তাই করতে পারছেন। এ সুযোগে তিনি প্রশিক্ষার্থীদের জন্য কেনাকাটা থেকে শুরু করে পদে পদে অনিয়ম দুর্নীতি করছেন। এর মধ্যে তার অফিসের দ্বিতীয় তলার ইলেকট্রিক্যাল বিভাগে পিএলসি মেশিনটি অচল হয়ে পড়ে আছে। সেটি নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ।

টেন্ডার অনুযায়ী পিএলসি মেশিনটি যে দেশ থেকে কেনার কথা সেই দেশ থেকে কেনা হয়নি। শুধু তাই নয়, ওই মেশিনের কোনো কার্যক্রম দিনাজপুর টিটিসিতে নেই। তারপরও কেন এটি কেনা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এর আগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাসুদ রানা, কম্পিউটার বিভাগের সাবেক চিফ ইন্সট্রাক্টর নিমাই কুমার দত্ত ও ইলেকট্রিক্যাল ট্রেডের চিফ ইন্সট্রাক্টর শেখ রাকিবুল হাসানের যোগসাজশে ৩ কোটি ৬০ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩ টাকা আত্মসাতের বিষয়ে মন্ত্রণালয়, বিএমইটি ও জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে। ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বঙ্গবন্ধুর মুর্যরাল নির্মাণে সরকারি টাকা অপচয় করেন অধ্যক্ষ মাসুদ রানা। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিলেও সেটি ধামাচাপা পড়ে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ। এসব অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ মাসুদ রানার কাছে আগে জানতে চাইলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তিনি বানাননি, স্থানীয় এমপি বানিয়েছিলেন। তা ছাড়া তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সব অভিযোগের তদন্ত হয়েছে। তবে এ সবের কোনোটিরও সত্যতা মেলেনি।


আরো সংবাদ



premium cement