মিরসরাইয়ে ছাত্রদল-যুবদল সমর্থকদের সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত
- মিরসরাই (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
- ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৬
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা স্টেডিয়ামে চলছে মাসব্যাপী বাংলাদেশ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী কল্যাণ সোসাইটির ব্যানারে শিল্প ও বাণিজ্য মেলা। মেলা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ছাত্রদল ও যুবদলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত ও আটজন আহত হয়েছে। নিহতের নাম জাহেদ হোসেন মুন্না (২২)। তিনি মিরসরাই পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আহবায়ক। গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার সময় সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় রাতেই মামলা দায়ের করেন জাহেদ হোসেন মুন্নার ভগ্নিপতি আরাফাত হোসেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে মিরসরাই পৌরসভা যুবদলের আহবায়ক কামরুল হাসান (৩৭), নাজমুস সাকিব মারুফ (২২), শাহ আলম (৪৭), আরমানকে (২৬) গ্রেফতার করছে। জানা গেছে, গত ২০ ডিসেম্বর শুরু হওয়া এই মেলা ঘিরে এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যার পর বাণিজ্যমেলায় মিরসরাই পৌরসভা বিএনপির সদস্যসচিব জাহিদ হুসাইনের অনুসারীদের সাথে পৌরসভা যুবদলের আহবায়ক কামরুল হাসানের অনুসারীদের কথা কাটাকাটি হয়। পরবর্তীতে মেলা প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে কামরুলের অনুসারীরা জাহিদ হুসাইনের অনুসারীদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আহবায়ক জাহেদ হোসেন মুন্না (২২) নিহত হন। এ ছাড়া অন্য আটজন আহত হন। আহতরা হলেন, সজীব (২৩), আরাফাত (২৩), আসিফ (২০), রাহাত (২০), হাসান (২৮), রাশেদ (১৯), হৃদয় (২৭) ও শাকিল (২০)। আহতরা মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মিরসরাই সেবা আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। রাতেই গুরুতর আহত শাকিলকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
নিহত জাহেদ হোসেন মুন্না মিরসরাই পৌরসভা বিএনপির সদস্যসচিব জাহিদ হুসাইনের অনুসারী। মিরসরাই পৌরসভা বিএনপির সদস্যসচিব জাহিদ হুসাইন ও মিরসরাই পৌরসভা যুবদলের আহবায়ক কামরুল হাসান চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের সমর্থক।
সংঘর্ষে আহত সজীব জানান, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাণিজ্যমেলায় পৌরসভা যুবদলের আহ্বায়ক কামরুল হাসানের ২০-২৫ জন অনুসারী ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। নিহত মুন্না ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তিনি মিরসরাই বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে মোবাইলে গেমস খেলছিলেন। কামরুলের অনুসারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
এ বিষয়ে মিরসরাই পৌরসভা বিএনপির সদস্যসচিব জাহিদ হুসাইন বলেন, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে শুনেছি। এ ঘটনায় বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। নিহতের পরিবারের পাশে থাকব।
মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তন্ময় জামশেদ আলম এ বিষয়ে বলেন, মুন্না নামের একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। এ ছাড়া আহত রাহাত, হৃদয় ও শাকিলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। শাকিলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
মিরসরাই থানার ওসি আতিকুর রহমান জানান, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহতের ঘটনায় ১১ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহত জাহেদের ভগ্নিপতি আরাফাত হোসেন। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা হিসেবে পৌরসভা যুবদলের আহবায়ক কামরুল হাসানসহ চারজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা