অভ্যুত্থানের চেতনা অটুট রেখে সংস্কার করতে হবে : গোলাম পরওয়ার
- গাজীপুর জেলা ও মহানগর প্রতিনিধি
- ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০৫
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ও ঐক্যকে অটুট রেখে জাতীয় ঐক্যের পরিবেশ তৈরি করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। যারা সংস্কার ছাড়া নির্বাচন চান, তারা সংবিধানের দোহাই দেন। সংস্কার করতে গেলে, আইন লাগে, সংবিধান লাগে, সংসদ লাগে এসব ইস্যু সামনে এনে একটি বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। আমি তাদের কাছে প্রশ্ন করতে চাই ড. ইউনূস এসেছিলেন কোন আইনে, কোন সংবিধানে লেখা ছিল, কোন বিধিতে হলো। উপদেষ্টা পরিষদ হলো, হাসিনা চলে গেল। শপথ হলো কোন আইনে। সংবিধান এবং আইন কী? সংবিধান হলো জন-আকাক্সক্ষা , জনগণ যা চায়। কোটি কোটি মানুষ যা চাওয়ার লিখিত রূপ হচ্ছে সংবিধান। অতীতেও কেয়ারটেকার সরকার গঠনের সময়ও সংবিধান মানা হয়নি। সুতরাং সংবিধান ও আইনের কথা বলতে গেলে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারইতো বেআইনি। উপদেষ্টাও বেআইনি। রাষ্ট্র এবং জনগণের আকাক্সক্ষা পূরণে একই অবাধ নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আইনের যেসব সংস্কার করা প্রয়োজন, তা যদি না করি তাহলে ’১৪, ’১৮ ও ’২৪ এর মতো নির্বাচন হবে। এত রক্ত দিয়েছি কি আবার সেরকম নির্বাচনের জন্য? আমরাতো রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানে সংস্কারতো আমরা চাচ্ছি না। আর অন্তর্বর্তীকালীন এ সরকারের পক্ষে সব সংস্কার করা সম্ভব না এটা আমরাও জানি। তবে সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, জনপ্রশাসনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অর্গানের সংস্কার করতে হবে। সেখানে আগের ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের দোসররা ঘাপটি মেরে বসে আছে। তাদের দিয়ে নির্বাচন করলে সব শহীদের রক্তদান বৃথা যাবে। জুলাই অভ্যুত্থানের গণ-আকাক্সক্ষাই সেই সংস্কার ও পরিবর্তনের অধিকার রাখে। এই কাজে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। যারা এই সংস্কার প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা না করে আইনকানুন, বিধির দোহাই দিয়ে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার বা সমস্যা তৈরি করার চেষ্টা করবে, বুঝতে হবে তারা হয়তো সুষ্ঠু নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার ভয় করছে অথবা মাস্তানি করে কেটে কুটে ভোটের বাক্স ভর্তি করে বিজয়ী হতে চায়। জামায়াতে ইসলামীর লোকেরাতো ভোট কাটতে পারবে না। আমরাতো মাস্তান না। আমাদের তো চাঁদাবাজ নই, আমরাতো ভোটকেন্দ্র দখল করতে পারি না। তাই নির্বাচন নিরপেক্ষ না হলে আমাদের সমস্যা বেশি।
তিনি গতকাল শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গাজীপুর জেলা শাখার কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর মুক্তিযোদ্ধা কলেজ মাঠে এ কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গাজীপুর জেলা শাখার আমির ড. মো: জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ড. মো: সামিউল হক ফারুকী, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মো: আবুল হাশেম খান, গাজীপুর মহানগর শাখার আমির অধ্যাপক মুহা: জামাল উদ্দিন, সিনিয়র নায়েবে আমির মোহাম্মদ আব্দুল হাকীমসহ জেলা উপজেলা ও মহানগর পর্যায়ের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ। এ ছাড়াও জুলাই আগস্ট আন্দোলনে আহত একজন পোশাককর্মী মুকুল কুমার দত্ত এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
জামায়াত সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা একটি কালো যুগ পার করেছি বিগত ১৮টি বছর। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে প্রকাশ্য দিবালোকে খুনি সন্ত্রাসী ফ্যাসিস্ট সব গুম, হত্যাকাণ্ড, রিমান্ড, ক্রসফায়ারের মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনার নির্দেশে পল্টনে লগি-বৈঠা দিয়ে আমাদের সাতজন তরুণ নেতাকে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তাদের লাশের ওপর উঠে ঘৃণ্য উল্লাস করেছিল। আমরা সেই ইতিহাসের ছবি ভুলে যাইনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা