জনগণের ঐক্যের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের আভাস পাচ্ছেন ড. কামাল হোসেন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:১৮
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য তৈরি হয়েছে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের আভাস পাচ্ছেন মন্তব্য করে গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, জনগণের ঐক্য আরো সংহত করেই এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে।
গতকাল রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণফোরামের জাতীয় কাউন্সিল-২০২৪ পরবর্তী পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা ও সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা সারাজীবন ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেছি। জনগণের ঐক্যের বিরুদ্ধে তারা সবসময় ষড়যন্ত্র চালিয়ে যায়। ভালো কাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের আভাস সবসময়ই থাকে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেই এসব মোকাবেলা করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, জনগণের ঐক্যকে সংহত করেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। জনগণকে নিয়েই আমাদের সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। দুর্নীতি, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে কামাল হোসেনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সভাপতি পরিষদ সদস্য জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী।
লিখিত বক্তব্যে কামাল হোসেন বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের চলমান রাজনীতিতে যে অস্থিরতা বিরজ করছে তা সমাধানের একমাত্র পথ হচ্ছে রাজনৈতিক ঐক্য। এ ঐক্যের ভিত্তি হচ্ছে আমাদের জাতীয় চেতনা, যা ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, ’৭২-এর সংবিধান এবং ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা।
তিনি বলেন, সময়ের প্রয়োজনে জন আকাক্সক্ষা পূরণে সংবিধান সংশোধন-কিংবা যুগোপযোগী করা রাষ্ট্রের জন্য চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের অর্জিত ও মীমাংসিত বিষয়গুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হলে তা আমাদের অগ্রসরমান বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বাধাগ্রস্ত করবে। এ ব্যাপারে আমাদের সবার দায়িত্বশীল হওয়া কর্তব্য।
সংবাদ সম্মেলনে দলের সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানের কবর রচনার কথা যারা বলছে তারা কি বুঝে বলছে নাকি না বুঝে বলছে? বাহাত্তরের সংবিধান ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সংবিধান। সংবিধান নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারে না। সংবিধান নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে যারা মুক্তিযুদ্ধ, রাষ্ট্র সংবিধান নিয়ে বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করছে, তাদের এমন বিষয় থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, এ পরিস্থিতিতে যদি আমরা জাতীয়ভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে না পারি তাহলে ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান বিফলে যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে দলের নবগঠিত কমিটি ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ড. মিজানুর রহমান। তিনি জানান, মোস্তফা মহসিন মন্টুকে সভাপতি এবং ডা: মো: মিজানুর রহমানকে দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০ সদস্যবিশিষ্ট সভাপতি পরিষদ ও ১০ সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছে দলটি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- গণফোরামের সভাপতি পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট এস এম আলতাফ হোসেন, সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, অ্যাডভোকেট সুরাইয়া বেগম ও কোষাধ্যক্ষ শাহ নূরুজ্জামান।