গাজীপুরে বেক্সিমকোর কারখানা খোলার দাবিতে বিক্ষোভ ৪ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ
যৌথ বাহিনীর ধাওয়ায় ছত্রভঙ্গ আন্দোলনরত শ্রমিকরা- গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি
- ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
গাজীপুরে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বন্ধ ঘোষণা করা ১৬ কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে ফের বিক্ষোভ করেছে ওইসব কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় বিক্ষুব্ধরা আগুন জ¦ালিয়ে প্রায় ৪ ঘণ্টা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে। শ্রমিকরা বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর এবং যৌথ বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেলও ছোড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। একপর্যায়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ধাওয়ার মুখে আন্দোলনরত শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। গতকাল শনিবার মহানগরীর সারাবো-চক্রবর্তী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় শিল্প পুলিশ ও কারখানার শ্রমিকরা জানান, গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর থানাধীন সারাবো এলাকায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্র্রিয়াল পার্কে ১৬টি শিল্প কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় প্রায় ৩৫ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। কারখানাগুলোতে তৈরি পোশাক রফতানির ক্রয়াদেশ না থাকায় ও কাঁচামাল আমদানির ঋণপত্র খুলতে না পারায় কর্তৃপক্ষ গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে কারখানাগুলো বন্ধ (লে-অফ) ঘোষণা করে দেয়। এতে শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েন।
শিল্প পুলিশ জানায়, গতকাল শনিবার সকালে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্র্রিয়াল পার্কের কারখানাগুলোর শ্রমিকরা পার্কের সামনে জড়ো হতে থাকে। এ সময় বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া এবং শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের দাবিতে তারা বিক্ষোভ শুরু করে। সকাল সোয়া ১০টার দিকে তারা কারখানার পাশর্^বর্তী জিরানী বাজারের দক্ষিণ পানিসাইল এলাকায় পদ্মা কারখানার সামনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে। তারা সড়কের ওপর কাঠের গুঁড়ি, টায়ারসহ বিভিন্ন মালামাল ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ওই সড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজট লেগে যায়। খবর পেয়ে শিল্প ও থানা পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়কের ওপর থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও শ্রমিকরা তাদের দাবিতে অনড় থেকে সড়কের ওপর অবস্থান করতে থাকে। একপর্যায়ে শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হলে শ্রমিকরা আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়।
জিএমপির কাশিমপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বেশ কয়েকটি গাড়ির কাচ ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ধাওয়া করলে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং দুপুর সোয়া ২টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। নাওজোড় হাইওয়ে থানার এসআই শহিদুল ইসলাম বলেন, মহাসড়ক অবরোধ করায় ওই সড়কের উভয় দিকে ৪ ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব বলেন, শ্রমিকরা কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেছিল। পরে যৌথ বাহিনী তাদেরকে সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে বেলা ২টা থেকে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা