তদন্তে অগ্রগতি নেই : মূল হোতারা বহাল তবিয়তে
- এম জে এইচ জামিল সিলেট ব্যুরো
- ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সিলেটে পুলিশের গুলিতে সাংবাদিক এ টি এম তুরাব নিহতের পাঁচ মাস পূর্ণ হচ্ছে আজ। কিন্তু এই পাঁচ মাসেও আলোচিত তুরাব হত্যা মামলার তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার প্রতি আস্থা রাখতে পারছে না পরিবার। এ ছাড়া মূল হোতারা বিভিন্ন ভাবে তদন্ত বাধাগ্রস্ত করছেন বলে অভিযোগ উঠছে।
আজ ১৯ ডিসেম্বর তুরাব হত্যাকাণ্ডের পাঁচ মাস পূর্ণ হয়েছে। দৈনিক নয়া দিগন্তের সিলেট ব্যুরো প্রধান এটিএম তুরাব নিহতের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো গ্রেফতার হয়নি আসল কোনো খুনি, এমনকি তুরাব হত্যার সাথে জড়িত তৎকালীন এডিসি দস্তগীর ও ডিসি আজবাহার আলীকে এখনো বরখাস্ত করা হয়নি। তারা বিভিন্নভাবে মামলাটির আপস করার জন্য বাদিকে চাপ দিচ্ছে। রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে তদন্ত প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠছে। অথচ ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে গণহত্যায় জড়িত থাকায় বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত এবং গ্রেফতার করা হয়েছে। সিলেটের বিক্ষুব্ধ সাংবাদিক সমাজের প্রশ্ন দস্তগীর-আজবাহারের খুঁটির জোর কোথায়?
বিগত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই বাদ জুমা নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় মিছিল বের করে বিএনপি। তখন ন্যূনতম কোনো উত্তেজনা ছিল না। নিত্যদিনের মতো সেদিনও সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিকরা। পাশেই ছিল পুলিশের সশস্ত্র অবস্থান। হঠাৎই অতিউৎসাহী পুলিশ কর্মকর্তা এসএমপির তৎকালীন সহকারী কমিশনার সাদেক কাউসার দস্তগীরের মারমুখী আচরণে বদলে যায় পরিস্থিতি। উত্তপ্ত হয়ে উঠে কোর্ট পয়েন্ট এলাকা। ওই পুলিশের কিলিং মিশনের টার্গেটে পড়ে যান সাংবাদিক এ টি এম তুরাব। পুলিশের ছোড়া ৯৮টি ছররা গুলি বিদ্ধ হয় তুরাবের শরীরে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেন তার সহকর্মীরা। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে জরুরি ভিত্তিতে সোবহানীঘাট ইবনে সিনা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই আইসিইউতে থাকা অবস্থায় সাংবাদিক তুরাব সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন।
তুরাবের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ও সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা: শামসুল ইসলাম বলেন, তুরাবের শরিরে ৯৮টি ছররা গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। গুলিতে তার লিভার ও ফুসফুস আঘাতপ্রাপ্ত হয়। মাথায়ও আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ কারণেই তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
মামলার বাদি আবুল আহসান মো: আজরফ (জাবুর) অভিযোগ করে বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে এডিসি দস্তগীর ও ডিসি আজবাহারকে রক্ষায় কাজ করছেন। আমি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বদলের জন্য সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ ও পিবিআই সিলেটের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। আশা করছি শিগগিরই তারা কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন।
এ ব্যাপারে পিবিআই সিলেটের ইন্সপেক্টর মুরসালিন বলেন, আমি তদন্তভার গ্রহণের পর তদন্তে প্রাপ্ত সকল বিষয় পিবিআই হেডকোয়ার্টারকে অবগত করেছি। মামলার এজাহার পর্যালোচনা ও সে দিনের ঘটনার বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত যাছাই বাছাই করে সরকারের অনুমতি নিয়ে পুলিশ কনস্টেবল উজ্জল সিনহাকে ঢাকা থেকে আটক করেছি। রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কিছু তথ্য পেয়েছি।
তিনি বলেন, সাবেক এডিসি দস্তগীর ও ডিসি আজবাহার আলী শেখ যদি জড়িত থাকেন তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে এবং বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে। আর সেটা হবে আইনের প্রসিডিউর মেইনটেইন করে। আমাদের উপর ভরসা রাখতে হবে।