বিজয় দিবস ঘিরে বর্ণিল সাজে রাজধানী
- আবুল কালাম
- ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
রাজধানী ঢাকা এখন লাল-সবুজের শহর। নগরীজুড়ে লাল আর সবুজের ঝলকানি। বিশেষ করে রাতের রাজধানীতে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ। বিজয় দিবস ঘিরে বর্ণিল সাজে সেজেছে রাজধানীর নানা সড়ক। সরকারি, বেসরকারি অফিস আদালতসহ বিভিন্ন সুউচ্চ ভবন ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত ছেয়ে গেছে লাল-সবুজের ঝলমলে বাতিতে।
এখানেই শেষ নয়, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার পোশাকেও আনা হয়েছে লাল-সবুজের আবহ। দেশের প্রসিদ্ধ সব ফ্যাশন হাউজ তাদের তৈরি পোশাকে বিজয়ের ছাপ রেখেছে। পাঞ্জাবি, ফতোয়া, টি শার্ট, শাড়িতে তুলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশের বিজয়ের পতাকা। কোথাও লাল আর কোথাও সবুজের আল্পনায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিজয়ের প্রতিচ্ছবি। একাধিক ফ্যাশন হাউজ ঘুরে দেখা যায় প্রতিটি পোশাকেই এখন সবুজ কিংবা লালের বৈচিত্র্য। কারো সাথে কারো মিল নেই। রঙের মিশ্রণে ডিজাইনার তাদের মনের মাধুরি মিশিয়ে চিত্রিত করেছেন বিজয়কে।
অঞ্জনসের একজন বিক্রয়কর্মী জানান, প্রতি বছরের মতো তারা এবারো পোশাকে বিজয় তুলে ধরেছেন। নারী-পুরুষ থেকে শুরু করে শিশুরাও যাতে সে আনন্দ ভাগ করে নিতে পারেন সে বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে তারা শিশুদের জন্যও পোশাক তৈরি করেছেন।
আড়ংও বরাবরের মতো তাদের পোশাকে বৈচিত্র্য এনেছে। বিশেষ করে পাঞ্জাবি ও টি শার্টে তারা বেশি জোর দিয়েছেন। আর নারীদের শাড়ি ও কামিজে বিজয় ফুটিয়ে তুলে ধরেছেন। একজন বিক্রয়কর্মী জানান, প্রতি বছরই তারা এমনটা করেন। তবে সময়ের সাথে ডিজাইনে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন, যাতে মানুষের মধ্যে একঘেয়েমি চলে না আসে।
শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় সব দোকানের পোশাকেই লাল আর সবুজের ছোঁয়া। বিক্রেতারা জানান, তারা সব সময় পরিবর্তনে বিশ্বাসী। তাই এবারো প্রতিটি দোকানে স্বতন্ত্র ডিজাইন রেখেছেন, যাতে একজনের সাথে আরেকজনের পোশাক মিলে না যায়। ক্রেতা যাতে এক ছাদের নিচে তাদের পছন্দ মেলাতে পারেন, এজন্য তারা প্রতিটি দোকানে বৈচিত্র্য এনেছেন।
অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার ক্রেতা ভালো জানিয়ে একজন বিক্রেতা বলেন, প্রতি বছর রাজনৈতিক অস্থিরতায় ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হয়। এবার দেশে একটা পরিবর্তন এসেছে। এর সাথে মানুষের মধ্যে অনেকটা প্রাণ ফিরেছে। যার কারণে বিক্রিও অনেকটা ভালো।
তবে দাম অন্যান্য সময়ের তুলনায় এবার একটু বেড়েছে জানিয়ে আরেক বিক্রেতা বলেন, সব জিনিসের দাম বাড়তি। সুতা, রঙ থেকে শুরু করে কাপড় তৈরির উপকরণের দাম বাড়ছে। ফলে উৎপাদনের খরচ বেড়ে গেছে। তাই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও দাম কমানো যায় না।
নগরীর প্রতিটি মার্কেটের বন্ধের সময় পেছানো হয়েছে। একজন বিক্রেতা বলেন, বিজয় দিবস ঘিরে রাতেও ক্রেতারা মার্কেটে আসছেন। ফলে জমজমাট বিক্রির স্বার্থে মার্কেট খোলা রাখার সময় বেড়েছে। আগে রাত ৮টায় দোকান বন্ধ করে দেয়া হলেও এখন ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা হচ্ছে। ক্রেতাও আসছেন। ব্যবসাও ভালো যাচ্ছে।
একজন ফ্যাশন ডিজাইনার জানান, বিভিন্ন উৎসবে তাদের সবার ব্যস্ততা বাড়ে। কারণ উৎসবপ্রিয় মানুষ সব সময়ই পোশাকে ভিন্নতা চান। তারা রঙের সাথে রুচির সমন্বয় চান। সময়ের সাথে সাথে মানুষের পছন্দেও পরিবর্তন এসেছে। অতিরিক্ত রঙের ব্যবহারের চেয়ে মার্জিত রঙ পছন্দ বেশির ভাগের। তাই তারাও সব সময় নতুনত্ব নিয়ে চিন্তা করেন যাতে মানুষ তার পছন্দ মতো পোশাক পেতে পারেন।