গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনার ফাঁসি হওয়া উচিত
- ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
আইএইচআরসি, ইউএনআইপি, ডব্লিউএইচডি, ইউএনডব্লিউপিএর যৌথ উদ্যোগে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস-২০২৪ উপলক্ষে গতকাল সকাল ১০টায় সোনারগাঁও হোটেলের বলরুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট এম এ হাশেম রাজু বলেন, এবারের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে পালন করছি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট পতন ঘটে আওয়ামী দুঃশাসনের। গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালিন সরকার। গত ১৫ বছর আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনামলে দেশে ছিল না কোনো আইনের শাসন। মানবাধিকারের চরম অবনতি ঘটে। ফ্যাসিবাদী সরকার নিজেদের স্বার্থে মানবাধিকার পরিপন্থী হেন কাজ নেই যা করেনি। খুন গুম ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। সর্বশেষ জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘৃণ্যতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শেখ হাসিনা। একবিংশ শতাব্দীতে পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্রে এত বেশি সংখ্যক ছাত্র-জনতা এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়নি। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে একের পর এক লাশ ফেলে আওয়ামী সরকার মানবাধিকারের লঙ্ঘনের শেষ পেরেক ঠুকেছে। এর দায়ে খুনি হাসিনাসহ তার দোসরদের আন্তর্জাতিক আদালতে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে যা যা করা প্রয়োজন আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তা করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ খুনিদের দল। অতীতে তারা লগি বৈঠা দিয়ে দিনে দুপুরে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত শাসনামলে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ২ হাজার ৬৯৯ জন। এ সময়ে গুম হন ৬৭৭ জন, কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন ১ হাজার ৪৮ জন। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের তালিকাসহ ২০২৪ সালের ঘটনা যুক্ত করলে নিহতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে যাবে। এসব বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম-খুনের ঘটনার মধ্যে নির্যাতনে হত্যা, ক্রসফায়ার, হত্যার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের গুলি, ব্যবসায়ীকে আটক করে মালামাল লুট, নাগরিকদের গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের মাধ্যমে এসব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। গুম হওয়া ব্যক্তিদের অনেকেই এখনো নিখোঁজ। তবে ফেরত আসা ব্যক্তিদের দেয়া বর্ণনা অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেয়ার পর নিজেদের তারা আবিষ্কার করতেন কোনো এক বদ্ধ রুমে। যা ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত। সেই কুঠুরিতে বছরের পর বছর নিরপরাধ মানুষদের আটকে রেখে ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুর নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে।
এম এ হাশেম রাজু আরো বলেন, দেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের কাছে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব তুলে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা। ভারতের সাথে মিলে ২০০৯ সালে ৫৭ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করেন শেখ হাসিনা। একের পর এক দেশ বিরোধী চুক্তি করে তাদের প্রভু ভারতের সব ধরনের সুযোগসুবিধা নিশ্চিত করেছিল আওয়ামী লীগ। পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়ে তার পরামর্শে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আওয়ামী লীগ ও তার বিদেশী প্রভুদের বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র বন্ধের একমাত্র উপায় হলো তাদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করা।
ডব্লিউএইচডি-ইউএনডব্লিউপিএর প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট ড. রতন কুমার দাসের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মো: ফিরোজ আলম সুমনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ইউএনআইপির বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট ড. রাজু সাহা, ইউএনডব্লিউপিএর সেক্রেটারী এড. মোঃ উজ্জল হোসাইন, আইএইচআরসি’র পরিচালক ড. শফিকুর রহমান, সহকারি পরিচালক প্রফেসর ড. লিপি আক্তার, অফিস সচিব রাশেদুল ইসলাম, ইউএনআইপির অ্যাসিট্যান্ট সেক্রেটারি রোজি মজুমদার, ইউএনডব্লিউপিএর অ্যাসিট্যান্ট সেক্রেটারি মো: রাসেল হোসেন, অফিস সম্পাদক ড. মির্জা রাকি, ইউএনআইপির অ্যাসিট্যান্ট সেক্রেটারি সাংবাদিক জামাল উদ্দিন, আইএইচআরসির অফিস সহকারী অ্যাডভোকেট এমদাদ হোসেন রাসেল, এসএলর চেয়ারম্যান তুহিন হালদার, ডব্লিউএইচডির অ্যাসিট্যান্ট সেক্রেটারি দেবজ্যোতি বালা টুটুল প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা