০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ন ১৪৩১,
`

নর্দান মেডিক্যালের শিক্ষার্থীদের জীবনে অন্ধকার নামার আশঙ্কা

আইজিপির স্ত্রী পরিচয়ে প্রতারকের পক্ষ অবলম্বন!
নর্দান মেডিক্যালের শিক্ষার্থীদের জীবনে অন্ধকার নামার আশঙ্কা -


নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা এক চরম সঙ্কটের মুখোমুখি। তারা অভিযোগ করেছেন, আফরোজা হেলেন নামের এক নারী নিজেকে পুলিশের মহাপরিদর্শকের স্ত্রী বলে পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন এবং প্রতারণা ও জালিয়াতির দায়ে অভিযুক্ত আবু ইউসুফ আবদুল্লাহকে রক্ষার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।
ছাত্ররা জানিয়েছেন, ২০১১ সালে প্রফেসর আবু ইউসুফ আবদুল্লাহ ক্ষমতার অপব্যবহার করে নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ দখল করেন। এর পর থেকে তিনি কলেজ ফান্ড থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করেছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে কলেজটির ছাত্র ভর্তি বন্ধ করে দেয়। তবে তিনি এ তথ্য গোপন করে দুই সেশনে ৯১ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রায় ২৫ কোটি টাকা আদায় করেন। বর্তমানে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। আদালত আবু ইউসুফ আবদুুল্লাহ ও তার পরিবারের সদস্যসহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
পুলিশ মহাপরিদর্শকের স্ত্রীর পরিচয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার প্রসঙ্গে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে একজন ভদ্রমহিলাসহ তিন-চারজন ব্যক্তি নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের সাথে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলতে শুরু করেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা তাদের পরিচয় জানতে চাইলে, ভদ্রমহিলা নিজেকে মিসেস আফরোজা হেলেন এবং বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শকের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেন।

উভয় পক্ষের কথোপকথনের একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চান এবং উল্লেখ করেন যে, তারা কলেজের পরিচালনা কমিটির সদস্য নন, শিক্ষক নন এবং প্রশাসনের সাথেও জড়িত নন। শিক্ষার্থীরা তাদের সসম্মানে কলেজ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করার অনুরোধ জানান এবং তারা কলেজ ত্যাগ করেন।
শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, প্রফেসর আবু ইউসুফ আবদুল্লাহর সহযোগী মিসেস আফরোজা হেলেন নিজেকে পুলিশ মহাপরিদর্শকের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি থানার ওসি এবং পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাকে ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য ব্যবহার করছেন । তার এই প্রভাবের ফলে অভিযুক্ত প্রফেসর এবং তার সহযোগীরা গ্রেফতার এড়িয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছেন ।

শিক্ষার্থীরা জানান, তারা যখন কলেজের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আবু ইউসুফ আবদুল্লাহর সাথে যোগাযোগ করেন, তখন তার ভাড়াটেরা শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে আক্রমণ করে এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালায়। তাদের অভিযোগ, এ ঘটনা জানার পরও প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি হলো, প্রতারক প্রফেসর আবু ইউসুফ আবদুল্লাহকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা। তারা মনে করেন, এই চক্রের অপরাধমূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে শিক্ষার্থীদের জীবন ও ভবিষ্যৎ আরো বিপন্ন হয়ে পড়বে।
এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর চালানো আক্রমণ ও নির্যাতনের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রম পুনরায় সচল করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রম নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়া কোনোভাবেই মেনে নেয়া যাবে না। তারা সরকারের কাছে অবিলম্বে এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement