বিএসসির ৬ জাহাজ কেনার ঋণের চেক প্রধান উপদেষ্টাকে হস্তান্তর

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) ছয়টি জাহাজ ক্রয় প্রকল্পের জন্য গৃহীত ঋণ পরিশোধের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত সাবসিডিয়ারি লোন অ্যাগ্রিমেন্ট (এসএলএ) অনুযায়ী প্রথম কিস্তির প্রায় ৪৭৫.২৫ (চারশত পঁচাত্তর কোটি পঁচিশ লাখ) কোটি টাকার চেক প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার হাতে চেক তুলে দেন। চেক হস্তান্তরকালে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ এবং বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মাহমুদুল মালেকসহ অন্যান্য কর্মকতা উপস্থিত ছিলেন।
বিএসসির জন্য জি-টু-জি ভিত্তিতে ছয়টি জাহাজ ক্রয়/সংগ্রহের লক্ষ্যে বাস্তবায়িত ছয়টি নতুন জাহাজ ক্রয় (প্রতিটি প্রায় ৩৯,০০০ ডিডব্লিউটি সম্পন্ন তিনটি নতুন প্রোডাক্ট অয়েল ট্যাংকার এবং তিনটি নতুন বাল্ক ক্যারিয়ার)’ শীর্ষক প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ সরকার (অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ) ও চায়না এক্সিম ব্যাংকের মধ্যে ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর একটি ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ঋণের মূল বা আসলের (প্রিন্সিপাল) পরিমাণ ১,১৯৯,৯৯৯,০৭০ ইউয়ান (একশত উনিশ কোটি নিরানব্বই লাখ নিরানব্বই হাজার সত্তর ইউয়ান), যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৪৫৭,৬৭,৯৮,৭৮৪ (এক হাজার চার শত সাতান্ন কোটি সাতষট্টি লাখ আটানব্বই হাজার সাতশত চুরাশি) টাকা। এর ধারাবাহিকতায় ওই ঋণ পরিশোধের জন্য গত ২৭ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে অর্থ বিভাগ ও বিএসসির মধ্যে অপর একটি সাবসিডিয়ারি লোন অ্যাগ্রিমেন্ট (এসএলএ) স্বাক্ষরিত হয়। সে প্রেক্ষিতে মোট ২,৪২৫.০২ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারকে (অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়) বিএসসি কর্তৃক আগামী ১৩ বছরের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। স্বাক্ষরিত এলএ চুক্তি অনুযায়ী গ্রেস পিরিয়ডকালীন মোট সুদের পরিমাণ ৪৭৫,২৫,১৩,৩৪০ (চারশত পঁচাত্তর কোটি পঁচিশ লাখ তেরো হাজার তিনশত চল্লিশ) টাকার চেক প্রধান উপদেষ্টার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রকল্পটির মাধ্যমে সর্বশেষ জাহাজ সংগ্রহের সুদীর্ঘ ২৭ বছর পর গত ২০১৮-২০১৯ সালে বিএসসির বহরে ওই ছয়টি বাণিজ্যিক জাহাজ যুক্ত হয়েছে। ওই প্রকল্পের আওতায় সংগৃহীত ছয়টি জাহাজের মধ্যে পাঁচটি জাহাজ (এম. ভি. বাংলার জয়যাত্রা, এম. ভি. বাংলার অর্জন, এম. টি. বাংলার অগ্রযাত্রা, এম. টি. বাংলার অগ্রদূত এবং এম.টি বাংলার অগ্রগতি) বর্তমানে আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক পরিমণ্ডলে পণ্য পরিবহন সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে এবং বাংলাদেশের পতাকা সগৌরবে বহন করে চলছে। উল্লেখ্য, বিএসসি ৫৩ বছরের ইতিহাসে সর্বশেষ অর্থবছরে সর্বোচ্চ মুনাফা (২৫০ কোটি টাকা) অর্জন করে। বিএসসির এ ক্রমাগত অগ্রগতিতে প্রকল্পের মাধ্যমে বহরে সংযুক্ত পাঁচটি জাহাজের ভূমিকা অপরিসীম।