যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বৈষম্যের শিকার পল্লবী ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ মাহবুব
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩২
ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ পদের জন্য সব ধরনের শর্ত পূরণ ও কাম্য যোগ্যতা থাকার পরেও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন রাজধানীর পল্লবী ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান। পতিত আওয়ামী সরকারের কুচক্রী একটি মহলের প্ররোচনায় অভিজ্ঞ এই শিক্ষককে তার প্রাপ্য পদায়নের ক্ষেত্রে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হচ্ছে। বিদ্যমান সরকারি বিধি ও নীতিমালাকে উপেক্ষা করে এমপিওভুক্ত মাদরাসার জেনারেল শিক্ষকের প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বৈষম্যের অবসান চেয়েছেন দীর্ঘ দিন বঞ্চিত থাকা এই শিক্ষক। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান রেগুলেশন অনুযায়ী অধ্যক্ষ পদে আবেদনের জন্য কাম্য যোগ্যতায় বলা হয়েছে ‘ন্যূনতম ১৫ (পনের) বছরের ডিগ্রি কলেজ পর্যায়ে পাঠদানের অভিজ্ঞতা’। কিন্তু পল্লবী ডিগ্রি কলেজের মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের এই সব যোগ্যতা থাকার পরেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের পূর্বানুমতি প্রদান করেনি। অভিযোগ রয়েছে এক চক্র কৌশলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেগুলেশনের একটি শব্দ বাদ দিয়ে পত্র জারি করেছে। যদিও ভুক্তভোগী ও দীর্ঘ দিনের বঞ্চিত এই শিক্ষক তাকে নিয়ম মোতাবেক পল্লবী ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশনও দায়ের করেছিলেন (নং-১২৩৬৬/২০২৪)। গত ২৪ নভেম্বর রোববার উচ্চ আদালত থেকে তাকে নিয়োগ দেয়ান বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে। ফলে এখন অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে মাহবুবুর রহমানকে পল্লবী ডিগি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা রইল না।
সূত্র জানায়, সর্বশেষ এমপিও নীতিমালায় মাদরাসার প্রভাষক (সাধারণ)/ জ্যেষ্ঠ প্রভাষক (সাধারণ)/সহকারী অধ্যাপকের (সাধারণ) অভিজ্ঞতা গণনাযোগ্য হবে মর্মে উল্লেখ রয়েছে এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেগুলেশনে কোথাও মাদরাসায় শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা গণনাযোগ্য হবে না মর্মে কোনো বিধি বা শর্ত উল্লেখ নেই। উপরন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের রেগুলেশনে ‘ডিগ্রি কলেজ পর্যায়ে’ শব্দগুচ্ছ রয়েছে, যার মাধ্যমে স্নাতক পর্যায়ের মাদরাসাকেও অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ রয়েছে।
অন্য দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গত ১৯ সপ্টেম্বর, ২০১৯ তারিখের প্রকাশিত রেগুলেশন অনুযায়ী স্নাতক পর্যায়ের মাদরাসায় পাঠদানের অভিজ্ঞতাকে গণনা করার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বিগত আওয়ামী নিয়োগকৃত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২১ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখে ওই রেগুলেশন উদ্দেশ্যমূলক সংশোধন করে প্রকাশ করেছে। যেখানে ‘উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে সাধারণ শিক্ষা পাঠদানকারী কোনো কলেজের’ শব্দমালা যুক্ত করে স্নাতক পর্যায়ের মাদরাসায় পাঠদানে অভিজ্ঞ সাধারণ শিক্ষকদের অভিজ্ঞতাকে গণনা না করার প্রয়াস চালানো হয়েছে। কিন্তু আগের রেগুলেশন অনুয়ায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় পূর্বানুমতি প্রদান করেনি।
অনুসন্ধানে জানা যানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত ঢাকা মহানগরীর পল্লবী ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের এমপিওভুক্ত ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষের আবশ্যিক যোগ্যতা ও ‘ডিগ্রি কলেজ পর্যায়ে’ ১৫ বছরের পাঠদানের অভিজ্ঞতা এবং নিয়োগের সব কার্যক্রম যথাযথ বিধি অনুসরণ করার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ওই উপাধ্যক্ষকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের পূর্বানুমতি প্রদান করেনি। এ বিষয়ে নিজের অধিকার ক্ষুণœ হওয়া ভুক্তভোগী ওই উপাধ্যক্ষ ইতোমধ্যে আদালতেরও স্মরণাপন্ন হয়েছেন।
গতকাল সোমবার কলেজের একজন শিক্ষক প্রতিনিধি নয়া দিগন্তকে জানান, দীর্ঘ দিন থেকে অবহেলিত পল্লবী ডিগ্রি কলেজের উন্নয়ন ও স্বার্থবিরোধী গুটি কয়েক ব্যক্তি উপাধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত মাহবুবুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। যদিও উপাধ্যক্ষ কর্মরত থাকলে অন্য কাউকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করা যাবে না মর্মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র রয়েছে। এরপরেও যেহেতু এখন উচ্চ আদালত থেকে রায় এসেছে কাজেই মাহবুবুর রহমানের অধ্যক্ষ হওয়ার পথে আর কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকল না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা