রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে জাতিসঙ্ঘে সম্মেলন হবে

রোহিঙ্গা সঙ্কটের টেকসই সমাধানে নির্দিষ্ট সময়সীমাভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণে সব অংশীজনের সমন্বয়ে জাতিসঙ্ঘ আগামী বছর একটি উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের আয়োজন করবে।
গতকাল নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে এ ব্যাপারে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন যৌথভাবে ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবধিকার পরিস্থিতি’ বিষয়ক প্রস্তাবটি উত্থাপন করে। এটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। জাতিসঙ্ঘের ১০৬টি সদস্য রাষ্ট্র প্রস্তাবটি কো-স্পন্সার করেছে, যাতে ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমর্থনের প্রতিফলন ঘটেছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত সেপ্টেম্বরে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে রোহিঙ্গা বিষয়ে এই উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
প্রস্তাব অনুযায়ী, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা, নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনসহ এ সঙ্কটের টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে সামগ্রিক পর্যালোচনার মাধ্যমে একটি বস্তুনিষ্ঠ ও নির্দিষ্ট সময়সীমাভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য সব অংশীজনের সমন্বয়ে ২০২৫ সালে জাতিসঙ্ঘ কর্তৃক একটি উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আয়োজন করবে।
চলতি বছর রোহিঙ্গাবিষয়ক প্রস্তাবে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা মুসলমানসহ সব শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের অধিকার নিশ্চিত করা এবং স্বেচ্ছা, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে হত্যা, ধ্বংস, বাড়িঘর পুড়িয়ে ফেলা, মানবিক সহায়তা প্রদানে বাধা এবং বিশেষ করে শিশুসহ রোহিঙ্গা মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জোরপূর্বক নিয়োগের মত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা এবং অপরাধগুলো তুলে ধরা হয়। প্রস্তাবে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য জবাবদিহিতার সমস্ত প্রক্রিয়াকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। এ ছাড়াও একটি আঞ্চলিক সংস্থা হিসাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দেয় হয় এবং সংস্থাটির পাঁচ দফা ঐকমত্য পুরোপুরি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।