১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

কাজে ফিরেছেন গাজীপুরের টিএনজেড কারখানা শ্রমিকরা

বেক্সিমকো পার্কের শ্রমিকদের ৯ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ
-

গাজীপুরে বেতনভাতা নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে বন্ধ থাকা টিএনজেড অ্যাপারেলস কারখানা ২৩ দিন পর খুলে দেয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল থেকেই শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। এর আগে ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের দেয়া কথা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের আগেই গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সব শ্রমিকদের বেতনভাতা পরিশোধ করা হয়। এ দিকে একই দিন বকেয়া বেতনভাতা পরিশোধের দাবিতে ৯ ঘণ্টা ধরে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা।
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকরা জানায়, গাজীপুর মহানগরীর মোগরখাল এলাকার টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের ৫টি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার শ্রমিকরা তাদের বকেয়া পরিশোধ ও বন্ধ হওয়া কারখানা চালু করাসহ কয়েক দফা দাবিতে আন্দোলন করে। সর্বশেষ তারা গত শনিবার (৯ নভেম্বর) হতে সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত টানা তিন দিন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। সোমবার বিকেলে আন্দোলনরত শ্রমিক প্রতিনিধিদের সাথে শ্রম মন্ত্রণালয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করেন বিজিএমইএ ও কারখানা কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। বৈঠকে শ্রমিকদের পাওনাদি দুই দফায় ১৭ নভেম্বর ও ৩০ নভেম্বর পরিশোধ করার এবং বন্ধ কারখানাগুলো শিগগিরই খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রথম দফা রোববারের আগেই বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হয়। শনিবার থেকে কারখানা খোলা থাকার নোটিশ শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের পর কারখানার সামনে নোটিশ টানিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রমিকরা যথারীতি গতকাল সকাল থেকে কাজে যোগদান করে। শ্রমিকদের একজন শরিফা বেগম জানান, এখন আমাদের কোনো অসন্তোষ নেই, আমরা সবাই আন্তরিকতার সাথে কাজে যোগ দিয়েছি। কারখানায় এই কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি কারখানার মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

কারখানাটির নির্বাহী পরিচালক মাকসুদুল রহমান চৌধুরী জানান, ক’দিন আগে বকেয়া বেতন নিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টি হলেও বকেয়া বেতন পরিশোধ করায় শনিবার থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। এখন শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই শ্রমিকরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে প্রফুল্লচিত্তে কাজ করে যাচ্ছেন।
বাসন থানার ওসি মো: রাহেদুল ইসলাম জানান, শনিবার সকালে টিএনজেড গ্রুপের কারখানার পোশাক শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। কারখানাগুলোতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে, এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা নেই।
বেতনের দাবিতে চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ : অপর দিকে গাজীপুরের বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা অক্টোবর মাসের বেতন পরিশোধের দাবিতে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক শনিবার সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় সোয়া ৯ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। এতে ওই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকরা জানায়, গাজীপুর মহানগরের চক্রবর্তী এলাকার বেক্সিমকো ইড্রাস্টিয়াল পার্কে বেশ কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পার্কের এসব পোশাক ও সিরামিক কারখানায় প্রায় একচল্লিশ হাজার কর্মী রয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুথানের পর গত কয়েক মাস ধরে শ্রমিকরা নিয়মিত বেতনভাতা পাচ্ছে না। প্রতি মাসেই আন্দোলন করে তাদের বেতন আদায় করতে হচ্ছে। শ্রমিকদের গত অক্টোবর মাসের বেতনভাতা গতকাল পর্যন্ত পরিশোধ করা হয়নি। এতে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার সকালে শ্রমিকরা কারখানার গেইটে জড়ো হয়ে বেতনভাতা পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে সকাল পৌনে ৯টার দিকে তারা মিছিল নিয়ে কারখানার পার্শ্ববর্তী চক্রবর্তী এলাকায় চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কের উপর অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। এতেই সড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন ওই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। খবর পেয়ে শিল্প ও থানা পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়কের ওপর থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও শ্রমিকরা তাদের দাবিতে অনড় থেকে রাতভর সড়কের উপর অবস্থান করতে থাকে। সন্ধ্যা ৬টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত প্রায় সোয়া ৯ ঘণ্টা ধরে শ্রমিকদের অবরোধ চলছিল।

শিল্প পুলিশ জানায়, বেক্সিমকো পার্কে স্টাফসহ ৪১ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তাদের প্রতি মাসের বেতনের পরিমাণ হয় ৮০ থেকে ৮২ কোটি টাকা। প্রতি মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে তাদের বেতন দেয়া হতো। কিন্তু মালিকদের কেউ না থাকায় এখন বেতন ঠিকমতো পাচ্ছেন না। যার কারণে তারা গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন শুরু করে। শুক্রবার তারা আন্দোলনে যায়নি। শনিবার সকাল পৌনে ৯টা থেকে তারা চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করে আছে। এতে মহাসড়কের উভয় দিকে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
জিএমপির কাশিমপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকেও শ্রমিকদের অবরোধ অব্যহত রয়েছে। এতে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকরা বলছে, বকেয়া বেতন প্রদানের আশ্বাস না পেলে তারা মহাসড়ক ছেড়ে যাবে না। গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মো: সারোয়ার আলম বলেন, ঘটনাস্থলে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা রয়েছে। তারা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য চেষ্টা করছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
ইসরাইলপন্থীদের আধিক্য ট্রাম্পের মন্ত্রিসভায়, অসন্তুষ্ট মুসলিম ভোটাররা সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ‘বাংলাদেশের ২০২৪ সালের বন্যা মোকাবেলা করেছে তরুণ সমাজ’ সংশোধিত বাজেটে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করা যাবে না ১৫ বছরের জঞ্জাল ৩ মাসে দূর করা সম্ভব নয় : তারেক রহমান শেখ মুজিবের ছবির ব্যাপারে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’র বিষয় আছে গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে সমর্থন দেবে ব্রিটেন আরো ৬০ দিন বাড়ল সশস্ত্রবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আ’লীগসহ ২৬ দলের মতামত না চাওয়ার ব্যাখ্যা দিলো নির্বাচন সংস্কার কমিশন পোপ ফ্রান্সিস ও ড. ইউনূসের নামে ভ্যাটিকানের নতুন উদ্যোগ আমিরাতে সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ ২ মাস বেড়েছে

সকল