শুধু প্রকল্প দিয়ে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন অসম্ভব : চসিক মেয়র
- চট্টগ্রাম ব্যুরো
- ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪৭
কেবল হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প করে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব নয়।
বরং প্রকল্পের পাশাপাশি জনসচেতনতা, পরিবেশ রক্ষা, পরিকল্পিত নগরায়ন এবং সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ও জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা: শাহাদাত হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো: নুরুল করিমের সাথে জলাবদ্ধতা নিরসনে করণীয় নিয়ে আলোচনায় এ মন্তব্য করেন মেয়র। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো: আশরাফুল আমিন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কাশেম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম এবং সিডিএর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মো: ফেরদৌস আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ এ এম হাবিবুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সভায় মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি করপোরেশন, সিডিএ, ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বন্দরসহ সবগুলো সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে একসাথে কাজ করতে হবে। কেবল প্রকল্প করে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব নয়। খাল-নদী রক্ষায় আইনের প্রয়োগ প্রয়োজন মন্তব্য করে মেয়র বলেন, আমি বাকলিয়ায় কৃষিখালে গিয়ে দেখলাম খালটা যেন ডাম্পিং স্টেশন হয়ে গেছে। অথচ বাকলিয়া এলাকার জলাবদ্ধতার পানি নিরসনে খালটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। চাক্তাই খালেরও অনেক স্থানে ৭-৮ তলা বিল্ডিং হয়ে গেছে। অন্যান্য খালেও দখল ও বর্জ্য নিয়ে একই সমস্যা যা শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে, কর্ণফুলীকেও হত্যা করছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে ওয়াসাকেও ভূমিকা রাখতে হবে মন্তব্য করে মেয়র বলেন, আমার বিকল্প কিছু পরিকল্পনা আছে। এই যে বর্ষাকালে অতিরিক্ত যে পানিটা আসে সেটা যদি আমরা সংরক্ষণ করতে পারি তাহলে অতিরিক্ত পানি যেগুলো নালাতে চলে যাচ্ছে সেগুলো সংরক্ষণ হলে জলাবদ্ধতা হ্রাস পাবে এবং মাটির নিচের পানির স্তরও রক্ষা পাবে। সিডিএ’রও উচিত বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জায়গা ছেড়ে বাড়ি করা হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করা।
সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো: নুরুল করিম বলেন, সিডিএ’র জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনসহ জনস্বার্থে সব বিষয়ে চসিকের সাথে সিডিএ একযোগে কাজ করবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা জলাবদ্ধতা নিরসনের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ। ময়লার এসটিএস নির্মাণ করার জন্য কোথাও ভূমির প্রয়োজন হলে সিডিএ’কে জানালে বিবেচনা করা হবে। বর্তমানে সিডিএ ৫৭টি খালের মধ্যে ৩৬টি খালের কাজ করছে। বাকি ২১টি খাল আদৌ বেঁচে আছে কি না, থাকলে সেগুলো কিভাবে উদ্ধার করা যায় তা জানতে বাকি খালগুলো নিয়েও সমীক্ষা প্রয়োজন।
সভায় সিডিএ’র জলাবদ্ধতা নিসরন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মো: ফেরদৌস আহমেদ প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে মেয়র ডা: শাহাদাত হোসেনকে অবহিত করেন। প্রকল্পটির কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা তুলনামূলক কম স্থানে হয়েছে এবং জমাটবদ্ধ পানি দ্রুত অপসারিত হয়েছে বলে জানান তিনি। লে. কর্নেল মো: ফেরদৌস আহমেদ বলেন, প্রকল্পের ভৌতিক কাজের অগ্রগতি ৭৩ শতাংশ।
বিপ্লব উদ্যানে গ্রিন পার্কই হবে : মেয়রের হুঁশিয়ারি
বিপ্লব উদ্যানে গ্রিন পার্কই হবে, তাই বাণিজ্যিকীকরণ করতে হাইকোর্টে গিয়ে কোনো লাভ হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চসিক মেয়র ডা: শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, যারা মাফিয়া চক্র তারা বিপ্লব উদ্যানে স্থাপনা নির্মাণ করে বার বার বাণিজ্যিকীকরণ করেছে। সেখানে শহীদ জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের যে পটভূমি, সেটা সুন্দরভাবে লিখিত থাকবে। এটা একটা গ্রিন পার্ক হবে। মানুষ হাঁটতে পারবে এবং বসতে পারবে। কোনো বাণিজ্যিকীকরণ সেখানে হবে না। কিছু চক্র বিভিন্নভাবে হাইকোর্টে যাচ্ছে যাতে সেখানে পার্ক করতে না পারি। আমি তাদের স্পষ্ট করে বলতে চাই, হাইকোর্টে গিয়ে কোনো লাভ হবে না। তিনি গতকাল দুপুরে কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের মাঠে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির উদ্যোগে ড্যাব চট্টগ্রাম শাখার সার্বিক সহযোগিতায় ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মেডিক্যাল ক্যাম্প কমিটির আহবায়ক ডা: ফয়েজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব ডা: মো: ইমরোজ উদ্দিনের পরিচালনায় রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ। কর্মসূচিতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ সরবরাহ করা হয়। তা ছাড়া চট্টগ্রাম রেড ক্রিসেন্টের সহযোগিতায় রক্ত সংগ্রহ করা হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক কাজী বেলাল উদ্দিন, ড্যাব চমেক শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা: জসিম উদ্দিন, বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা: খুরশিদ জামিল চৌধুরী, ড্যাব চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা: তমিজ উদ্দিন আহমেদ মানিক, বিএমএ চট্টগ্রামের সাবেক সহসভাপতি ডা: কামরুন্নাহার দস্তগীর, মহানগর ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা: ইফতেখার লিটন, মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ইস্কান্দর মির্জা, মজিবুল হক, মো: কামরুল ইসলাম, জাফর আহমেদ, মো: আজম, আশরাফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ড্যাবের সহসাংগঠনিক সম্পাদক ডা: এস এম সারোয়ার আলম প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা