০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ

বংশাল কোতোয়ালিতে চাঁদাবাজদের মহড়া

-


চাঁদাবাজদের ভয়াল থাবা গ্রাস করতে চাইছে পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীদের। পতিত স্বৈরাচার সরকারের আমলে ধাপে ধাপে চাঁদা দিতে হতো প্রতি ব্যবসায়ীকে। ৫ আগস্টের পর চাঁদা দেয়া ছাড়াই ব্যবসা শুরু করেছিলেন তারা। কিন্তু সম্প্রতি আবারো মহড়া দিচ্ছে চাঁদাবাজরা। অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে থাকা চাঁদাবাজরা বিএনপি ও তার অঙ্গসংঠনের ওপর ভর করে নতুন রূপে শুরু করছে চাঁদাবাজি ও দখলবাজি। পুলিশ প্রশাসন নিশ্চুপ থাকায় তাদের বিরুদ্ধে বড় কোনো পদক্ষেপ নিতেও ভয় পাচ্ছেন ভুক্তভোগি ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে কোতোয়ালি থানার বিশাল এলাকা জুড়ে কাপড়ের মার্কেট, ফলের দোকান, নয়াবাজার ব্রিজের গাড়ি পার্কিংয়ের চাঁদাসহ দোকান দখলের উৎসব শুরু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে তারা ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে বিভিন্ন হারে টাকা আদায় শুরু করেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বংশাল ও কোতোয়ালির বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে মাসিক চাঁদা নিতো ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতারা। স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটার সাথে সাথে বড় বড়গুলো গা ঢাকা দিলেও নতুন করে মাঠে নেমেছে যুবদল ও বিএনপির খোলসে ওদের সাঙ্গপাঙ্গরা। অভিযোগ রয়েছে এলাকার চাঁদাবাজির এই মহড়ার নেতৃত্বদানকারীদের মধ্যে একজন ৩২নং ওয়ার্ডের তাইজুদ্দিন তাইজু ওরফে গোল তাইজু, জুবায়ের আলম। তাদের সাথে রয়েছে জাহিদ হোসেন, তাজুর ভাই বেলাল, সুমন, রহমত উল্লাহ, ক্যাশিয়ার রানা আলম। মাদকের স্পটগুলো পরিচালনা করছে বংশাল ও কোতোয়ালি থানাজুড়ে ইমরানুল ইসলাম ওয়াহিদ, জুয়েল হাওলাদার, রজ্জব আলী পিন্টু।
ইতোমধ্যে বাবুবাজার-নয়াবাজার ব্রিজের নিচে অবৈধ দোকান, নয়াবাজারের কাঁচাবাজার, গাড়ি পার্কিংয়ের চাঁদা নিয়মিত তুলতে শুরু করেছে তারা। জুবায়ের আলমের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক মামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। হাম্মাদিয়া স্কুলের নিচে দোকান দখল করে চোরাই লোহার মালামাল ও মাদক, জুয়ার আসর পরিচালনা করে আসছে কালা নাছির। এ ছাড়াও বংশাল এলাকাতে মোটর পার্টস, ইন্টারনেট, ডেভেলপার কোম্পানি, ফুটপাথ, বাজারের চাঁদাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁদাবাজি ও দখলের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, গত ১৫ বছরে যেসব অত্যাচার তারা সহ্য করেছেন তা আবার শুরু হয়েছে।

এর আগে স্বৈরাচার সরকারের স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা এসব এলাকা থেকে চাঁদাবাজি করত। যাদের নেতৃত্বে ছিল- ৩২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী এম এ মান্নান, ওয়ার্ড যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক বাপ্পী হাসান মুরাদ, যুবলীগ নেতা আহাদ বাপ্পী, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান হোসেন জন ও বংশালের আরেক প্রভাবশালী কাউন্সিলর আউয়াল ও তার নিয়ন্ত্রণে থাকা শতাধিক কর্মী বাহিনী। বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলেছেন যারা যারা চাঁদাবাজিসহ অন্যায় কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত হবেন তাদের দলে কোনো জায়গা নেই। তবে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি করলেই ওই ব্যক্তি বিএনপি বা অঙ্গসংগঠনের কেউ তা কিন্তু নয়। বিষয়গুলো যাচাই করা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ৩২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতা জুবায়ের বলেন, তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে প্রতিপক্ষের লোকজন মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। প্রকৃতপক্ষে তিনিসহ তার নেতাকর্মীরা সিনিয়র নেতাদের নির্দেশে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থান নিয়েছেন।
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, চাঁদাবাজির অভিযোগগুলো গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রমাণ পেলেইে গ্রেফতারও করা হচ্ছে। কাউকেই ছাড় দেয়া হচ্ছে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement