০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ঢাকার চতুর্দিকে বৃত্তাকার নৌপথ চালুসহ ৭ দাবিতে বাপার মানববন্ধন

-


বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে গতকাল সকালে বুড়িগঙ্গা নদীর দখল দূষণ রোধে আশু ব্যবস্থা গ্রহণ এবং রাজধানীর চতুর্দিকে বৃত্তাকার নৌপথ চালু করার- দাবিতে বুড়িগঙ্গা নদীর পাড় সোয়ারীঘাটে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বাপার যুগ্ম সম্পাদক ও বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের সমন্বয়ক, মিহির বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবির সুমনের সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন- বাপা সাধারণ সম্পাদক, আলমগীর কবির, যুগ্ম সম্পাদক, ড. মাহবুব হোসেন, জাতীয় পরিষদ সদস্য, আশরাফ আমিরুল্লাহ, জাতীয় পরিষদ সদস্য, হাজী শেখ আনছার আলী, বাপা জীবন সদস্য মো: আবদুল হামিদ, সিডিপির কর্মকর্তা, অ্যাডওয়ার্ড এ মধু, পরিবেশ কর্মী ও বুড়িগঙ্গা পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দা, ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জুয়েল, সমাজকর্মী ও পবার নেতা মো: সেলিম, কেমেলিয়া চৌধুরী, মো: রাসেল প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে মিহির বিশ্বাস বলেন, সরকারের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি ও পরিকল্পনা পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও বাস্তবে তার বাস্তবায়ন চোখে পড়ে না। নদীর প্রকৃত সংজ্ঞা নির্ধারণ করে দেশের দখল হওয়া নদীগুলোকে উদ্ধারে সরকারের বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে পুনর্গঠন করে হাইকোর্টের নির্দেশের আলোকে দেশের অভ্যন্তরে সব নদী-বিল-হাওর এবং জলাশয়ের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে নদীগুলোর দখলদারদের তালিকা পূর্ণাঙ্গ করে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তিনি রাজধানীর চার দিকে চক্রাকার নৌপথ চালু করতে অবিলম্বে সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে চক্রাকার নৌপথ দ্রুত বাস্তবায়ন করার দাবি জানান।
আলমগীর কবির নদীকে নারীর মতো প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করা হচ্ছে বলে মনে করেন। বুড়িগঙ্গাকে কেন্দ্র করে ঢাকা শহর গড়ে উঠেছে। বুড়িগঙ্গাসহ দেশের নদীগুলোকে দখল ও দূষণমুক্ত করে নদীর পানি প্রবাহ স্বাভাবিক করার দাবি জানান। তিনি নদীগুলোকে বাঁচানোর জন্য নদীর দু-পাড়ের মানুষদের এগিয়ে এসে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। প্রত্যেকটি নদীর সাথে সংযুক্ত খাল, প্লাবন অঞ্চল ও কৃষি জমি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করার দাবি জানান। ঢাকার চার দিকে চক্রাকার নৌপথ চালু করলে যানজট কমে আসবে বলে মনে করেন।

ড. মাহবুব হোসেন বলেন, দেশের নদীগুলো এখনো দূষণ ও দখলকারীরা নিয়ন্ত্রণ করছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থাকাকালীন সময়ে দেশের নদী রক্ষা করা না গেলে রাজনৈতিক সরকারের সময় রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। হুমায়ুন কবির সুমন ঢাকা সিটি করপোরেশন এবং ওয়াসার ময়লা যেন নদীতে না ফেলা হয় সেটির তদারকি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। আশরাফ আমিরুল্লাহ বলেন, আদি বুড়িগঙ্গা নির্মোহভাবে ও সম্পূর্ণ দখলমুক্ত ও পুনর্খনন করতে হবে এবং এর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

আজকের মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে নিম্নোক্ত দাবি ও সুপারিশগুলো তুলে ধরা হয় :
১. সীমানার অভ্যন্তরে তালিকা অনুযায়ী সরকারি স্থাপনা, বেসরকারি প্রকল্প ও শিল্পকারখানা, মাঝারি আবাসনসহ সব প্রকারদখলী স্থাপনাউচ্ছেদ অথবা পুনর্বাসন করার মাধ্যমে নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দিতে হবে; ২. আদি বুড়িগঙ্গা নির্মোহভাবে ও সম্পূর্ণ দখলমুক্ত ও পুনর্খনন করতে হবে এবং এর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে; ৩. প্রত্যেকটি নদীর সাথে সংযুক্ত খাল, প্লাবন অঞ্চল ও কৃষি জমি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করতে হবে; ৪. জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে পুনর্গঠন করে হাইকোর্টের নির্দেশের আলোকে দেশের অভ্যন্তরে সব নদী-বিল-হাওর এবং জলাশয়ের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে নদীগুলোর দখলদারদের তালিকা পূর্ণাঙ্গ করতে হবে। ৫. রাজধানীর চার দিকে চক্রাকার নৌপথ চালু করতে অবিলম্বে সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে চক্রাকার নৌপথ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। ৬. নদীর সীমানা নির্ধারণের ভিত্তি হিসেবে মূল ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে (সিএস) এবং ভরা মৌসুমে নদী প্রবাহের ধারা ব্যবহার করতে হবে; ৭. নদী, খাল ও জলাশয় দূষণকারীদের ওপর উপযুক্ত জরিমানা আরোপ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। বিজ্ঞপ্তি।


আরো সংবাদ



premium cement