২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনে ত্রুটি

-

স্বপ্নের কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনেও বড় ত্রুটি ধরা পড়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের ১০১ কিলোমিটার রেলপথ থেকে শুরু করে কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনের প্রতিটি কাজ সরেজমিন দুই দিন পরিদর্শন করেছেন সরকারি রেল পরিদর্শক (জিআইবিআর) প্রকৌশলী ফরিদ আহমেদ। এ সময় তিনি স্টেশন বিল্ডিংয়ের নির্মাণকাজ, প্রতিটি ফ্লোর, স্টেশনের হোটেল, ইন্টেরিয়র কাজ, প্লাটফর্ম, ট্র্যাক, সিগন্যালিং সিস্টেম, ইলেক্ট্রিক্যাল সিস্টেমসসহ প্রতিটি কাজ সরেজমিন দেখেছেন।
পরিদর্শনকালে ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের একমাত্র আইকনিক স্টেশন বিল্ডিংয়ের উপরের শেড থেকে পানি চুঁইয়ে প্লøাটফর্ম হয়ে যাত্রীদের গায়ে পড়ার বিষয়টি ডিজাইনের বড় ত্রুটি বলে মনে করেন জিআইবিআর প্রধান।
গত মঙ্গলবার দুই দিনের সফরে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ সরেজমিন পরিদর্শন করেন এ রেল কর্মকর্তা। প্রথম দিনে তিনি দোহাজারী-কক্সবাজার ১০১ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে দোহাজারী থেকে চকরিয়া পর্যন্ত প্রায় ৫৩ কিলোমিটার রেলপথ ট্রেনে করে সরেজমিন পরিদর্শন করেন। গত বুধবার চকরিয়ার পর থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত অবশিষ্ট রেলপথ এবং দেশের একমাত্র আইকনিক রেলস্টেশন পরিদর্শন করেন। দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণের সবচেয়ে বড় ত্রুটি দেখা গেছে কক্সবাজারের আইকনিক স্টেশন নির্মাণে। বর্ষা মৌসুমে এই আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনের উপর থেকে পানি চুঁইয়ে প্লাটফর্মে প্রবেশ করছে। উপর থেকে প্লাটফর্মে পড়া পানি যাত্রীদের গায়ে পড়ছে। এ বিষয়ে প্রকৌশলী ফরিদ আহমেদ বলেন, এত উঁচু করে স্টেশনের শেডের ডিজাইন করা হয়েছে, আমার মনে হয় ডিজাইনটা ঠিক হয়নি। বাংলাদেশের বাস্তবতার নিরিখে আরো অনেক কিছু চিন্তাভাবনা করেই ডিজাইন করা দরকার ছিল। স্টেশনের উপর থেকে বৃষ্টির পানি প্লাটফর্মে পড়বে, সেই পানি যাত্রীদের গায়ে পড়বে- এটা একটা বড় ত্রুটি মনে হয়েছে। আমি প্রকল্প পরিচালক ও ঠিকাদারি সংস্থার প্রতিনিধিদের জিজ্ঞেস করেছি ওনারা বলেছেন, ডিজাইন যেভাবে করা হয়েছে তারা সেভাবেই কাজ করেছেন। স্টেশন বিল্ডিংয়ের ডিজাইনের মধ্যে মনে হয় সমস্যা ছিল। এগুলোর সব রিপোর্টে উল্লেখ করব।
এ জন্য একটু সময় লাগবে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিয়ে দেবো। রিপোর্টে এসব সুপারিশ থাকবে। আইকনিক স্টেশন ভবন পরিদর্শন করেছি। এখনো সব কাজ শেষ হয়নি। কিছু কাজ বাকি আছে। স্টেশনের হোটেল রুমগুলোতে কিছু কাজ বাকি আছে। ইন্টেরিয়র, ফার্নিচার, লাইটিং ও জেনারেটরের কাজ বাকি আছে। প্রকল্প পরিচালক ও ঠিকাদারি সংস্থার প্রতিনিধিরাও ছিলেন। তারা জানিয়েছেন, অবশিষ্ট যে কাজগুলো বাকি আছে সেগুলো প্রজেক্ট টাইমের মধ্যে শেষ করতে পারবেন। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কাজ শেষপর্যায়ে এসে এই মেগা প্রকল্পের নানান ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়েছে। দেশের রেল যোগাযোগব্যবস্থার বহুল আলোচিত এই মেগা প্রকল্পের কাজ নিয়ে উঠেছে নানা অনিয়মের অভিযোগও। এই মেগা প্রকল্পের কাজে একাধিক ত্রুটি ধরা পড়ায় এ নিয়ে এখন নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের পুরো কাজ সরেজমিন পরিদর্শন করলেন সরকারি রেল পরিদর্শক। তার পরিদর্শন রিপোর্টের ওপরই ভিত্তি করে প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সর্বশেষ কিস্তির টাকা ছাড় দেয়া হবে। তাই এই পরিদর্শন রিপোর্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথটি ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয়। ট্রেন চলাচল শুরু হয় ১ ডিসেম্বর থেকে। বর্তমানে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে সরাসরি দু’টি যাত্রীবাহী ট্রেন কক্সবাজার চলাচল করছে। এর বাইরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার একটি বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement