আদালত প্রাঙ্গণে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৪
সুপ্রিম কোর্ট ও কোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত হোটেল-রেস্টুরেন্টে তালিকাভুক্ত সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক এবং নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করে বিকল্প পণ্য সামগ্রী ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সুপ্রিম কোর্টসহ এর আওতাধীন আদালতগুলো এবং আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থিত হোটেল-রেস্টুরেন্টে তালিকাভুক্ত সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক এবং নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করে প্রস্তাবিত বিকল্প পণ্যসামগ্রী ব্যবহারের নির্দেশনা প্রদানে সুপ্রিম কোর্টের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছে।
এমতাবস্থায়, সুপ্রিম কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত হোটেল-রেস্টুরেন্টে তালিকাভুক্ত সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক এবং নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করে মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত বিকল্প পণ্যসামগ্রী ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আদিষ্ট হয়ে নির্দেশ প্রদান করা হলো।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় যেসব বিকল্প পণ্যসামগ্রী ব্যবহারের প্রস্তাব করছে সেগুলো হচ্ছে :
(ক) প্লাস্টিকের ফাইল, ফোল্ডারের পরিবর্তে কাগজ বা পরিবেশবান্ধব অন্যান্য সামগ্রীর তৈরি ফাইল ও ফোল্ডার ব্যবহার করা।
(খ) প্লাস্টিক ব্যাগের পরিবর্তে কটন/জুট ফেব্রিকের ব্যাগ ব্যবহার করা।
গ) প্লাস্টিকের পানির বোতলের পরিবর্তে কাঁচের বোতল ও কাঁচের গ্লাস ব্যবহার করা।
(ঘ) প্লাস্টিকের ব্যানারের পরিবর্তে কটন ফেব্রিক, জুট ফেব্রিক বা বায়োডিগ্রেডেবল উপাদানে তৈরি ব্যানার ব্যবহার করা।
(ঙ) দাওয়াত পত্র, ভিজিটিং কার্ড ও বিভিন্ন ধরনের প্রচার পত্রে প্লাস্টিকের লেমিনেটেড পরিহার করা।
(চ) বিভিন্ন সভা/সেমিনারে সরবরাহকৃত খাবারের প্যাকেট যেন কাগজের হয়/পরিবেশবান্ধব হয় সেটি নিশ্চিত করা।
(ছ) একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের প্লেট, গ্লাস, কাপ, ট, কাটলারিসহ সব ধরনের পণ্য পরিহার করা।
(জ) প্লাস্টিকের কলমের পরিবর্তে পেনসিল/কাগজের কলম ব্যবহার করা।
(ঝ) বার্ষিক প্রতিবেদনসহ সব ধরনের প্রকাশনায় লেমিনেটেড মোড়ক ও প্লাস্টিকের ব্যবহার পরিহার করা।
(ঞ) ফুলের তোড়াতে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, পরিবেশ দূষণ বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে অলোচিত এবং উদ্বেগের বিষয়। বায়ুদূষণ, প্লাস্টিক দূষণ, পানিদূষণসহ সার্বিকভাবে পরিবেশ দূষণ আমাদের দেশের তীব্র আকার ধারণ করেছে। বর্তমান সরকার এই দূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধিমালা এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আইনের আলোকে পরিবেশ দূষণ রোধ, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় বাংলাদেশ অঙ্গীকারবদ্ধ।
পলিথিন কারখানায় আজ থেকে অভিযান
দেশজুড়ে পলিথিন উৎপাদকদের বিরুদ্ধে আজ থেকে অভিযান চালাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরিবেশ সচিব তপন কুমার বিশ্বাস সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, পরিবেশ রক্ষায় ৩ নভেম্বর থেকে পলিথিন শপিং ব্যাগের উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তাদের আর ছাড় দেয়া যাবে না। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। মোবাইল কোর্টের যে আইন আছে, সেগুলো আপনারা জানেন।
এ বিষয়ে সব জেলা প্রশাসক এবং পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মনিটরিং কমিটির সদস্যরা জানান, তারা বেশ কিছু পলিথিন কারখানার সন্ধান পেয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ৩ নভেম্বর থেকে অভিযান পরিচালনা করে সেগুলো সিলগালা ও জরিমানা বা শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
সচিব তপন কুমার বলেন, ১ ও ২ নভেম্বর সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় মোবাইল কোর্ট বন্ধ থাকলেও আমাদের মনিটরিং কার্যক্রম চলমান থাকবে।
বাজারগুলোতে আপাতত জরিমানা করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, সতর্কতামূলক অভিযান নভেম্বরের প্রথম এক সপ্তাহ চলবে। এর পরের সপ্তাহ থেকে অভিযানে পলিথিনের ব্যাগ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।