০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১,
`
বিডিআর কল্যাণ পরিষদের সংবাদ সম্মেলন

দাবি না মানলে রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি

-

বর্তমান সরকারের কাছে কমিশন গঠনের জোর দাবি জানাচ্ছি এবং তা যেন দ্রুতই গঠন করা হয়। তা করা না হলে ১৮ হাজার বিডিআর সদস্য রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তৎকালীন বিডিআরের মহাপরিচালক শহীদ শাকিল আহমেদের ছেলে ব্যারিস্টার রাকিন আহমেদ।
গতকাল শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটশন ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শহীদ মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের পরিবারসহ ১৭ শহীদ সেনা পরিবার এবং বিডিআর কল্যাণ পরিষদ আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। রাকিন আহমেদ বলেন, সরকারের জানা উচিৎ ১৮ হাজার বিডিআর সদস্য এককাতারে রয়েছে। এদের মধ্যে কিছু মানুষ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আবার অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের পক্ষে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিলে বিডিআর পরিবারের পক্ষ থেকে খুশি হতাম। তিনি বলেন, আমার বাবা আপনাদের সন্তানের মতো ভালোবাসতেন। আপনাদের আগেও পরিবার হিসেবে দেখতাম, এখনো দেখি। আপনারা আমার ভাই হিসেবে বলেন, আর সন্তান বা অভিভাবক হিসেবে বলেন; আমরা চাই একটা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে নির্দোষ বিডিআর সদস্যরা মুক্তি পাক আর দোষিরা শাস্তির আওতায় আসুক। কিন্তু ১৮ হাজারের বেশি বিডিআর সদস্য তো এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত না। তারপরেও তাদের সন্তানরা রাস্তায় বের হতে পারে না, তাদের খুনির সন্তান বলা হয়।

রাকিন অভিযোগ করে বলেন, ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো সরকারে রয়েছে। আমাদের ছাত্র-জনতার পাশে দাঁড়াতে হবে। জাতীয়তাবাদী শক্তির পাশে দাঁড়াতে হবে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে। বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জনস্বার্থে কাজ করবেন বলে বিশ্বাস করি। সরকারের কাছে ভালো কিছু আশা করছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশ একটি স্থিতিশীল পর্যায়ে চলে যাবে। পার্শ্ববর্তী দেশ ও গোয়েন্দা সংস্থা বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। কয়দিন আগে কচুক্ষেত মোড়ে সেনাবাহিনীর গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে এর তীব্র নিন্দা জানাই।
এ সময় তারা ৯ দফা দাবি উপস্থাপন করে। দাবিগুলো হলো; পিলখানা হত্যাকাণ্ডটি বিদ্রোহ না বলে এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করা; ঢাকাসহ সারা দেশে বিডিআর ব্যাটালিয়ন সেক্টরে গঠিত বিদ্রোহ আইনে প্রহসনের বিশেষ আদালতকে নির্বাহী আদেশে বাতিল করা; চাকরিচ্যুত সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও জোয়ানদের পূর্ণ সুযোগ-সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহাল; হত্যাকাণ্ড মামলার তদন্তের জন্য স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন; পিলখানা হত্যাকাণ্ডের শাহাদৎ বরণকারী ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে শহীদের মর্যাদা প্রদান করা; ২৫ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে পিলখানা ট্রাজেডি দিবস ঘোষণা; ঘটনাপরবর্তী যেসব নিরীহ জোয়ানের তদন্ত/জিজ্ঞাসাবাদে নিরাপত্তা হেফাজতে নির্যাতনপূর্বক হত্যা করা হয়েছে, তার তালিকা প্রকাশসহ মৃত সব সদস্যের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন ব্যবস্থা করা; ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে ঘটনার সময় যেসব সংস্থার সদস্যরা প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পরিকল্পনামতে তদন্ত/জিজ্ঞাসাবাদে নিরীহ নিরাপরাধ জোয়ানদের নির্যাতন ও বিদ্রোহের মিথ্যা মামলার আসামি করে ঢাকাসহ দেশে ব্যাটালিয়ন ও সেক্টরে হাজার হাজার বিডিআর সদস্য ও পরিবারকে পথে বসিয়েছে, তাদের শনাক্ত ও আইনের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পিলখানা হত্যাকাণ্ড মামলায় খালাসপ্রাপ্ত অথচ প্রহসনের বিস্ফোরক মামলায় বিনা বিচারে দীর্ঘ ১৬ বছর কারাবন্দী জোয়ানদের অনতিবিলম্বে জামিন/মামলাপ্রত্যাহারপূর্বক খালাস প্রদান করতে হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement