৭ কলেজের অধিভুক্তি বাতিলে আলটিমেটাম ঢাবি শিক্ষার্থীদের
- ঢাবি প্রতিনিধি
- ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল সাধারণ শিক্ষার্থী। এ সময় অধিভুক্তি বাতিলের দাবির বাস্তবায়নে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম বেঁধে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ ওই শিক্ষার্থীরা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অধিভুক্তি বাতিল করা না হলে বৃহৎ পরিসরে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
গতকাল বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময়, সাত কলেজের অধিভুক্তি থাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে তারা। মিছিলটি ভিসি চত্বর থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়।
এ সময় ওয়ান টু থ্রি ফোর অ্যাফিলিয়েশন নো মোর; অধিভুক্তির ব্যবসা বন্ধ করো, করতে হবে; অবিলম্বে অধিভুক্তি-বাতিল করো, করতে হবে; মেয়েদের জন্য হল নির্মাণ-অবিলম্বে করতে হবে ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কেন নিবে। আমরা সবাই জানি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ আবাসিক সুবিধা নেই। কুয়েত মৈত্রী হলসহ বেশ কয়েকটি হলে আবাসিক সমস্যা প্রকট রূপ ধারণ করেছে। সেখানে কিভাবে এ সমস্যা নিরসন করা যায় সেটা না ভেবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেই নাকি সাত কলেজের জন্য আলাদা অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। যেটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও প্রহসনমূলক। শিক্ষার্থীদের সাথে প্রহসন কখনোই সহ্য করা হবে না। অবিলম্বে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৃথক করে দিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায়হান ফেরদৌস বলেন, সাত কলেজের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং পিছিয়ে যাচ্ছে। ঢাবির বুকে সাত কলজে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা অতি দ্রুত তাদের অধিভুক্তি বাতিল চাই।
দাবি মানতে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম বলেন, সাত কলেজ ঢাবির গলার কাঁটা। আমরা এর আগেও আন্দোলন করেছি। তৎকালীন উপাচার্য তিনি আমাদের এই আশ্বাস দিয়েছিলেন যে তাদের সাথে আমাদের সার্টিফিকেটের রঙের পার্থক্য থাকবে এবং তাদের সার্টিফিকেটে ‘অ্যাফিলিয়েটেড’ লেখা থাকবে। এসব বলে আমাদের সামনে তিনি মুলা ঝুলিয়েছিলেন। আমাদের গলায় কাঁটা বেঁধে রেখেছিলেন। এখনো আমাদের এই আন্দোলন দমানোর জন্য অনেকেই নেগোসিয়েশন করতে আসছে। আমাদের বিভিন্ন কিছু বুঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এবার সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলে কালক্ষেপণ কোনো ভাবেই মেনে নিব না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার সময় দিচ্ছি, এর মধ্যে যদি অধিভুক্তি বাতিল না করা হয় তাহলে ৭৩ ঘণ্টায় গিয়ে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে দেবো।
অধিভুক্ত ৭ কলেজ নিয়ে যা জানাল ঢাবি কর্তৃপক্ষ
ঢাকার সরকারি সাত কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধীনেই থাকছে এবং রেজিস্ট্রারসহ তাদের জন্য পৃথক প্রশাসনিক ব্যবস্থার সিদ্ধান্তের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে মন্ত্রণালয়ের কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছে ঢাবি প্রশাসন।
গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, সরকারি সাত কলেজের বিষয়ে গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠককে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘সরকারি সাত কলেজ দেখভালের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই পুরোপুরি আলাদা একটি প্রশাসনিক ব্যবস্থা থাকবে, যেখানে আলাদা রেজিস্ট্রারসহ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকবেন। তবে এ কলেজগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তই থাকবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে উপদেষ্টা পরিষদের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জেনেছে। এ প্রস্তাবের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে মন্ত্রণালয়ের ইতঃপূর্বে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। বিষয়টি জানার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাসহ সরকারের বিভিন্ন উচ্চমহলে আলাপ করেছে। সরকারও বিষয়টির জনগুরুত্ব বিবেচনা করে আন্তরিকতার সাথে সাড়া দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীসহ প্রধান অংশীজনদের নিয়ে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে একটি জরুরি বৈঠক আয়োজনের ব্যাপারে সরকার সম্মত হয়েছে। জরুরি বৈঠক আগামী রোববার হতে পারে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা