২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্রে নামে থাকলেও বাস্তবে নেই দুই কলেজ

-


চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পাঁচটি কলেজের শিক্ষার্থীদের সবাই ফেল করেছেন। উদ্বেগজনকভাবে ওই পাঁচ কলেজের মধ্যে দুইটি কলেজ চট্টগ্রাম নগরীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। ওই কলেজগুলোর অস্তিত্ব কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবে কোনো অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর সেন্ট্রাল কলেজ এবং পাঁচলাইশের চট্টগ্রাম জিলা কলেজ -এই দুই কলেজ থেকে এইবার মাত্র চার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই ফেল করেন। বন্ধ হয়ে গেছে, এই দুই কলেজের ভর্তি কার্যক্রম। এমনকি শ্রেণী কার্যক্রমও চলে না।
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক সঙ্কটের কারণে একটি কলেজে গত বছর এবং আরেকটি কলেজে দুই বছর আগে থেকে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে শিক্ষা বোর্ড। ফলে নতুন করে শিক্ষার্থী ভর্তি না হলেও পূর্বে ফেল করা শিক্ষার্থীরাই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন এবং বারবার অকৃতকার্য হচ্ছেন।
২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীন ২৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক লাখ পাঁচ হাজার ৪১৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে শতভাগ পাস করেছে ১৩টি কলেজে। শূন্য পাসের তালিকায় থাকা তিনটি উপজেলার কলেজ হলো- হাটহাজারীর রহিমপুর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রাউজানের মোহাম্মদপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও চকরিয়া কমার্স কলেজ। এই তিন প্রতিষ্ঠানে শতভাগ ফেল করায় ব্যাখ্যা চেয়েছে শিক্ষা বোর্ড। গত বৃহস্পতিবার এসব প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দেয়া হয়েছে বলে জানান শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক জাহেদুল হক।

কাগজপত্রে চট্টগ্রাম জিলা কলেজের ঠিকানা পাঁচলাইশ থানাধীন কাতালগঞ্জের মির্জারপুর। কিন্তু সরেজমিন সেখানে কলেজের কোনো অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রাও কলেজটি সম্পর্কে কিছু জানেন না। অন্য দিকে হালিশহর সেন্ট্রাল কলেজের অবস্থানও শনাক্ত করা যায়নি।
প্রতিষ্ঠার পর ২০১৮ সাল থেকে গত সাত বছরে চট্টগ্রাম জিলা কলেজ থেকে মোট ১০৮ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে পাস করেছেন মাত্র ৬০ জন। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সঙ্কটসহ নানা কারণে গত বছরের ৬ জানুয়ারি থেকে কলেজটির শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা বোর্ড। অন্য দিকে ২০১৪ সাল থেকে গত ১০ বছরে হালিশহর সেন্ট্রাল কলেজ থেকে মোট ১৪০ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেন মাত্র ৮১ জন।
এই বিষয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর মো: জাহেদুল হক গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, চট্টগ্রাম জিলা কলেজ আর হালিশহর সেন্ট্রাল কলেজে শিক্ষক সঙ্কটসহ বিভিন্ন সমস্যা থাকায় শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। যারা আগে অকৃতকার্য হয়েছে, তারাই বারবার পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। কারণ তারা চাইলেও অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। অনিয়মিত একজনও যদি পরীক্ষা দিতে চায় সেটা না করার সুযোগ আমাদের নাই।
এভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার নামে অস্তিত্বহীন কলেজ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার কারণে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে কলেজগুলো আমরা বন্ধই করে দিচ্ছি। ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করেছি আগে। এখন সবধরনের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দিচ্ছি।

 


আরো সংবাদ



premium cement