দুদকের জালে যশোরের সাবেক ডিসি তমিজুল
- যশোর অফিস
- ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২৫
যশোরের সাবেক জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। অভিযোগ উঠেছে, সাবেক ডিসি তমিজুল ইসলাম নিয়োগ, টেন্ডার, ক্রয় ও লাইসেন্স বাণিজ্যসহ এলআর ফান্ড কালেকশনের নামে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুলসম্পদ অর্জন করেছেন। এসব অভিযোগে প্রশাসন ক্যাডারের ৪৯ ব্যাচের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুদক।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে এবং প্রভাব খাটিয়ে এই কর্মকর্তা নামে-বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তার এসব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তমিজুল ইসলাম খান যশোরে যোগদানের পরপরই বিএনপি-জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার মিশন নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। তিনি হুঙ্কার দিয়েছিলেন যশোরে বিএনপি-জামায়াত থাকবে না। তিনি তার সময়ে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের তার দফতরে একপ্রকার নিষিদ্ধ করেন।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তমিজুল ইসলাম খানের শাস্তি ও বিচার দাবি করে জেলা বিএনপি বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি আলটিমেটাম দেয়। তমিজুল ইসলাম খান জেলা প্রশাসক হিসেবে ২০২০ সালের ৭ জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ২৪ জুলাই পর্যন্ত টানা তিন বছর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ওই সময় বিভিন্ন দিবস ও প্রোগ্রামের কথা বলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। চাঁদার টাকায় তার ঘনিষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতা ও অফিসারদের নিয়ে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই আলীশান বাংলোয় পার্টি দিতেন, যা তদন্ত করলে প্রমাণ পাওয়া যাবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিতে যান। ওই সময় তিনি কার্যালয়ে থাকা সত্ত্বেও তার ব্যক্তিগত সহকারীকে পাঠান স্মারকলিপি নেয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপি নেতারা ব্যক্তিগত সহকারীর কাছে স্মারকলিপি না দিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
সাবেক এই জেলা প্রশাসকের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, ‘বিপুল সংখ্যক বিএনপি নেতাকর্মীকে দেখে প্রথমে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম নিজে স্মারকলিপি নিতে অস্বীকার করেন ও ব্যক্তিগত সহকারীকে পাঠিয়ে দেন। তখন আমরা অনুরোধ করি, দুই-তিনজন নেতা গিয়ে স্মারকলিপি দিয়ে চলে আসব, কোনো বিশৃঙ্খলা হবে না। কিন্তু তিনি কোনোভাবেই স্মারকলিপি নিতে রাজি হননি।
ঘটনার সময় জেলা প্রশাসকের অফিস কক্ষে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ নেতা উপস্থিত ছিলেন। তাদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক তার কক্ষে উপস্থিত বেশ কয়েক জনের কাছে জানতে চান, বিএনপির স্মারকলিপি নেয়া ঠিক হবে কি না। সবাই নেয়ার পক্ষে মতামত দেন। এরপর তিনি আশপাশের কয়েকজন জেলা প্রশাসকের কাছে ফোন দিয়ে জানতে চান, তারা বিএনপির স্মারকলিপি নিচ্ছেন কি না। বেশির ভাগ জেলা প্রশাসকই স্মারকলিপি নিচ্ছেন বলে জানান। তারপরও তিনি বিএনপির স্মারকলিপি গ্রহণ করেননি। সাবেক জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত শুরু করায় যশোরের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী মহল সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি যাতে ভোল পাল্টাতে না পারেন সেই দাবিও জানিয়েছেন তারা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা