প্রেমিকার খরচ চালাতে নারীদের আইডি হ্যাক!
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০০:৪৩
নারী ফেসবুক ব্যবহারকারীদের আইডি হ্যাক করে স্পর্শকাতর ছবি হাতিয়ে নিতেন হ্যাকার মো: ফজলে হাসান অনিক (২৪)। তারপর সেসব ছবি ভুক্তভোগীকে পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেল করে হাতিয়ে নিতেন মোটা অঙ্কের টাকা। সেই অর্থ দিয়ে নিজের খরচ চালানোর পাশাপাশি প্রেমিকারও খরচ বহন করতেন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত রোববার রাজধানীর উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে অভিযান চালিয়ে ভয়ঙ্কর এই হ্যাকার গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ সময় তার কাছ থেকে অপরাধে ব্যবহৃত একটি মোবাইল ও একটি পোর্টেবল হার্ডডিস্ক জব্দ করা হয়।
জানা গেছে, মো: ফজলে হাসান অনিক একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী, বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার মাঝগাঁও ইউনিয়নের নেংটাদাহ গ্রামে। তার বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের পর গতকাল সোমবার সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাইবার পুলিশ সেন্টারের (সিপিসি) ডিআইজি এস এন মো: নজরুল ইসলাম বলেন, এই হ্যাকারের বিরুদ্ধে একজন ভুক্তভোগী সিআইডি সাইবার সাপোর্ট সেন্টারে অভিযোগ দেয়। একই সাথে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন থেকেও একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার ছায়া তদন্ত করে অপরাধের ধরন ও হ্যাকারকে শনাক্ত করে।
যেভাবে হ্যাকিং করা হয় : হ্যাকিং সম্পর্কে ডিআইজি নজরুল ইসলাম বলেন, গত বছর আগস্ট মাসে ভুক্তভোগীর ফেসবুক মেসেঞ্জারে একটি লিংক আসে। না বুঝেই ওই লিংকে ক্লিক করে ফেসবুক ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে। ঠিক তখনই ঘটে বিপত্তি, ভিকটিমের ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড চলে যায় হ্যাকারের দখলে। হ্যাকার ভিকটিমের ফেসবুকের মেসেঞ্জার থেকে কিছু ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে। পরে হ্যাকার ভিকটিমের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও তার আত্মীয় স্বজন ও পরিচিত লোকদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে কয়েক ধাপে কৌশলে নিজের পরিচয় গোপন রাখার জন্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়। এর পরও যখন টাকার দরকার হতো তখনই ভিকটিমকে ব্ল্যাকমেইল করত।
অর্ধশতাধিক নারীর ফেসবুক হ্যাক : সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার হ্যাকার গত ২ বছর যাবৎ অর্ধশতাধিক ভিকটিমের ফেসবুক আইডি হ্যাক করেছে এবং ১৫ জনের বেশি ভুক্তভোগীর ব্যক্তিগত স্পর্শকাতর ছবি নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এক প্রশ্নে তিনি আরো বলেন, হ্যাকার অনিক ব্ল্যাকমেইলিংয়ের টাকা দিয়ে ঢাকায় নিজের খরচ চালাত। তারও একজন গার্লফ্রেন্ড আছে। ওই গার্লফ্রেন্ডের সব খরচ সে এভাবে আইডি হ্যাক করে ব্ল্যাকমেইল করে চালাত। হ্যাকিংটাকে পেশা হিসেবে নিয়েছে অনিক। পুলিশ যাতে ধরতে না পারে, এ জন্য সে কোনো বিকাশ বা নগদে টাকা না নিয়ে বিভিন্ন সুপার শপে যেত। শপে কেনাকাটা করে ভুক্তভোগীদের বলত অনলাইনের মাধ্যমে বিল দিতে। আরেকভাবে সে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে টাকা নিত। তার বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট আছে, ওই অ্যাকাউন্টে সে টাকা নিয়ে নিত। যার কারণে তাকে সহজে ট্রেস করা সম্ভব হয়নি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা