২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

মোহাম্মপুরের প্রতিটি হাউজিংয়ে থাকবে অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প

আইনশৃঙ্খলার অবনতি
-

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রতিটি হাউজিং এলাকায় স্থাপন করা হবে অস্থায়ী সেনাক্যাম্প। যাতে এলাকায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের সহজে আটক করে আইনের আওতায় আনা যায়। ইতোমধ্যে এ এলাকা থেকে ৪৫ ক্রিমিনালকে গ্রেফতার করে থানায় সপোর্দ করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে বসিলা সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ২৩ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উপ-অধিনায়ক মেজর নাজিম আহমেদ।
তিনি বলেন, আপনারা আতঙ্কিত না হয়ে আমাদের তথ্য দিন। তথ্য দিলে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছবে। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। ঢাকা উদ্যান, চাঁদ উদ্যান ও বিভিন্ন হাউজিং সোসাইটিতে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ৪৫ জন আটক করে তাদের মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। মেজর নাজিম আহমেদ বলেন, আটকদের মধ্য প্রায় ১৫ থেকে ১৬ জন কিশোর গ্যাংয়ের লিডার রয়েছে। তারা চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক বিক্রিসহ নানা অপকর্মে জড়িত। এলাকাবাসীকে শান্তিতে রাখতে এই অভিযান অব্যাহত রাখা হবে।
মোহাম্মদপুরে ২৭ থেকে ২৮টি কিশোর গ্যাং চিহ্নিত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, জেনেভা ক্যাম্পে পর্যন্ত ছয়বার অভিযান হয়েছে। সেখান থেকে অনেক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ পর্যন্ত যত গ্রেফতার হয়েছে তার ৩০ শতাংশ জেনেভা ক্যাম্পের। সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেয়ার পর এখন পর্যন্ত ১৯৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানিয়ে এই সেনাকর্মকর্তা বলেন, এ সময় ১৮টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২৬১ রাউন্ড গুলি, ১৯ রকমের মাদক, একটি গ্রেনেড, ৮০টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর অল্প সময়ের মধ্যেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে আনার চেষ্টা করে পুলিশসহ যৌথবাহিনীর সদস্যরা। এ লক্ষ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপির প্রায় সব থানার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলেও অরক্ষিত হয়ে পড়ে মোহাম্মদপুর এলাকা। প্রতিদিনই ঘটতে থাকে খুন চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। সব শেষে গত শনিবারও শিশুসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। একপর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকার বাসিন্দা ও ছাত্রজনতা থানা ঘেরাও করে। স্থানীয়রা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে।
এ দিকে আইএসপিআর থেকে বলা হয়েছে, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জনসাধারণের জানমাল ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বিচার বহির্ভূত কর্মকাণ্ড রোধ ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে দেশব্যাপী নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ অক্টোবর আনুমানিক রাত ১০টার দিকে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র ব্রিগেড, র্যা ব ও পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়। এই অভিযানে সেনাবাহিনী, র্যা ব ও পুলিশের একাধিক দল অংশগ্রহণ করে।
নিরাপত্তাহীনতায় নিমজ্জিত মোহাম্মদপুরবাসীর জীবনে স্বস্তি আনতে যৌথ বাহিনীর এ অভিযান সুপরিকল্পিতভাবে পরিচালিত হয়। এই অভিযানে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে ৪৫ জন অপরাধী (৯টি দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ) গ্রেফতার হয়। সন্ত্রাস দমন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সেনাবাহিনীর কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকবে।


আরো সংবাদ



premium cement