ছাত্র-শ্রমিক জনতার রক্তের গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার পালিয়েছে : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০৫
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, ৫ আগস্ট এদেশে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নিয়েছে। শত শত ছাত্র শ্রমিক জনতা জীবন দিয়েছে। তাদের রক্তের গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকার পালিয়ে গেছে।
গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের বিশেষ সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ফেডারেশনের সহসভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার ও নির্বাহী পরিষদ সদস্য আব্দুর রব। এতে আরো বক্তৃতা করেন, ফেডারেশনের সহসভাপতি গোলাম রব্বানী, লস্কর মো: তসলিম, মাস্টার শফিকুল আলম, কবির আহমদ, মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, মনসুর রহমান। অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মনিরপেক্ষ, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদের সরকার দেখেছে। কিন্তু এসব সরকার মানুষকে সুখ-শান্তি দিতে পারেনি। মানুষ স্বাধীনতা অর্জন করে সুফল পাওয়ার আশায়। বিগত দিনে আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি তা সত্যিকার অর্থে মানুষকে সুখ-শান্তি দিতে পারেনি। মানুষ মুক্ত আকাশ ও স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার পেয়েছে। আগে যেসব অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল সে অধিকার ফিরে পেয়েছে। কিন্তু এখনো অন্যায় প্রতিরোধ করে ন্যায় প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়নি। জালেম পালিয়েছে কিন্তু জুলুম পালায়নি। জুলুমের অত্যাচারে মানুষ বিভিন্ন জায়গায় এখনো কষ্ট পাচ্ছে। আজকে দেশ একটি সঙ্কটের মধ্য চলছে। এখানে রাষ্ট্রপতি কে হবেন এটা বড় প্রশ্ন নয়। আজ সঙ্কট দূর করার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ১৮ কোটি মানুষের অর্জিত স্বাধীনতা কেউ যাতে আবার কেড়ে নিতে পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। শ্রমিক কল্যাণের নেতাকর্মীদের টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত প্রতিটি জেলা-উপজেলায় পাহারা দিতে হবে।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন দেশের প্রচলিত শ্রমিক সংগঠন থেকে ব্যতিক্রম সংগঠন। দেশে বহু শ্রমিক সংগঠন আছে। যারা এদেশে মানবরচিত মতবাদ, সমাজতন্ত্র, পুঁজিবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও পশ্চিমা সভ্যতা-বিধিবিধানের ভিত্তিতে রাজনীতি করতো তারাই এদেশে প্রথম ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন গড়ে তুলে। তারা পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন জুটমিল, কলকারখানায় বিশ^বিদ্যালয়-কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঠিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তুলে। যাদের টার্গেট ছিল এদেশ থেকে ইসলামকে উৎখাত করে নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠা করা। স্বল্প শিক্ষিত মানুষদের ভুল বুঝিয়ে সমাজতন্ত্রের আদলে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য তারা উদগ্রীব ছিল। তিনি বলেন, সমাজতান্ত্রিক কমিউনিস্টদের অপতৎপরতা রুখে দিতে এদেশের ইসলামপ্রিয় মুরব্বিরা ১৯৬৮ সালে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা করে। এই ধ্বংস জোয়ারের বিরুদ্ধে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন রুখে দাঁড়ায়। শ্রমিক কল্যাণ শ্রমিকদের বুঝাতে সক্ষম হয় কমিউনিস্টরা তাদেরকে ভুলপথে পরিচালিত করছে। শ্রমিকদের মুক্তির জন্য ইসলামী শ্রমনীতির বাস্তবায়ন প্রয়োজন। ইসলামী শ্রমনীতির এই স্বতন্ত্রধারা বাংলাদেশে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের হাত ধরে সূচনা ঘটে। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন এদেশে একদল আদর্শ মানুষ তৈরি করতে চায়। যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। কিন্তু সত্যের পক্ষে থাকবে আপসহীন। আমরা আর কোনো চোরদের জন্য এই দেশের ভূমি ছেড়ে দিবো না। আর কোনো চোরদের হাতে এদেশ ছেড়ে দেয়া হবে না।
ঢাকা জেলা দক্ষিণ : জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা জেলা দক্ষিণের আমির মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন বলেছেন, আলেমরাই নবীগণের উত্তরসূরি। তাই দেশের ক্রান্তিকালে জাতিকে পথ দেখাতে আলেমসমাজকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি দেশ, জাতি ও উম্মাহর বৃহত্তর স্বার্থে ছোটখাটো মতভেদ ভুলে আলেমসমাজ ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান। গতকাল ঢাকায় স্থানীয় একটি মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা জেলা দক্ষিণের দোহার উপজেলা আয়োজিত এক ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। হাফেজ মাওলানা আল আমীনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা সেক্রেটারি এ বি এম কামাল হোসাইন। উপস্থিত ছিলেন জেলা ওলামা বিভাগের সভাপতি মাওলানা মোবিনুর রহমান এবং উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মহিউদ্দিন কামাল।
ঢাকা মহানগরী উত্তর : আওয়ামী-বাকশালী ফ্যাসিস্টরা ক্ষমতা থেকে বিদায় নিলেও তারা তাদের দোসরদের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে; তাই দেশ ও জাতিস্বত্তাবিরোধী সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে ময়দানে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মোহাম্মদপুর অঞ্চল আয়োজিত ইউনিট প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মোহাম্মদপুর অঞ্চল পরিচালক জিয়াউল হাসানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে দারসুল কুরআন পেশ করেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ ও শূরা সদস্য ড. আব্দুস সামাদ। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য আব্দুল আউয়াল আজম, সাখাওয়াত হোসেন ও মশিউর রহমান প্রমূখ।
তুরাগ মধ্য থানার কর্মী সম্মেলন : গতকাল জুমাবার তুরাগ মধ্য থানার উদ্যোগে এক কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। থানা সেক্রেটারি মুহিব্বুল্লাহর বাচ্চুর পরিচালনায় সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন থানা আমির গাজী মনির হোসাইন। উপস্থিত ছিলেন থানার নায়েবে আমির কামরুল হাসান, উত্তরা মডেল থানা আমির ইব্রাহিম খলিল, উত্তরা পশ্চিম আমির মাজহারুল ইসলাম, উত্তরা পশ্চিম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক শাহিদুর রহমান মোল্লা, তুরাগ দক্ষিণ থানা আমির মাহবুবুর রহমান, তুরাগ উত্তর থানা আমির মতিউর রহমান প্রমূখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা