২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

পর্যটকশূন্য ৩ পার্বত্য জেলা

-

পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান। ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান। তাদের ভাষ্য, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকবে। এতে তিন জেলা এখন পর্যটকবিহীন হয়ে পড়েছে। ফলে ব্যবসা স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে করে এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ভয়ানক সঙ্কটে পড়েছেন। অব্যাহত অর্থনৈতিক লোকসানে এখন ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, গেল এক মাসের বেশি সময় ধরে সাম্প্রদায়িক সঙ্ঘাতে অশান্ত পাহাড় এ তিন জিলা। তাতেই ঝিমিয়ে পড়েছে পার্বত্য এলাকার পর্যটন খাত। হোটেল ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন জানান, বোট মালিক, বোট চালক, ব্যবসায়ী সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
তারা বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা ঘিরে প্রতি বছর ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত থাকে পাহাড় এ তিন জেলা ঝরনা আর হ্রদের শহর রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান। তবে এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। পর্যটকে মুখর যান সাজেকসহ বেশির ভাগ পর্যটনস্পটে এখন প্রায় সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে। ফলে আগেভাগেই রাঙামাটি শহরের ৬৫টি হোটেল-মোটেল, ১৭টি ইকো রিসোর্ট এবং কাপ্তাই ও সাজেকে ১৩২টি কটেজের যেসব রুম বুকিং দিয়েছিলেন পর্যটকরা তারা সেগুলো বাতিল করেছেন।
তবে সম্প্রতি রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে ভ্রমণে না যাওয়ার অনুরোধ জানানোর পর থেকেই বাতিল হয়েছে বেশির ভাগ বুকিং। এমনকি পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে যারা অবস্থান করছিলেন তারাই ফিরে গেছেন। এতে ছুটিকে ঘিরে ব্যবসায়ীদের নেয়া প্রস্তুতিতে একেবারেই মন্দা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, অন্যান্য বছর হোটেল-মোটেল ও কটেজগুলোতে যেখানে জায়গা দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে বর্তমানে সেখানে পর্যটক খরা চলছে। এতে অক্টোবরের এই ক’দিনে পার্বত্য জেলার পর্যটন খাতে ক্ষতি হতে পারে ৪০ কোটি টাকার বেশি। রাঙ্গামাটির স্থানীয়দের মধ্যে একজন জানান, সাম্প্রতিক যে সমস্যা এ জন্যই পর্যটক আসছে না। আমরা খুবই লসের মুখে আছি।
এ দিকে পর্যটক ভ্রমণে এসব বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বান্দরবান পর্যটন ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদ এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, ‘বান্দরবানে হোটেল রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট, পর্যটকবাহী যানবাহনসহ বিভিন্ন খাতে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে করোনাভাইরাস, ভয়াবহ বন্যা, সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে লাগাতারভাবে বান্দরবানের পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।’
তারা বলেন, ‘চলতি মাসের ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অনিবার্য কারণ দেখিয়ে বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলায় পর্যটক ভ্রমণ না করতে পর্যটকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ফলে শারদীয় দুর্গাপূজা ও প্রবারণার ছুটিতে ৭০ শতাংশ হোটেল, রিসোর্ট বুকিং হওয়ার পরও বাতিল করতে হয়েছে। তারা বলেন, পর্যটন নির্ভর এ জেলায় এভাবে বছরের পর বছর পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করার ফলে এখানকার পর্যটন নির্ভর অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙে পড়ছে। এ অবস্থায় পর্যটন খাতের সাথে জড়িত ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন হোল্ডিং ট্যাক্স, লাইসেন্স ফি, ভ্যাট, আয়কর, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement