ঢাকায় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কোনো হুমকি নেই
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৫৬
রাজধানীতে দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কোনো ‘থ্রেট’ (হুমকি) আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার মো: মাইনুল হাসান বলেন, ‘এবারের দুর্গাপূজায় আমাদের জানা মতে এমন কোনো আশঙ্কা নেই, কোনো ঝুঁকি আমরা দেখছি না।‘ মঙ্গলবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দুর্গাপূজার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিটি পূজামণ্ডপে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘প্রতিটিতে ফিক্সড পুলিশ মোতায়েন থাকবে, থানা পুলিশের মাধ্যমে টহল ও চেকপোস্ট ব্যবস্থা পরিচালিত হবে। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সিসি ক্যামেরা থাকবে, আর্চওয়ে-মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি কার্যক্রম চালানো হবে। এ ছাড়া স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েনের পাশাপাশি সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে।’ তিনি বলেন, অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎব্যবস্থা সচল রাখতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রয়োজনী সংখ্যক আনসার বাহিনী মোতায়েন থাকবেন। একই সাথে আমাদের সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা এবং র্যাব সদস্যরা তাদের টহল কার্যক্রমসহ অন্যান্য নিরপত্তা কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। পূজা চলাকালে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনী ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা থাকবে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুরান ঢাকায় রাস্তা সরু হওয়ায় সেখানে কিছুটা ট্রাফিক হতে পারে। সে জন্য পূজা অনুষ্ঠানের আশপাশে যেন কোনো মেলা ও অন্য কোনো জনসমাবেশ না হয় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘রোববার দশমীর দিন বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজা শেষ। এবার ঢাকা মহানগরীতে বিসর্জনের জন্য ১৫টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। বিসর্জন শোভাযাত্রার জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। বিসর্জন স্থানে নৌপুলিশের টহলের পাশাপাশি ফায়ার ব্রিগেডকে অনুরোধ করেছি বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।’ যেকোনো প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে সহায়তা নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পূজার দিনগুলোতে মণ্ডপে আগত ভক্তবৃন্দের প্রতি বিভিন্ন চেকপোস্টে পুলিশসহ বিভিন্ন নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তা করার জন্য অনুরোধ করছি। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বিসর্জনের সব কাজ সম্পাদনের জন্য সব পূজা উদযাপন কমিটি ও ভক্তদের প্রতি অনুরোধ।’
পূজামণ্ডপ, বিসর্জন শোভাযাত্রা ও বিসর্জনের সময় সকল প্রকার মাদকদ্রব্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, একই সাথে পটকা এবং আতশবাজি ব্যবহার না করতে এবং বিসর্জন শোভাযাত্রার সময় উচ্চস্বরে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার না করারও অনুরোধ করা হলো।
ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় জড়িত পলাতকদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেকে হয়তো আত্মগোপনে থেকে এদিক-সেদিক পালিয়ে গেছেন। আমরা চাই সমাজের সব স্তরের মানুষ আমাদেরকে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সাহায্য করবে এসব পলাতক ব্যক্তি কোথায় আছে। আমরা চেষ্টা করছি আপনারাও আমাদেরকে সাহায্য করুন।’ গোয়েন্দা তথ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য তো আপনারাই দিবেন আমাদেরকে, পুলিশ কাজ করে কমিউনিটির সাপোর্ট নিয়ে। আপনারাই আমাদের সাহায্য করুন, এসব ব্যক্তি কোথায় আছে?’
নিহত পুলিশ সদস্যদের বিষয়ে আইনিব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়া নেয়া হয়েছে। যেসব জায়গায় ঘটনা ঘটেছে যেমন যাত্রাবাড়ী থানা, উত্তরা পূর্ব থানায় পুলিশ কেস হয়েছে। আরো অন্যান্য জায়গায় হওয়ার প্রক্রিয়া আছে।’ ৫ আগস্টের আগের ঘটনায় জড়িত ঢাকা মহানগর পুলিশের পলাতক কর্মকর্তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি, অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদেরকে অ্যারেস্টের চেষ্টা করছি।’