শাহীন কলেজের ছাত্র আহনাফ হত্যা ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দিলেন মা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০৫
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে বিএএফ শাহীন কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফ হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর আহনাফের মা জারতাজ পারভীন সাফাক এ অভিযোগ দায়ের করেন। আবেদনে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়েছে।
পরে আহনাফের মা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তারা খুঁজে বের করবে কারা কারা হত্যার সঙ্গে জড়িত।
এ বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, অভিযোগে সুনির্দিষ্টভাবে কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। তৎকালীন সরকার, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ, পুলিশ বাহিনী এটা করেছে। ওনারা বলেছেন, আমরা ঘটনাস্থলে যেহেতু ছিলাম না, তাই সরকারের যারা অপরাধের সাথে যুক্ত, তদন্ত করে করে যেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, বিএএফ শাহীন কলেজের শিক্ষার্থীরা যোগাযোগ করেছেন। তাদের বলব, তারা যেন আন্দোলনে আহত, নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাপারে তথ্য দেন। আমরা তাদের নাম-ঠিকানা গোপন রাখব।
গত ৪ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে গুলিতে নিহত হয় আহনাফ। তার পরদিন বাংলাদেশে এক অভিনব গণঅভ্যুত্থান হয়। দেশজুড়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। কিন্তু অভ্যুত্থানের সফল সমাপ্তি দেখা হয়ে ওঠেনি বুলেটবিদ্ধ আহনাফের। বিজয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে জীবন বাতি নিভে যায় তার।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শত শত প্রাণের বিনিময়ে বিজয়ের আসে। এরপর ১৮ আগস্ট থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয় সরকার। ক্লাসরুমে পরীক্ষার টেবিলে বিএএফ শাহীন কলেজের শিক্ষার্থীরা ফিরলেও ফেরেনি আহনাফ। যে টেবিলটাতে সে বসতো, সেই টেবিলে কেউ বসেনি। সিট ছিল ফাঁকা। এতো শিক্ষার্থীর মাঝে কোথায় যেন এক বিরান শূন্যতা! আহনাফের স্মরণে তার সিটে ফুল রেখে দেয় বন্ধুরা। ‘তারে স্মরণ করে সবাই সাজায় ফুলের ডালা’। এমন তথ্য পাওয়া যায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে ভারতে আশ্রয় নেয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে এ নিয়ে মোট ৫৪টি পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হলো। প্রসিকিউশন অফিসে এখন পর্যন্ত ৩৮টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এর আগে তদন্ত সংস্থায় ১৬টিসহ মোট ৫৪টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।