শিক্ষা কারিকুলাম ইস্যুতে সচেতন নাগরিক সমাজের ৫ দাবি
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
শিক্ষা কারিকুলাম ও পাঠ্যপুস্তক সংস্কার ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান এবং সুনির্দিষ্ট দাবি উপস্থাপন করেছে ‘সচেতন নাগরিক সমাজ’। গতকাল দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আকরম খাঁ হলে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে আলেমদের সংগঠনটি। লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট মাওলানা সাইমুম সাদীর সঞ্চালনায় লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন বিশিষ্ট আলেম ও তাকওয়া মসজিদের খতিব মুফতি সাইফুল ইসলাম। বিবৃতিতে বলা হয়, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার কারিকুলাম এবং পাঠ্যপুস্তককে ক্রমান্বয়ে ইসলামবিদ্বেষী ও সাম্প্রদায়িক রূপদান করে। এনজিও এবং বহির্শক্তির প্রেসক্রিপশনে তৈরি এই কারিকুলাম ছিল দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মূল্যবোধ ও সংস্কৃতিবিরোধী। ‘অখণ্ড ভারতের’ মতো চরম সাম্প্রদায়িক বয়ানে লেখা হয়েছিল ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক। ফলে ‘বাংলার স্বর্ণযুগ’ হিসেবে খ্যাত ‘সুলতানী আমল’ ছিল চরমভাবে উপেক্ষিত। ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ এবং ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা’ বইতে ছিল ট্রান্সজেন্ডার, যৌনবিকৃতি, অবাধ মেলামেশা-সহ পশ্চিমা সংস্কৃতির ভয়াল অনুপ্রবেশ। যার ফলে অভিভাকদের চরম শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়ায় আওয়ামী যুগের বিতর্কিত শিক্ষাব্যবস্থা।
সচেতন নাগরিক সমাজ মনে করে, বিগত রেজিমের সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী ছিল ইসলামবিদ্বেষীরা। গণমানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন সরকারকে বিপাকে ফেলতে এবং দেশকে অস্থিতিশীল করতে তারা পরিকল্পিতভাবেই এসব করছে।
এ ছাড়া বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান কর্তৃক ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনগোষ্ঠীকে ‘স্বার্থান্বেষী মৌলবাদী মহল’ আখ্যা দেয়ার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। তার এই বক্তব্যকে ‘ফ্যাসিবাদী’ এবং ‘ইসলামবিদ্বেষপ্রসূত’ আচরণ বলে উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিতে সরকারের কাছে তারা পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন। দফাগুলো হলো : ১। পাঠ্যপুস্তক চূড়ান্ত এবং ছাপানোর আগে তা অবশ্যই একদল মার্জিত ও অবিতর্কিত শিক্ষাবিদদের দ্বারা পর্যালোচনা করাতে হবে। যারা ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে সংবেদনশীল বিষয়গুলো চিহ্নিত করবেন এবং সংশোধন করবেন। প্রয়োজন হলে স্কলারদের সাথে পরামর্শ করে বাদ দেবেন। এই টিমে অবশ্যই যোগ্য আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
২। পাঠ্যপুস্তকে এমন কোনো ভিনদেশী মতাদর্শ প্রচার করা যাবে না, যা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সাংস্কৃতি এবং ঈমানি মূল্যবোধকে আঘাত করে। বিশেষ করে এলজিবিটি এবং জেন্ডার আইডিওলজি-সহ ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো কনটেন্ট এই মুসলিম অধ্যুষিত দেশের বইতে থাকা যাবে না।
৩। পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘অখণ্ড ভারতের’ মতো চরম সাম্প্রদায়িক বয়ান বাদ দিয়ে সঠিক ইতিহাস তুলে আনতে হবে। ইতিহাস পাঠে অবশ্যই বাংলার সোনালী যুগ অর্থাৎ সুলতানী আমলের নিরপেক্ষ ইতিহাস ও অবদানের কথা নিশ্চিত করতে হবে, যা পূর্বেকার স্বার্থান্বেষী মহল ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দিয়েছিল।
৪। কিসের ভিত্তিতে এই সমন্বয় কমিটি এবং সংশোধন ও পরিমার্জন টিম গঠিত হলো ও সদস্যদের নিয়োগ দেয়া হলো এবং কেন সেখানে যোগ্য শিক্ষাবিদ ও কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ নেই, সেটি জাতির কাছে স্পষ্ট করতে হবে।
৫। গণমানুষের চাহিদাকে আমলে নিয়ে আগামী বছরের জন্য নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সমাজের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতিফলন থাকবে। এরপর প্রশ্নোত্তর পর্বে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রফেসর ড. মুখতার আহমেদ, শায়খ আব্দুল হাই মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা রেজাউল করিম আবরার, শরীফ আবু হায়াত অপু এবং ডা: মেহেদি হাসান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা