মোট অর্থ সংগ্রহ সাড়ে ১১ কোটি, ব্যাংকে জমা ৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা
- ঢাবি প্রতিনিধি
- ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বানভাসিদের পাশে দাঁড়াতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র টিএসসির গণত্রাণ কর্মসূচির আয়-ব্যয়ের পূর্ণাঙ্গ অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ২২ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচিতে সর্বোমোট আয় হয়েছে ১১ কোটি ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকা। অর্থ থেকে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ২০৭ টাকা। বাকি ৯ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ২১৩ টাকা বর্তমানে ঢাবির দুটি পৃথক ব্যাংকের দুই অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে।
গত মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অডিট প্রকাশ করা হয়। এতে অডিট রিপোর্টের বিস্তারিত তুলে ধরেন পি কে এফ আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরী চার্টার্ড অ্যাকাউন্টের পার্টনার গোলাম ফজলুল কবির।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে কিছু সমন্বয়ক এলে পরবর্তীতে ২১ আগস্ট থেকে এই অডিট শুরু হয় এবং ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। এর মধ্যে যতগুলো ফাইন্যান্সিয়াল ট্রানজেকশনসহ যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর ভিত্তিতে আমাদের যেসব জিজ্ঞাসা ছিল সেগুলো তাদের করা হয়েছে। এ ছাড়া অডিট প্রসিডিওর এপ্লাই ও থার্ড পার্টি কনফার্মেশন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে আমাদের অডিট পিরিয়ড ছিল প্রায় ২০ দিন। বলা চলে, একটা এক্সটেনসিভ অডিট ছিল এটি। এখানে দুই ধরনের ডোনেশন পেয়েছিল তারা, একটি হলো ডোনেশন ইন ক্যাশ এবং অন্যটা ডোনেশন ইন কাইন্ড।
গোলাম ফজলুল কবির অডিটটিকে ফাইন্যান্সিয়াল অডিট উল্লেখ করে বলেন, ডোনেশন ইন কাইন্ডের মধ্যে পোশাকসহ নানা রিলিফ সামগ্রী রয়েছে। এগুলোকে প্রজেক্ট অনুযায়ী ব্যাখ্যা করা হয়েছে কিন্তু এগুলো অডিটের আওতার মধ্যে ছিল না। কেননা এগুলো টাকাতে কনভার্ট করা যায় না।
অডিট ব্যাখা করে তিনি বলেন, সব ডকুমেন্ট দেখে আমরা যে রিপোর্ট করেছি সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সব মিলিয়ে নগদ অর্থ পেয়েছে ১১ কোটি ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকা। এর মধ্যে ব্যাংকের মাধ্যমে ৭৮ লাখ ৫৭ হাজার ২১৬ টাকা, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে ৯৯ লাখ ৪৪ হাজার ৩৬৯ টাকা, টিএসসির বুথে নগদ অর্থ ৯ কোটি ৮৫ লাখ ১৫ হাজার ৭২৫ টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য (প্রাইজ বন্ড, স্বর্ণ, পানির বোতল) ৬ লাখ ৬৭ হাজার ১১০ টাকা পেয়েছে।
ব্যয় প্রসঙ্গে গোলাম ফজলুল কবির বলেন, তারা খরচ করেছে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ২০৭ টাকা। এর মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী কিনেছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯২ হাজার ১৩০ টাকা। এ ছাড়া কিছু ডোনেশন অর্গানাইজেশন ও কিছু মানুষকে দিয়েছে ১২ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা। প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়াল ১১ লাখ ২৪ হাজার ৯৪০ টাকা, ট্রান্সপোর্টেশন খাতে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ২০ টাকা, ফুড ফর ভলেন্টিয়ার অর্থাৎ যারা প্যাকেজিং কাজে জড়িত ছিল তাদের খাবার বাবদ ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৯৭ টাকা এবং ছোট ছোট খাতে ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ১২০ টাকা।
তিনি আরও বলেন, সব কিছু বাদ দিয়ে এখন গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের ৯ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ২১৩ টাকা ব্যাংকে রয়েছে।
অডিট বিলম্ব হওয়া প্রসঙ্গে গোলাম ফজলুল কবির বলেন, তাদের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল যেগুলো অ্যাকাউন্ট ছিল, সবগুলোই ব্যক্তির নামে ছিল। এ ছাড়া তারা ব্যক্তির নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্টও ব্যবহার করেছিল। সেগুলোর সবগুলো সমন্বয় করতে কিছুটা বিলম্ব হয়। তা ছাড়া অডিট তো একটা টেকনিক্যাল ব্যাপার, অনেক কাগজপত্র দেখতে হয়েছে, অনুসন্ধান করতে হয়েছে। সব কিছু নিশ্চিত করার পর, গত মঙ্গলবার তাদের অডিট রিপোর্ট প্রদান করা সম্ভব হয়েছে।
কোনো গরমিল লক্ষ্য করা গিয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এমন কিছু খুঁজে পাইনি যেটা নিয়ে আমরা প্রশ্ন করব। তাদের আয়-ব্যয় হিসাব স্বচ্ছ ছিল।
জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকের দুই শাখায় বর্তমানে ৯ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ২১৩ টাকা জমা রয়েছে। এ টাকা বন্যার্তদের পুনর্বাসন এবং উত্তরবঙ্গে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যয় করা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা