২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

চট্টগ্রামে যুবককে গান গেয়ে পিটিয়ে হত্যায় গ্রেফতার ৩

-

চট্টগ্রাম নগরের ২ নম্বর গেটে শাহাদাত হোসেন নামে এক যুবককে গান গেয়ে গেয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন একদল যুবক। ওই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার প্রায় দেড়মাস পর গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ওই হত্যায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
গণপিটুনিতে নিহত শাহাদাত হোসেন নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী থানার পাঁচবাড়িয়া ইউনিয়নের নদনা গ্রামের মোহাম্মদ হারুনের ছেলে। তিনি স্ত্রী শারমিন আক্তারকে নিয়ে চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার বিআরটিসি এলাকার বয়লার কলোনিতে থাকতেন।
সিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো: তারেক আজিজ গতকাল এক ব্রিফিংয়ে জানান, ভাসমান ব্যবসায়ী ফরহাদ আহমেদ চৌধুরী জুয়েল তৈরি করেন একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। সেটির
নাম দেন ‘চট্টগ্রাম ছাত্র-জনতা ট্র্যাফিক গ্রুপ’। এরপর যুক্ত করেন নিজের পরিচিত ছোট-বড় বিভিন্ন পেশার সবাইকে। তবে ট্র্যাফিকিং নয়, অপকর্ম করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। ওই গ্রুপেই পেটাতে ডাকার ঘোষণা দিয়ে শাহাদাত হোসেন নামে যুবককে গান গেয়ে গেয়ে পিটিয়ে হত্যা করে গ্রুপের সদস্যরা।

গ্রেফতার তিনজন হলো- হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিন ফরহাদ আহমেদ চৌধুরী প্রকাশ জুয়েল (৪২), মো: সালমান (১৬) এবং আনিসুর রহমান ইফাত (১৯)। তাদের মধ্যে একমাত্র ইফাতই ছাত্র। কাজী মো: তারেক আজিজ বলেন, মূলত ঘটনাটি ঘটেছিল গত ১৩ আগস্ট। ঘটনার পর শাহাদাতের লাশ তারা প্রবর্তক মোড় এলাকায় ফেলে রাখে। পরে পুলিশ দেখতে পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে। এর আগে কয়েক দফায় গান গেয়ে গেয়ে তাকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে সে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মোহাম্মদ হারুন বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ আসামিদের শনাক্তে কাজ শুরু করে এবং গত মঙ্গলবার টানা চার ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ জানিয়েছে,নিহত শাহাদাতের বিরুদ্ধে নগরের কোতোয়ালি থানায় ৬টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চারটি অস্ত্র মামলা, একটি ডাকাতির প্রস্তুতি মামলা এবং আরেকটি চুরির অভিযোগে হয়েছে। এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক গোল হয়ে গাইছেন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান ‘মধু হই হই আঁরে বিষ খাওয়াইলা’। কেউ মুখ দিয়ে বাজাচ্ছেন বাঁশি, কেউ করছেন উল্লাস। ঠিক তাদের মাঝখানেই নীল রঙের গেঞ্জি এবং জিন্স প্যান্ট পড়ে শাহাদাত নিস্তেজ হয়ে ঢুলছেন। তার দুই হাত বেঁধে রাখা হয়েছে স্টিলের পাইপের সাথে। গান গেয়ে গেয়েই পিটিয়ে নৃশংস ও নির্মমভাবে তাকে হত্যা করা হয়।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement