২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

চোরকে চিনে ফেলায় খুন হন নটর ডেমের অফিস সহকারী লিপিকা

-

চোরকে চিনে ফেলায় খুন হয়েছেন নটর ডেম কলেজের অফিস সহকারী লিপিকা গোমেজ। দুর্বৃত্তরা তাকে মাথায় আঘাত ও বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতারকৃতদের নাম-জুয়েল রানা ও নজরুল।
গতকাল সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি সায়েদুর রহমান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, লিপিকা গোমেজের পূর্বপরিচিত ছিল জুয়েল রানার ধারণা ছিল, লিপিকার বাসায় বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ রয়েছে। সেগুলো চুরি করতে ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় প্রবেশ করে জুয়েল ও তার বন্ধু নজরুল। তাদের চিনে ফেলায় লোহার পাইপ দিয়ে মাথায় আঘাত করে লিপিকাকে হত্যা করা হয়।
ডিআইজি সায়েদুর রহমান বলেন, পুরান ঢাকার সূত্রাপুর থানার ৭৫ নম্বর ঋষিকেশ দাস রোডের একটি বাসায় ১৮ বছর ধরে একাই বসবাস করতেন লিপিকা। তার কোনো সন্তান ছিল না। গত ১০ সেপ্টেম্বর তিনি অফিস করেন। তবে পরের দিন কর্মস্থলে উপস্থিত না হওয়ায় নটর ডেম কলেজের অধ্যক্ষ হেমন্ত পিউস রোজারিও কলেজের দুই স্টাফ জনি ও জয়দেবকে লিপিকার বাসায় পাঠান। তারা গিয়ে কেয়ারটেকার মিতুকে নিয়ে বাসায় ঢুকে খাটের ওপর লিপিকার লাশ দেখতে পান। পরে খবর পেয়ে লিপিকার মামাতো ভাই প্রিন্স গোমেজ আসেন। লাশ উদ্ধার করে সূত্রাপুর থানা-পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। লিপিকার মাথায় বাম পাশে ভোঁতা অস্ত্রের আঘাত ছিল। এ ঘটনায় প্রিন্স গোমেজ বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে সূত্রাপুর থানায় মামলা করেন।

তিনি বলেন, মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর)। তদন্তের এক পর্যায়ে পাওয়া গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে জুয়েল রানা ও নজরুলকে আটক করা হয়। পিবিআইয়ের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের দেয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি নোজ প্লাস, দুইটি স্কু ড্রাইভার এবং চুরি যাওয়া বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার দুই আসামির বরাত দিয়ে ডিআইজি সায়েদুর বলেন, নজরুলদের বাসায় মেসে খেতো জুয়েল রানা। সেখান থেকেই তাদের পরিচয়। সাত-আট বছরের বন্ধুত্ব। জুয়েল রানা নজরুলকে জানায়, তার পাশের বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলায় একজন নারী একা থাকে। তার স্বামী-সন্তান নেই। তার বাসায় চুরি করলে অনেক টাকা-পয়সা পাওয়া যাবে। তিনি আরো বলেন, হত্যার পর আসামিরা ভুক্তভোগীর দু’টি মোবাইলফোন, হাতব্যাগ নিয়ে দরজায় তালা লাগিয়ে চলে যায়। ব্যাগে থাকা ২৬ হাজার ৩৫০ টাকা ভাগ করে নেয়। পরে তারা মোবাইলফোন দু’টি সাড়ে তিন হাজার টাকায় বিক্রি করে।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, লিপিকা হত্যা ও তার বাসায় প্রবেশের বিষয়টি মাথায় রেখে নটর ডেম কলেজের একাধিক কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে সন্দেহভাজন কাউকে পাওয়া যায়নি। তারপরও আমাদের তদন্তকার্যক্রম চলমান। পুরান ঢাকার ধোলাইখালের ঋষিকেশ দাস লেনের বাসা থেকে ১১ সেপ্টেম্বর লিপিকা গোমেজের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement