২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

নিজেই আনারকলি হতে চেয়েছিলেন মধুবালা

নিজেই আনারকলি হতে চেয়েছিলেন মধুবালা - ছবি : সংগৃহীত

পর্দায় তিনি গেয়ে উঠেছিলেন, ‘পেয়ার কিয়া তো ডরনা ক্যায়া’। দৃপ্ত ভঙ্গিতে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘ইসক মে জিনা, ইসক মে মরনা… অউর হামে আব করনা ক্যায়া! ‘। আর তাতেই যেন হল ম্যাজিক। প্রেমের এমন সাহসী উচ্চারণ আর দ্বিতীয়টি নেই।

ভারতীয় সিনেমা আর প্রেম- এই নিয়ে যদি কথা বলতে হয়, তবে অবধারিতভাবে সব পথ এসে যার নামে মিশে যায়, তিনি এক এবং অদ্বিতীয় মধুবালা। আর কী আশ্চর্য সিনেমায় যিনি প্রেমের রূপকথা লিখেছিলেন, তার জন্মদিনটাই সারা পৃথিবী সেলিব্রেট করে প্রেমের দিন হিসাবে।

মুঘল-এ-আজম। সেলুলয়েডে লেখা প্রেমের মহাকাব্য। কে আসিফের এ সিনেমা কেবল চলচ্চিত্র যেন নয়, ভারতীয় সিনেমায় প্রেমের ইশতেহারই বলা যায় একে। আর সেই প্রেমের পদাবলিতে প্রাণসঞ্চার করেছিলেন যিনি, তিনি মধুবালা। ভারতীয় চলচ্চিত্রের প্রেমের সম্রাজ্ঞী।

আজ ভেবে আশ্চর্য হতে হয় যে, এই আইকনিক চরিত্রের জন্য প্রথমে তার কথা ভাবাই হয়নি। এমন নয় যে, গোড়ায় ভাবা হয়েছিল যে, এই চরিত্রে তিনি প্রাণদান করতে পারবেন না। আসলে এর নেপথ্যে থেকে গেছে এক বিবাদের গল্প।

ইন্ডাস্ট্রিতে মধুবালার কাজকর্মের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতেন তার বাবা আতাউলা খান সাহেব। পরিচালক কে আসিফ আগে একটি ছবির জন্য তার বাবার সাথে কথা বলেছিলেন।

তিনি এমন এমন শর্ত রেখেছিলেন, যাতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন পরিচালক। রাগ করে সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘আপনার মেয়েকে শোকেসে তুলে রেখে দিন’। এরপর যখন মুঘল-ই-আজম নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করলেন, প্রত্যাশিতভাবেই এল না মধুবালার নাম। পরিচালক প্রথমে ভেবেছিলেন নার্গিসের কথা। কিন্তু কোনো কারণে নার্গিস এই চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হননি। এদিকে দিলীপ কুমার যে নায়ক হবেন, তা ততদিনে ঠিক হয়ে গিয়েছে।

তিনি বলেছিলেন, অভিনেত্রী বিজয়লক্ষ্মীর কথা। কিন্তু কিছুতেই যেন সবকিছু মনের মতো হচ্ছিল না পরিচালকের। হয়তো বিধাতা সেদিন মুচকি হেসেছিলেন অলক্ষে। যে চরিত্র অমর করে রাখবে মধুবালাকে এবং আসিফের সৃষ্টিকে তা মধুবালা ছাড়া আর কার কাছেই বা যেতে পারে!

আধুনিক সময়ের নিরিখে বদলে গেছে প্রেমের ধরন-ধারণ। সিনেমাও ‘সিলসিলা’ পেরিয়ে খুঁজে নিচ্ছে প্রেমের ‘গেহরাঁইয়া’। তবু প্রেমের দিন এলেই আজও একটি দৃশ্যই যেন ফুটে ওঠে সিনেপ্রেমীর চোখে। নৌশাদজির সুরে গাইছেন লতা মঙ্গেশকর। আর দুনিয়ার প্রেমিকের দিকে তাকিয়ে মধুবালা বলে উঠছেন- ‘পর্দা নেহি যব কোহি খুদাসে/ বন্দোসে পরদা করোনা ক্যায়া- যব পেয়ার কিয়া তো ডরনা ক্যায়া।’


আরো সংবাদ



premium cement