২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রূপালি গিটারের জাদুকরের মৃত্যুর ৬ বছর

রূপালি গিটারের জাদুকরের মৃত্যুর ৬ বছর - ফাইল ছবি

আজ ১৮ অক্টোবর। জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুর ছয় বছর। দীর্ঘ কয়েক দশক ব্যান্ড সঙ্গীতের জগতকে মাতানোর পর ২০১৮ সালের এই দিনে তার চলে যাওয়ার খবরে স্তম্ভিত হয়েছিল সারা দেশের সঙ্গীতপ্রেমীরা।

তিনি নিজেকে পরিচয় দিতে ভালোবাসতেন প্রথমত একজন গিটারিস্ট হিসেবে। তারপর গায়ক। তিনি নিজেই গান লিখতেন, সুর করতেন।

আইয়ুব বাচ্চু ১৯৬২ সালে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। গানের জগতে আসেন ব্যান্ড ফিলিংস-এর মাধ্যমে। এর আগে বন্ধুদের সাথে ছোটখাট অনুষ্ঠান করতেন। কিন্তু ১৯৭৮ সাল থেকে ফিলিংস-এর সাথে তিন বছর তিনি চট্টগ্রামের বিভিন্ন হোটেলে ইংরেজি গান করেছেন।

সত্তরের দশক থেকে বাংলাদেশে শ্রোতাদের কাছে ইংরেজি গান, হার্ড-রক, ব্লুজ, অল্টারনেটিভ রক, ব্যান্ড মিউজিক - এসব জগতের পরিচয় হতে থাকে তার গানের মধ্য দিয়ে।

১৯৮০ সালের দিকে তিনি সোলস ব্যান্ডের সাথে গান করতেন। এই দলের সাথে তিনি ১০ বছর যুক্ত ছিলেন। তারপর ১৯৯১ সালে গঠন করেন এলআরবি। তিনি একক অ্যালবাম করেছেন ১৬টি। আর ব্যান্ড অ্যালবাম করছেন ১২টি। এর মধ্যে ‘কষ্ট’ এবং ‘ফেরারি মন’এই দুটি অ্যালবামের গান দেশের বড় শহর ছাড়িয়ে ছোট ছোট শহরেও আইয়ুব বাচ্চুর নামকে পরিচিত করে তোলে।

তবে রূপালি গিটার খ্যাত এই মানুষটি সব সময়ই চেয়েছেন সুর দিয়ে দেশের সীমানা অতিক্রম করতে। বাংলাদেশের মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এবং সারাবিশ্বে যারা বাংলা ভাষাভাষী মানুষ আছেন, তাদেরকে গানের মাধ্যমে জাগিয়ে রাখার জন্যই আইয়ুব বাচ্চুর সব রকমের প্রচেষ্টা ছিল।

নব্বইয়ের দশকে আইয়ুব বাচ্চুর এসব হিট অ্যালবামের প্রভাব পরে বাংলাদেশ ও কলকাতার মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতেও। তার ধ্যান, জ্ঞান, চিন্তা এবং কঠোর সাধনা তাকে এই জায়গায় উন্নীত করেছিলেন। তিনি যে ধারাটা তৈরি করে গেছেন সেটা অপূরণীয় থেকে যাবে।

এ কারণেই প্রিয় শিল্পীর মাত্র ৫৬ বছর বয়সে মৃত্যু সহজে মেনে নিতে পারেনি ব্যান্ডপ্রেমিক এবং তার ভক্তরা। কথায়, গানে, সামাজিকমাধ্যমে বারবার উঠে এসেছে ‘সেই তুমি’ বা ‘একদিন ঘুম ভাঙা শহরে’। জনপ্রিয় ব্যান্ডশিল্পীর স্মৃতি ধরে রাখতে চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রবর্তক মোড়ে গড়ে তোলা হয়েছে ‘রূপালি গিটার’। যা স্রোতা ভক্তদের সব সময় মনে করিয়ে দেবে রুপালি গিটারের কথা, আইয়ুব বাচ্চুর কথা।

আইয়ুব বাচ্চুর কণ্ঠে কালজয়ী কিছু গান হলো ‘সেই তুমি’, ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘এখন অনেক রাত’, ‘মেয়ে’, ‘কেউ সুখী নয়’, ‘হাসতে দেখো গাইতে দেখো’, ‘এক আকাশের তারা’, ‘ঘুমন্ত শহরে’, ‘রূপালি গিটার’, ‘উড়াল দেব আকাশে’, ‘একচালা টিনের ঘর’, ‘তারাভরা রাতে’, ‘বাংলাদেশ’, ‘বেলা শেষে ফিরে এসে’, ‘আমি তো প্রেমে পড়িনি’, ‘আম্মাজান’, ‘ফেরারি মন’ ইত্যাদি।


আরো সংবাদ



premium cement