১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ৯ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

হঠাৎ সালমান খানের বাড়ির নিরাপত্তা জোরদার

- ছবি : সংগৃহীত

হঠাৎ বলিউড অভিনেতা সালমান খানের অ্যাপার্টমেন্টের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে 'সুলতান' অভিনেতার গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে অন্য সময়ের থেকে বেশি নিরাপত্তা কর্মীদের দেখা গিয়েছে।

এর আগে শনিবার রাতে মুম্বাইয়ের বান্দ্রা ইস্ট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন মহারাষ্ট্র রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী ও ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতা বাবা সিদ্দিকি। আহত অবস্থায় লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পরই সালমান খানের নিরাপত্তা জোরদার করে প্রশাসন।

খবর পেয়ে শনিবার গভীর রাতে হাসপাতালে ছুটে যান সালমান খান। তিনি গুলিবিদ্ধ সিদ্দিকির পরিবারের সাথে দেখা করে সমবেদনা জানান।

সিদ্দিক খুন হওয়ার সময় সালমান খান ফিল্ম সিটিতে ছিলেন এবং বিগ বস উইকেন্ড কা ওয়ার-এর রোববারের এপিসোডের শুটিং করছিলেন। সিদ্দিকির মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্রই শুটিং বাতিল করে হাসপাতালে পৌঁছে যান তিনি।

মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডে তিন বন্দুকধারী জড়িত ছিলেন। তিনজনের মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর একজন উত্তরপ্রদেশের গুরমাইল বালজিৎ সিং (২৩), অন্যদিক হরিয়ানার ধর্মরাজ কাশ্যপ (১৯)। তৃতীয় জনকে শিব কুমার গৌতম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তিনিও উত্তর প্রদেশের। পুলিশ তাকে ধরার চেষ্টা করছে। চতুর্থ আরেকজন, যাকে নেপথ্যের পরিকল্পনাকারী বলে মনে করা হচ্ছে, তাকেও খুঁজছে পুলিশ।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে মুম্বাইয়ের বান্দ্রা পূর্ব এলাকার নির্মল নগরে কোলগেট মাঠের কাছে ছেলে জিশান সিদ্দিকের অফিস থেকে বের হন বাবা সিদ্দিক। গাড়িতে উঠতে যাবেন এমন সময়ে তাকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। সাথে সাথে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে স্থানীয় লীলাবতী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

বলিউড অভিনেতা সালমান খানের সাথে বাবা সিদ্দিকের সুসম্পর্ক ছিল। একটা সময় অভিনয়ের দুনিয়ার মানুষ ছিলেন বাবা সিদ্দিক। তবে রাজনীতিক হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছেন। সালমান থেকে শাহরুখ, ক্যাটরিনা থেকে প্রীতি জিনতা বাবা সিদ্দিকির ইফতার পার্টিতে উপস্থিত থাকতেন বলিউডের প্রথম সারির তারকারা।

বাবা সিদ্দিক মহারাষ্ট্রের বান্দ্রা পশ্চিম নির্বাচনী এলাকা থেকে তিনবার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিলাসরাও দেশমুখের অধীনে ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি খাদ্য ও বেসামরিক সেবা সরবরাহ এবং শ্রম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

ভারতের বর্তমান প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের রাজনীতির সাথে তিনি প্রায় পাঁচ দশক যুক্ত ছিলেন। যুব কংগ্রেসের মাধ্যমে রাজনীতিতে তার হাতেখড়ি। কংগ্রেসের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি এনসিপিতে যোগ দিয়েছিলেন।

বাবা সিদ্দিকি ৪৮ বছর ধরে কংগ্রেসের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিন মেয়াদে বান্দ্রা পশ্চিমের বিধায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। চলতি বছরের গোড়ায় অজিত পাওয়ারের দল ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টিতে যোগ দেন তিনি।

তবে শুধু রাজনৈতিক ব্যক্তত্ব হিসেবে পরিচিত ছিলেন না বাবা সিদ্দিকি। বরং, বলিউড তারকাদের সাথেও ছিল তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। সিদ্দিক ঈদের আগে বার্ষিক ইফতার পার্টির আয়োজন করতেন, যেখানে বসত তারকাদের মেলা। এরকমই এক পার্টিতে, ২০১৩ সালে শাহরুখ ও সলমনের মধ্যে চলা বহুদিনের ঝগড়ার অবসান ঘটিয়েছিলেন তিনি।

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ঘোষণা করেন, পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সিদ্দিকের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর (সিএমও) অনুসারে, সিদ্দিককে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় সম্মান দেয়া হবে, কারণ তিনি ২০০৪-২০০৮ সালে মহারাষ্ট্র সরকারের মন্ত্রী এবং মহারাষ্ট্র হাউজিং অ্যান্ড এরিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এমএইচএডিএ) চেয়ারম্যান হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

সূত্র : হিন্দুস্থান টাইমস


আরো সংবাদ



premium cement

সকল