২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ভারতীয়দের বাঁধ কাটার ভয়াবহতা বামাক চেয়ারম্যানকে জানালেন স্থানীয়রা

ভারতীয়দের বাঁধ কাটার ভয়াবহতা বামাক চেয়ারম্যানকে জানালেন স্থানীয়রা - ছবি : নয়া দিগন্ত

‘আগের দুই-তিন রাতও ঘুমায়নি নিজ কালিকাপুরের বাসিন্দারা। তাদের শঙ্কা ছিল সীমান্তের ওপারে প্রবল বৃষ্টি হওয়ায় যেকোনো সময় বাঁধ কেটে দিতে পারে ভারতীয়রা।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। তাকে ওই রাতের ভয়াবহতা বর্ণনা করেন স্থানীয়রা।

ওই দিন (২০ আগস্ট) রাত দেড়টা থেকে ২টা। এ সময় দেড় থেকে ২০০ মানুষ অবস্থান নেয় ভারতের উত্তর বিলোনিয়া বাঁধের ওপর। টের পেয়ে শত শত বাংলাদেশীও জড়ো হয় ঘটনাস্থলের কাছে মুহুরী বাঁধের ওপর। তারা নোম্যান্স ল্যান্ডের এপার থেকে শোরচিৎকার করে প্রতিবাদ জানায়। এ সময় বাঁধ কেটে দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে ভারতীয়রা।

ফজলে আজিম মজুমদার নামে স্থানীয় বাসিন্দা জানান, বাঁধ কাটার সময় উত্তর বিলোনিয়ার বাসিন্দাদের সাথে বিএসএফ সদস্যরাও ছিলেন। কয়েক রাউন্ড গুলি করার পর বাংলাদেশীরা পিছু হটে। একপর্যায়ে বল্লামুখর সংলগ্ন ওই বাঁধে কাটা অংশ দিয়ে প্রবল স্রোতে পানি আসতে থাকলে স্থানীয়রা মুহুরী বাঁধের ওপর সিমেন্টের বস্তা দিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। বিজিবি সদস্যরাও তাদের কিছু বস্তা দিয়ে সহায়তা করেন। কিছুসময় রক্ষা পেলেও একপর্যায়ে স্রোতের তীব্রতায় এসব কিছুই টিকেনি। পরশুরাম-ফুলগাজী হয়ে বন্যার পানিতে পুরো ফেনী তলিয়ে যায়। স্মরণকালের এ ভয়াবহ বন্যায় পর্যায়ক্রমে কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্ণীপুরসহ আশপাশের জেলা সমূহও প্লাবিত হয়।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদকে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে স্থানীয়রা আরো বলেন, ভারতীয়দের এ নিষ্ঠুর আচরণে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়েও যাওয়ার সময় পায়নি। ততক্ষণে তাদের বাড়িঘর ডুবে ভয়ানক ক্ষতির শিকার হন।

মো: মহসিন নামে আরেক বাসিন্দা জানান, ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে প্রতিবছরই মুহুরী-কহুয়া নদীর বাঁধের কয়েক স্থানে ভেঙ্গে সীমান্তবর্তী পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলা প্লাবিত হয়। কিন্তু এবারের সৃষ্ট বন্যাকে তারা পরিকল্পিত বলে মনে করেন। এর ক্ষতির পরিমাণও অপূরণীয়।

তিনি বলেন, মুহুরী-কহুয়া বাঁধ নির্মাণের পর নিজকালিকাপুর অংশে গত ১৫-১৬ বছরে সংস্কার হয়নি। এতে করে বাঁধটি আরো ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। অপরদিকে ভারত বিলোনিয়া অংশে নদী থেকে নিরাপদ দূরত্বে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করায় মুহুরী নদীর ভাঙন পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশের দিকে বাড়তে থাকে।

ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমার দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা। কারও কোনো অবহেলার কারণে কেউ যেন আক্রান্ত না হয়, মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। উত্তর বিলোনিয়ায় (বল্লামুখা) বাঁধের ক্ষতি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় মানুষের জীবন-জীবিকা ভীষণভাবে আক্রান্ত হবে। যেটা আমরা চাই না।

২০১৩ সালে মুহুরী চর যেটি বাংলাদেশের পক্ষে এসেছে, সেখানেও তিনি কাজ করেছেন উল্লেখ করে বলেন, তখন ভারতের সাথে ভূমিসীমার বিভাজনের সময় বাংলাদেশের টিম লিডার হয়ে কাজ করেছি। তখনো এ বাঁধটি থ্রেড ছিল। মানুষ একে অপরকে সহায়তার মাধ্যমে বাঁধ রক্ষা করেছে। তবে মানুষের প্রতিরক্ষার জন্য একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ একান্ত প্রয়োজন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা হাবিব শাপলা, দৈনিক আমার কাগজ সম্পাদক ফজলুল হক রানা সাথে ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement
রাশিয়া রাতে ‘রেকর্ড’ সংখ্যক ড্রোন হামলা চালিয়েছে : ইউক্রেন আতঙ্ক নয়, পুলিশ হবে জনগণের ভরসা : জিএমপি কমিশনার হাওরে বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে : উপদেষ্টা রাজশাহীতে সাবেক এমপি রায়হান গ্রেফতার পাবনায় পানিতে ডুবে ২ বছরের শিশুর মৃত্যু টেকনাফে বিজিবির অভিযানে আড়াই লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার চট্টগ্রামে আইনজীবী কুপিয়ে হত্যা করল চিন্ময়ের সমর্থকরা তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চট্টগ্রামে ইসকন সমর্থক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ বিপুল পরিমাণে বিদেশী মুদ্রাসহ শাহ আমানতে যাত্রী আটক রাখাইনে গণহত্যা ও চলমান সহিংসতার বিচারের দাবি রোহিঙ্গাদের

সকল