২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

কক্সবাজার রোগীর মৃত্যুর জেরে চিকিৎসককে মারধর, চিকিৎসা সেবা বন্ধ

কক্সবাজার রোগীর মৃত্যুর জেরে চিকিৎসককে মারধর, চিকিৎসা সেবা বন্ধ - নয়া দিগন্ত

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি এক রোগীর মৃত্যুর জেরে কর্তব্যরত চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় আইসিইউ, সিসিইউসহ হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয় বলে জানা গেছে।

বুধবার সকাল থেকে এ ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার করা না হলে চিকিৎসক, নার্সসহ সব ধরনের কর্মচারীরা কাজে ফিরবে না বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার সময় সিসিউতে ভর্তি থাকা কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া এলাকার আবদুল আজিজ নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়।

স্বজনদের অভিযোগ, ব্যথানাশক ইনজেকশন পুশ করার পরই তার মৃত্যু হয়। ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে দাবি করে হাসপাতালের ভেতরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তার স্বজনেরা।

একপর্যায়ে তারা কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সজিব কাজিকে মারধর করা হয়। চালানো হয় ভাঙচুর।

হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. জাহিদুল মোস্তফা জানান, জটিল সঙ্কটাপন্ন রোগীকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেয়ার পরও কয়েকজন যুবক চিকিৎসককে ব্যাপক মারধর করে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালানো হয়। ভাঙচুর চালানো হয় আইসিইউ, সিসিইউসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে। নিয়ে যাওয়া হয় নানা সরঞ্জামও। আহত চিকিৎসককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরা ঘটনার একটি ফুটেজে দেখা যায়, চার যুবক চিকিৎসক সজীবকে ধরে মারধর করছেন। একপর্যায়ে চিকিৎসক জ্ঞান হারিয়ে নিচে পড়ে যান। ফুটেজে হামলাকারি দু’জনকে ইতোমধ্যে শনাক্তও করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আসিফ ও মেহেদী নামের এই দু’জন মৃত্যু হওয়া রোগীর স্বজন না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এ ঘটনার সুরাহা না হলে হাসপাতালের আবাসিক রোগীদের কোনো ধরনের সেবা দেয়া হবে না বলেও জানান ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এমনকি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রবেশ করে চিকিৎসা কার্যক্রমও বন্ধ করে দেন। জরুরি বিভাগে সেবা সচল থাকলেও বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেটিও বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করছে চিকিৎসক-ওয়ার্ড কর্মীসহ হাসপাতালটির বিভিন্ন শ্রেণীর স্টাফরা।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার নুরুল হুদা বলেন, ‘যদি নিরাপত্তা দিতে না পারে তাহলে কোনো স্টাফই কাজে ফিরবে না। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা নিশ্চিত করতে হবে। কথায় কথায় চিকিৎসকসহ স্টাফদের ওপর হামলা হচ্ছে। তাতে সবাই নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। তারপর সেবা।’

ওয়ার্ড-কর্মীদের নেতা শোভন দাশ বলেন, ‘গেল তিন মাস কোনো ধরনের বেতন পাইনি। তারপরও আমরা সেবা নিশ্চিত করেছি। কিন্তু এখন নিজের ওপর হামলা হচ্ছে। নিরাপত্তা যদি না থাকে তাহলে কিভাবে কাজ করব আমরা।’

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (প্রশাসন) ডা. জি আর এম জিহাদুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি সমাধানে আলোচনায় বসেছে চিকিৎসক-নার্স ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। বৈঠকটিতে সিদ্ধান্ত না এলে অনির্দিষ্টকালের কর্ম-বিরতিতে যেতে পারে হাসপাতালের দায়িত্বরতরা।’


আরো সংবাদ



premium cement