নাঙ্গলকোটে ৯ দিনেও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি
- সাইফুল ইসলাম, নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা)
- ৩০ আগস্ট ২০২৪, ২০:৪১
নাঙ্গলকোটে গত ৯ দিনেও ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। এখনো বিভিন্নস্থানে বাড়ি-ঘর পানির নিচে রয়েছে। বিভিন্ন সড়ক ও গ্রামীণ রাস্তাঘাটে পানি রয়েছে। বিভিন্ন বাড়িঘর থেকেও সম্পূর্ণ পানি নামেনি। উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ৪টি গ্রাম এখনো পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। বন্যাদুর্গতরা বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। এছাড়া বক্সগঞ্জ-সাতবাড়িয়া-গুণবতী সড়কের সাতবাড়িয়া দক্ষিণপাড়া অংশটি এখনো কোমর পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। অন্যদিকে উপজেলা রায়কোট উত্তর, দক্ষিণ, মৌকরা, ঢালুয়া, বক্সগঞ্জ পূর্ব, পশ্চিম, বটতলী, দৌলখাঁড়, আদ্রা উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম এখনো পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর আশ্রয়কেন্দ্র এবং পানিবন্দী মানুষকে এখনো বিভিন্ন রাজনৈতিকদল, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, প্রবাসী, বিভিন্ন গ্রামবাসীর উদ্যোগে রান্না করা এবং শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এখনো বিভিন্ন সংগঠন এবং ব্যাক্তি আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যাদুর্গতদের মাঝে খাবার বিতরণ করছে।
বন্যায় মৎস্য চাষিরা কোটি-কোটি টাকা মাছ হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এছাড়া রোপা আউশ, রোপা আমন, আমন বীজতলা এবং শাক-সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষকরা তাদের ফসল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে বিভিন্ন পোল্টি খামারিরা তাদের মুরগি মরে যাওয়ায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তাদেরকে দুঃচিন্তায় থাকতে হচ্ছে।
বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে এলার্জি, ডায়েরিয়া, সর্দি এবং কাশির প্রভাব দেখা দিয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১৩টি মেডিক্যাল টিম বন্যা দুর্গতদের স্বাস্থ্যসেবা কাজ করে যাচ্ছেন। বিভিন্নস্থানে গবাদিপশুর খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বন্যার পানি কমার সাথে-সাথে কাঁচা বাড়িঘর কর্দমাক্ত, ভেঙ্গে পড়া বাড়িঘর মেরামত এবং রাস্তাঘাট সংস্কার নিয়ে বন্যাদুর্গতদের চিন্তার শেষ নেই।
সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন সরেজমিনে ঘুরে এবং বিভিন্নস্থানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ডাকাতিয়া নদী তীরবর্তী সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের তপবন, সাজেনপুর, নাইয়ারা ও সাতবাড়িয়া পূর্ব, উত্তর এবং দক্ষিণ পাড়া এখনো পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে।
বক্সগঞ্জ-সাতবাড়িয়া-গুণবতী সড়কের সাতবাড়িয়া সেতু থেকে সাতবাড়িয়া বাজার পর্যান্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক কোমরপানি পর্যন্ত নিমজ্জিত রয়েছে। বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যাদুর্গতরা এখনো আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যায় গবাদিপশু নিয়ে মালিকদের দুর্ভোগের শেষ নেই। সাতবাড়িয়া গ্রামবাড়ি সাতবাড়িয়া সেতুতে তার গরু, ছাগল রেখেছেন। এছাড়া রায়কোট উত্তর ইউনিয়নের গাসিয়াল, খাঁড়ঘর, পিপড্ডা, বেকামলিয়া, কোকিরিখিল রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়নের পূর্বপামপাড়া, চাঁনপুর, নারানদিয়া, মৌকরা ইউনিয়নের চারিতুপা, পৌছইর, মোহেশ্বর, ঢালুয়া ইউনিয়নের উরকুটি, হরিনদিয়া, নুলুয়াকান্দি, জামুরাইল, জিনিয়ারা, পুঁটিজলা, বেরলা, গোরকমুড়া, বটতলী ইউনিয়নের জিনিয়ারা, বাসুদাই, মাছিমপুর, নাড়াচৌ, দৌলখাঁড় ইউনিয়নের উল্লাখালি, মাটিয়াগোদা, নারায়নবাতুড়া, জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়নের বাইয়ারা চডিয়াবাজার, জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়নের করপাতি, মানিকমুড়া, গোড়াময়দান, বাহুড়া, আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের চাটিতলা, আটিয়াবাড়ি, শাকতলী, হিয়াজোড়া, বেলঘর, কাকৈরতলা ও উত্তর ইউনিয়নের কালোচৌ, ভোলাইন, মেরকোট এলাকা এখনো পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।
সাতবাড়িয়া গ্রামের মশিউর রহমান বাবু বলেন, সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ৪টি গ্রাম এখনো পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। তিনি পানি কমার পর বন্যাদুর্গতদের খাবার এবং বাড়িঘর সংস্কারে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা কামনা করেন।
জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়নের করপাতি গ্রামের আরিফ হাসান বলেন, বন্যাদুর্গতদের আমরা বিভিন্নভাবে খাবার ব্যবস্থা করছি। বর্তমানে এ এলাকায় গো-খাদ্যের খুব সঙ্কট রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা