কুবি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলা, প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি
- কুবি সংবাদদাতা
- ১২ জুলাই ২০২৪, ১৯:৫২
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও যে স্থানে পুলিশ প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় তাকে ‘ছাত্র আন্দোলন চত্বর’ ঘোষণা করেছে।
শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন দক্ষিণ মোড় ও আনসার ক্যাম্প প্রদক্ষিণ করে গোল চত্বরে এসে শেষ হয়।
পথে শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্র আন্দোলন চত্বরে’ (আন্সার ক্যাম্প মোড়) আহতদের স্মরণে ১ মিনিটের নিরবতা কর্মসূচি পালন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনা করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ছাত্র আন্দোলনে পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা জানান। এছাড়াও প্রক্টরিয়াল নিরবতার কারণে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছেন বলে অভিযোগ তুলে বক্তব্য রাখেন।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী বি এম সুমন বলেন, ‘আজকে আমাদের হৃদয়ে যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে তা কিভাবে বন্ধ হবে জানি না। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে পুলিশ বিনা উস্কানীতে লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। আমাদের ৩০ এর অধিক ভাইয়েরা রক্তাক্ত হয়ে হাসপাতালে নিদারুণ যন্ত্রণায় ঝটপট করছে। তাঁদের যন্ত্রণার আওয়াজ, কান্নার আওয়াজ সারা বাংলাদেশে অলি গলিতে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু তাদের এই আওয়াজ যাদের কানে যাওয়ার কথা ছিল তারা কানে তুলা দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। তাই এই হামলায় প্রত্যক্ষ মদদ দেয়া প্রক্টরকে যতদিন অপসারণ করা হবে না ততদিন আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
এদিকে কোটা আন্দোলনে যোগ দেয়ায় জহুরা মিম নামের একজন নারী শিক্ষার্থী হেনস্তার অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী ও মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের সভাপতি আমিনুর বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, কোটা বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়ায় আমিনুর বিশ্বাস নামের একজন সিনিয়র আমাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় হেনস্তা করে যাচ্ছেন। আমার মাকে তুলে গালাগাল দিচ্ছেন। যার কল রেকর্ড ও স্ক্রিন রেকর্ডসহ সকল তথ্য প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এর বিচারের পাশাপাশি আমিনুর বিশ্বাসের বহিষ্কার চাই।
প্রসঙ্গত, গত (১১ জুলাই) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দুপুর ৩টায় ক্যাম্পাস থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধে যাওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আনসার ক্যাম্পের সামনে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ করে। যাতে চারজন সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। যদিও পরবর্তীতে পুলিশের বাধা অতিক্রম করে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে রাত ১১টা পর্যন্ত তাদের অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যায়।
এ সময় বিক্ষোভ মিছিল থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রক্টরের অপসারণ এবং হামলায় অংশগ্রহণ করা পুলিশ সদস্যদের তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার আল্টিমেটাম দেয়া হয়।