১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ফেনী‌তে কেয়ার‌টেকার‌কে পিটিয়ে হত্যা, ব‌্যাংক কর্মকর্তা আটক

ফেনী‌তে কেয়ার‌টেকার‌কে পিটিয়ে হত্যা, ব‌্যাংক কর্মকর্তা আটক - ছবি : প্রতীকী

ফেনীর ছাগলনাইয়ায় টাকা চুরির অভিযোগে মাকে গাছের সাথে বেঁধে রেখে নূর মোহাম্মদ (১৮) নামে এক কেয়ার‌টেকার‌কে পিটিয়ে হত্যার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জ‌ড়িত থাকার অ‌ভি‌যো‌গে মঈন উদ্দিন নামে এক ব‌্যাংক কর্মকর্তা‌কে আটক করেছে পুলিশ।

রোববার নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এর আগে, শনিবার বিকেলে ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠান নগর ইউনিয়নের বাথানিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

নুর মোহাম্মদ নোয়াখালীর সুধারাম থানার আন্দার চর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। তিনি ওই বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করতেন।

আটককৃত মঈন উদ্দিন ব্যাংক কর্মকর্তা ও বাথানিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মারধরের কথা স্বীকার করেছেন তিনি। 

নিহত নুর মোহাম্মদের মা বিবি খতিজা জানান, অভাবের কারণে চার বছর আগে নুর মোহাম্মদকে ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিনের বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে দিয়ে যান তিনি। 

ছেলেটির মাসিক বেতন ধরা হয়েছিল ২ হাজার টাকা। চার বছরে তাকে কখনো ছুটি দিত না ওই পরিবার। সেই ক্ষোভ থেকে গেল ২৭ রমজানে ওই বাসা থেকে ৮০ হাজার টাকা ভর্তি একটি খাম নিয়ে নিজ বাড়ি চলে যান নুর মোহাম্মদ। 

এরপর থেকে মোবাইলফোনে হুমকি দিতে থাকেন ব্যাংক কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের অব্যাহত হুমকিতে ঈদের পরদিন ছেলেকে নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে হাজির হন তিনি। একইসথে চুরি করে নেয়া টাকাগুলোও ফেরত দেন। 

বিবি খতিজার অভিযোগ, বাড়ি ঢোকা মাত্রই ব্যাংক কর্মকর্তার চারভাই মিলে তার ছেলেকে মারধর শুরু করেন। বাধা দিলে তাকেও মারধর করে গাছের সাথে বেঁধে রাখেন তারা।

এরপর সারা রাত দফায় দফায় এবং পরদিনও তার ছেলেকে মারধর করা হয়। তাদের মারধরের একপর্যায়ে শনিবার বিকেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে নুর মোহাম্মদ। 

এদিকে ছেলেকে হারিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিবি খতিজা বলেন, 'আমার ছেলের যদি কোনো অন্যায় থাকতো, তাহলে তারা তাকে পুলিশে দিতো। আমি তাদের কাছে আমার ছেলের জীবন ভিক্ষা চেয়েছি। তবু তাদের মন গলেনি। এভাবে নির্যাতন করে, আমার চোখের সামনেই ছেলেটিকে মেরে ফেলল। আমি এ হত্যার বিচার চাই।'

বিষয়টি নিশ্চিত করে ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের পিঠ, কোমর, হাত-পাসহ পুরো শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।


আরো সংবাদ



premium cement