ক্রোকারিজ দোকানে রাতভর মুরগির ‘তাণ্ডব’ : বিচারের মুখোমুখি মালিক
- চান্দিনা (কুমিল্লা) সংবাদদাতা
- ১৩ অক্টোবর ২০২২, ১৬:২৫, আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২২, ১৬:৪৫
কুমিল্লার চান্দিনা বাজারের একটি ক্রোকারিজ দোকানে রাতভর তাণ্ডব চালিয়ে দোকানের বহু সিরামিক ও কাচের মালামাল ভেঙে চুণ-বিচুর্ণ করে একটি মুরগি। এতে অন্তত ৭৫ হাজার টাকার মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনায় হামলাকারী ওই মুরগিকে আটক করে মালিককেসহ বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে।
মুরগির হামলার ওই ঘটনার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনাসহ হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। মুরগির হামলার কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ওই দোকানের মালিক। তবে ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন দত্ত ক্রোকারিজ নামের দোকান মালিক বাসুদেব দত্ত।
জানা যায়, চান্দিনা পশ্চিম বাজারের দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করে আসছেন বাসুদেব দত্ত নামের এক ব্যবসায়ী। ওই দোকানের ভিটিতে ব্যবসা করা নিয়ে মালিক পক্ষের সাথে ভাড়াটিয়ার দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব থাকারও অভিযোগ রয়েছে।
প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার (১২ অক্টোবর) সকালে দোকান খুলেই মাথায় হাত ওই দোকানির। দোকানের সাটারসহ সব কিছুই ঠিক-ঠাক আছে, কিন্তু পুরো দোকান লণ্ড-ভণ্ড। সারা দোকান জুড়ে ভেঙে-চুড়ে পড়ে আছে র্যাকে সাজানো কাচ ও সিরামিকের অনেক মালামাল। দোকানের ভেতরে ঢুকতেই মানুষ দেখে পালানোর চেষ্টা করে একটি মুরগি। তাৎক্ষণিকভাবে মুরগিটিকে ধরে আটক করেন দোকান মালিক বাসুদেব। খোঁজ নিতে শুরু করেন মুরগির মালিকানা। অবশেষে নিশ্চিত হন দোকানের দ্বিতীয় তলায় বসবাসরত দোকান ভিটির মালিক মুক্তা আক্তারের। বুঝতে আর বাকি রইল না তার। হামলাকারী ওই মুরগি আটক করে ব্যবসায়ী সমিতির কাছে বিচারের প্রার্থী হন ওই দোকানি।
তিনি জানান, দোকানের মূল মালিক মাহবুবুর রহমান। তিনি প্রায় তিন বছর আগে ইন্তেকালের পর থেকে তার স্ত্রী মুক্তা আক্তার প্রায়ই আমাকে দোকান ছেড়ে দেয়ার জন্য ঝামেলা করে আসছিলেন। আমার ভাড়ার মেয়াদ শেষ না হওয়ায় আমি দোকান না ছাড়ায় বিভিন্ন সময় আমাকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছিলেন মুক্তা আক্তার। ওইসব ঘটনাও ব্যবসায়ী সমিতি কয়েক দফা সালিশ-দরবার করেছেন। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টায় আমরা দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাই। তখনও দোকানে কোনো মুরগি ছিল না। সকালে এসে দোকানের এমন অবস্থা দেখার পর খুঁজে দেখি দোকানের ওপর থেকে একটি ফাঁকা স্থান, ওই স্থান দিয়েই মালিক মুক্তা আক্তার ইচ্ছাকৃতভাবে ওই মুরগিটি আমার দোকানে ছেড়ে দেয়। এতে অন্তত আমার ৭৫ হাজার টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়।
এ ঘটনায় মুক্তা আক্তার জানান, ‘আমার স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে তিনি (ব্যবসায়ী বাসুদেব) আমাকে ভাড়া প্রদান করেন না। আজ থেকে দুই মাস আগে আমি ভাড়া চাইতে গেলে সে আমাকে দোকান থেকে বের করে দেন। পরবর্তীকালে আমি থানায় পুলিশের আশ্রয় নিলে গণমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় সাময়িক সমঝোতা করলেও আজো ভাড়া পাইনি। ওই মুরগি আমার না, আমার শাশুড়ির মুরগি। ওই ঘটনার বিষয়টি আমার জানা নেই।’
চান্দিনা বাজারের ক্রোকারিজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুমুর রহমান জানান, তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এর আগেও আমরা একাধিক বার তাদেরকে নিয়ে বসে সমঝোতা করার চেষ্টা করেছি। মুরগির বিষয়টি আমাদেরও সন্দেহ জনক মনে হচ্ছে। দোকান মালিক আমাদের কাছে এসে বিচারের প্রার্থী হয়েছেন আমরা বিষয়টি নিয়ে শিগগিরই বৈঠক করব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা