২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

নবীনগরে সালিশি বৈঠকে সংঘর্ষে আহত আরো একজনের মৃত্যু, গ্রেফতার আতঙ্কে গ্রামছাড়া মানুষ

নবীনগরে সালিশি বৈঠকে সংঘর্ষে আহত আরো একজনের মৃত্যু, গ্রেফতার আতঙ্ক - ছবি : নয়া দিগন্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের মেরাতুলি গ্রামে সালিশের বিচারকদের ওপর হামলার ঘটনায় আহত মেরাতুলি গ্রামের সফর আলীর ছেলে আরাফাত (১৮) মারা গেছে।

সোমবার ভোরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। এর আগে এ ঘটনায় রোববার ভোরে বল্লমের আঘাতে মেরাতুলি গ্রামের মালেক সর্দারের ছেলে শাহ আলম (৪২) নামের এক ব্যক্তি নিহত হন।

এ নিয়ে ওই হামলায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।

এ দুই মৃত্যুর ঘটনায় গোটা গ্রাম মানুষশূন্য হয়েছে পড়েছে। প্রতিটি বাড়ির ঘরে ঝুলছে তালা। গ্রামে টহল দিচ্ছে পুলিশ।

এদিকে আরফাতের মৃত্যু নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য, কারণ শাহ আলমের সাথে আসা লোকজনের হাতে কোনো অস্ত্র ছিলো না বলে জানিয়েছেন আশপাশের লোকজন। তাহলে কার আঘাতে আহত হয়ে মারা গেছে আরাফাত? এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জনমনে। পুলিশ বলছে, তদন্তের পরই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।

সরেজমিনে জানা গেছে, মেরাতুলি গ্রামের জাহের মিয়ার ছেলে বাহার মিয়ার পরিবারের ঝগড়ার ভিডিও ধারণ করেন সফর আলীর ছেলে রিফাত, এ নিয়ে বাহার মিয়া ও রিফাতের মধ্যে ঝগড়া হয়। বিষয়টি মীমাংসা করতে শনিবার রাতে জাহের মিয়ার উঠানে সালিশ বসে। সালিশে জিয়া নামের একজন না আসায় সভায় উপস্থিত শাহ আলম এর কারণ জিজ্ঞেস করেন।

পরে তাকে তাদের ঘর থেকে ডেকে আনতে গেলে সফর আলী, সাঈদুল, ছুট্টু ও আরাফাতের সাথে তর্কবির্তক শুরু হলে সফর মিয়ার স্ত্রী, সালমা বেগম উপস্থিত লোকজনের উপর মরিচের গুড়া ছিটিয়ে দেন। এ সময় সফর আলীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সালিশে আসা লোকজনের উপর অন্ধকারের ভেতর এলোপাথাড়ি হামলা চালায়। এ সময় বল্লমের আঘাত শাহ আলমের চোখে লাগে। মাথায় আঘাত লাগে হামলাকারী আরাফাতের।

গুরুতর আহত অবস্থায় শাহ আলম ও আরাফাতকে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মধ্যরাতে দু’জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পথে রোববার ভোর রাতে শাহ আলম মারা যান। আরাফাতকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। সোমবার ভোরে তিনিও মারা যান। ওই হামলায় ৫ থেকে ৬ জন আহত হয়েছে।

আরাফাত হত্যার ঘটনায় নিহত শাহ আলমের ভাইসহ ৫জনকে আটক করেছে পুলিশ। শাহ আলমের হত্যার ঘটনায় তার ছেলে রোববার রাতে নবীনগর থানায় একটি একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ওই মালায় দুইজনকে গ্রেফতার করে আজ সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রশিদ জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার অভিযান চলছে।


আরো সংবাদ



premium cement