২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

মৌসুমি ফলের বিকিকিনিতে জমজমাট করেরহাট বাজার

মিরসরাইয়ের করেরহাটে বিক্রির জন্য রাখা মৌসুমি ফল কাঁঠাল - ছবি : নয়া দিগন্ত

মৌসুমি ফলের জমজমাট বেচাকেনা চলছে মিরসরাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী করেরহাট বাজারে। পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর মৌসুমি ফল আম, কাঁঠাল, জাম, আনারস, লেবু, পেয়ারার জন্য এই বাজারের সুখ্যাতি ব্যাপক। মিরসরাইয়ের সর্ব উত্তরে অবস্থিত এই বাজারে সপ্তাহে দুই দিন রোব ও বুধবার বসে বড় হাট। প্রতি হাটবারে এ বাজারে কয়েক লাখ টাকার ফলের কেনাবেচা হয়। ফেনী, নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা আসে নানান মৌসুমি ফল ক্রয়ের উদ্দেশ্যে। সড়কপথে যোগাযোগের সুবিধা এবং তুলনামূলক কম দামে পাইকারি ক্রয়-বিক্রয় হয় বলে করেরহাটে মৌসুমি ফলের হাট জমজমাট থাকে।

উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের বড় একটি অংশ উঁচু-নিচু টিলা আর পাহাড়বেষ্টিত বলে এসব ফল সহজে চাষাবাদ হয় এ এলাকায়। এর মধ্যে গ্রীষ্মকালীন নানা জাতের ফল চাষাবাদ, বাজারজাত ও বিক্রয়ের অন্যতম স্থান হলো এই বাজার। একসময় সীমিত আকারে করেরহাট ও এর আশপাশের এলাকায় আম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস, জাম্বুরাসহ নানা জাতের মৌসুমি ফল উৎপাদন করা হতো। এখন বাণিজ্যিকভাবেই এসব এলাকার বসতবাড়ির আঙিনা, খোলা পতিত জমি, এমনকি বন্দোবস্তি জমি নিয়ে খাসজমিতে গ্রীষ্মকালীন ফল চাষাবাদ করা হচ্ছে। এসব বাগানে বাণিজ্যিকভাবে প্রচুর পরিমাণে আম, কাঁঠাল, আনারস, লিচু, পেয়ারা, পেঁপে, ইত্যাদি চাষাবাদ করা হয়। করেরহাট ইউনিয়নের ফরেস্ট অফিস, সাইবেনী খিল, ঘেড়ামারা, কালাপানি, বদ্ধ, কয়লাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ফলের চাষ হয়। এসব এলাকায় কয়েক শত আম, কাঁঠাল, লেবুসহ বিভিন্ন ফলের বাগান রয়েছে।

সরেজমিনে করেরহাট বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, মধু ফলের মৌসুমে করেরহাট বাজারের চেহারাই বদলে গেছে। বাজারের প্রধান সড়কের দুই পাশে চলে আম, জাম, কাঁঠাল, আনারস, জামরুল ও লিচুর খুচরা-পাইকারি বিক্রেতাদের বিকিকিনি।

এলাকাটি মিষ্টিমধুর গন্ধে মৌ মৌ করছে। অধিকাংশ সময় বাজারের নির্দিষ্ট স্থানে সঙ্কুলান না হওয়ায় বিক্রেতারা সড়কের ওপরেই ফলে পসরা সাজিয়ে বসে পড়ে। হাটবারের আগের রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে আম, কাঁঠাল, আনারস নিয়ে বিক্রেতারা বাজারে আসতে থাকে। পাইকাররা হাটবার ভোর থেকেই স্থানীয় চাষি ও বিক্রেতাদের কাছ থেকেই ফল সংগ্রহ শুরু করে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে পাইকাররা তাদের সংগ্রহ করা ফল নিজস্ব পরিবহনে করে বোঝাই করে নিয়ে যায়। এখানকার কাঁঠাল ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে পাইকাররা। এ বাজারে কাঁঠালের বিকিকিনি বেশি হলেও আনারস, লেবুর বিক্রয় উল্লেখ করার মতো। আবার এখানে পাইকারি বিক্রয় বেশি হলেও খুচরা বিক্রয় পরিমাণও কম নয়।

বাজার পরিচালনা কমিটির সদস্য জাবেদ আহম্মদ ভূঁইয়া বলেন, পুরো উপজেলার মধ্যে মৌসুমি ফলের জন্য বিখ্যাত এ বাজার। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হওয়ায় এ বাজারের প্রায় সব ফলই ফরমালিন তথা বিষমুক্ত।

করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন বলেন, স্থানীয় ও পাহাড়ি অঞ্চল থেকে কৃষকরা যেন তাদের উৎপাদিত মৌসুমি ফল নির্বিঘ্নে বেচাকেনা করতে পারে এ জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। বাইরের পাইকাররা এখান থেকে বিভিন্ন ফল ক্রয় করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লাসহ অনেক জেলায় নিয়ে যায়।


আরো সংবাদ



premium cement