করোনায় লিচু বিক্রি নিয়ে সংশয় বাঁশখালীর বাগান মালিকদের
- এস এম রহমান পটিয়া-চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম)
- ০৫ মে ২০২০, ০৭:৩৪
মৌসুমের সেরা ফল লিচু। এই ফলের চট্টগ্রামের স্থানীয় জাত বাঁশখালী কালিপুরের রসালো লিচু সবে মাত্র রঙিন হয়ে উঠছে। আগামী দুই-এক দিনের মধ্যেই বাজারে আসতে শুরু করবে রাসালো এই লিচু। চলতি বছর লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। শুধুমাত্র বাঁশখালীতেই ১০০ কোটি টাকার লিচু বিক্রির সম্ভাবনা দেখছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সালেক। তবে চলতি বছর লিচুর বাম্পার ফলন হওয়ার সাথে পবিত্র রমজান মাস থাকায় লিচু বাগানিরা অধিক লাভের আশা করলেও করোনা সঙ্কটে লিচু বিক্রি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন অধিকাংশ বাগান মালিকরা।
জানা গেছে, বাঁশখালী কালিপুরের ৩০০ হেক্টরসহ পুরো উপজেলায় সাড়ে ৬০০ হেক্টর বাগানে স্থানীয় জাতের লিচু উৎপন্ন হয়। এ ছাড়াও দক্ষিণ চট্টগ্রামে বাঁশখালীর কালিপুরে স্থানীয় জাত ছাড়াও রাজশাহী বোম্বে, বারি- ১, ২, ৩ ও ৪ এবং চায়না- ৩ জাতের লিচু বাগানো রয়েছে।
বাঁশখালী কালিপুরের লিচু অনেকটা দিনাজপুরের লিচুর মতো হলেও এটি আকারে একটু ছোট। কিন্তুস্বাদে গন্ধে অতুলনীয়। তাই চট্টগ্রামবাসীর কাছে কালীপুরের লিচু বেশ প্রিয়।
বাঁশখালী উপজেলা কৃষি অফিসার আবু সালেক বলেন, প্রতি বছরই বাঁশখালীতে লিচুর ফলন বাড়ছে, উপজেলায় ২০১৫ সালে প্রায় ৫০ কোটি, ২০১৬ সালে ৬০ কোটি, ২০১৭ সালে ৭০ কোটি. ২০১৮ সালে ৮০ কোটি টাকা এবং ২০১৯ সালে প্রায় ৯০ কোটি টাকার লিচু উৎপাদিত হয়েছে। এবার তিনি ১০০ কোটি টাকার উপরে লিচু বিক্রির সম্ভাবনা দেখছেন।
গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম-বাঁশখালী উপজেলার লিচু বাগানগুলোতে গিয়ে দেখা যায় গাছে থোকায় থোকায় পাকা লিচু ঝুলছে। উপজেলার পুকুরিয়া, সাধনপুর, কালিপুর হয়ে বৈলছড়ি পর্যন্ত ৪-৫ কিলোমিটার পাহাড়ি এলাকাজুড়ে সড়কের পাশে, বাড়ির আঙ্গিনায়, পাহাড় ও লোকালয়ের লিচু বাগানে এখন শুধু লিচু আর লিচু।
কালিপুরের লিচু বাগান মালিক জসিম উদ্দিন জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে তিনি করোনা সঙ্কটে লিচু বিক্রি নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন। তিনি বলেন, এ বছর লিচুর ফলন যা হয়েছে তাতে এবার ৫ লাখ টাকার লিচু বিক্রির আশা করছেন তিনি। নুর মোহাম্মদ নামে অপর এক বাগানি বলেন, তিনি গত বছর ৯০ হাজার টাকার লিচু বিক্রি করেছেন। এ বছর দেড় লাখ টাকার লিচু বিক্রির আশা করছেন তিনি। কিন্তু করোনা সঙ্কটের কারণে লিচু বিক্রি নিয়ে বেশ সংশয়ে আছেন। একই এলাকার লিচু বাগান মালিক বদরুজ্জামান বলেন, লিচুর ভাল ফলন হয়েছে। গত বছর তিনি ৩ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করেছেন। এবার ৫ লাখ টাকার লিচু বিক্রির আশা করেন। কিন্ত করোনা ভাইরাসের কারণে গতকাল পর্যন্ত কোন পাকার যোগাযোগ করেনি। তাই এবার লিচু বিক্রি নিয়ে তিনি খুবই চিন্তিত বলে জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর চট্টগ্রাম জেলার উপপরিচালক আকতারুজামান বলেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ পুরো জেলাতে বর্তমানে ব্যাপকহবে মৌসুমী ফলের চাষ হচ্ছে। বাঁশখালীর স্থানীয় কালিপুর জাতের লিচু স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় বাঁশখালীর স্থানীয় জাত কালিপুর ছাড়াও রাজশাহীর বোম্বে, বারি- ১, ২, ৩ ও ৪ এবং চায়না- ৩ জাতের লিচুরও আবাদ হয় এখানে। এবার চলতি মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় মৌসুমি ফল আম কাঁঠাল লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। করোনা সঙ্কটকালে বাঁশখালী কালিপুরের লিচু পরিবহন ও বিপণন প্রসঙ্গে তিনি জানান, কৃষিজাত পণ্য পরিবহনে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। কাজেই লিচু বিক্রি নিয়ে তেমন সমস্যা হবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা