২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ভেজালের ভিড়ে বিষমুক্ত সবজি গ্রাম

জগতপুর গ্রামের একটি নিরাপদ সবজির গ্রাম। - ছবি : নয়া দিগন্ত

বিষমুক্ত শাকসবজি খাওয়ানোর সংকল্পে একজোট হয়েছেন এক গ্রামের সব কৃষক। শীত মৌসুম থেকে সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়াই নিরাপদ সবজি আবাদ করছেন তারা। এই কৃষকেরা সবাই ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার পূর্ব চন্দ্রপুর ইউনিয়নের জগতপুর গ্রামের বাসিন্দা।

এই প্রচেষ্টার কারণে গ্রামটি এখন নিরাপদ সবজির গ্রাম বা অরগানিক কৃষি গ্রাম হিসেবে পরিচিত। প্রায় ৩০ জন কৃষক এবার তাদের জমিতে চাষ করেছেন বিষমুক্ত শাকসবজি।

মঙ্গলবার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: আব্দুল্লাহ আল মারুফের পরামর্শে গ্রামের ৩০ বিঘা জমিতে চাষ হচ্ছে বিষমুক্ত নানারকম সবজি। বর্তমানে জমিতে রয়েছে শিম, টমেটো, ফুলকপি, ক্ষিরা, ভুট্টা, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, মুলা, বেগুন, ধনেপাতা ইত্যাদি।

ওই গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন বলেন, আগে আমরা জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক স্প্রে করতাম। তবে আমরা জানতাম না এসব ফসল বিষাক্ত এবং এসব খেয়ে মানুষেরা নানা রোগে আক্রান্ত হয়। আমরা কৃষি বিভাগের কাছ থেকে জানতে পারি, রাসায়নিক সার, কীটনাশক প্রয়োগে জমির ফসল বিষে পরিণত হয় এবং মাটি উর্বরতাশক্তি হারিয়ে ফেলে।

তারা আরো জানান, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি মানুষকে আর বিষ খাওয়াব না। বর্তমানে আমাদের গ্রামের সবাই নিরাপদ সবজি আবাদে সংকল্পবদ্ধ হয়েছেন।

জগতপুর গ্রামের কৃষকেরা জানান, কপি, বেগুন, করলা, লালশাক, সবজি জাতীয় সবকিছুই আমাদের এখানে আছে। আমরা চাই বিষমুক্ত সবজি। কারণ বিষ প্রয়োগ করলে সবার ক্ষতি। বিষমুক্ত সবজি ও নিরাপদ খাদ্য আমরা যাতে উৎপাদন করতে পারি, সে চেষ্টা করছি। যাতে বাংলাদেশের মানুষ নিরাপদ সবজি খেতে পারে। আমরা বিষমুক্ত সবজির দামও বেশি পাবো।

উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মারুফ জানান, নিরাপদ কৃষি গ্রাম হচ্ছে একটি পরীক্ষামূলক কার্যক্রম। প্রকৃতপক্ষে কৃষিকে বিষমুক্ত করতেই এই উদ্যোগ। এতে কৃষকদের সাড়া মিলছে প্রচুর।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: রাফিউল ইসলাম বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে দেশের প্রতিটি উপজেলায় দুটি গ্রামকে নিরাপদ সবজি গ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করাসহ একটি গ্রামকে নিরাপদ ফল গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করতে বলা হয়েছে। যার মধ্যে জগতপুর একটি গ্রাম। বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করার জন্য মাঠপর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষক গ্রুপ, উঠান বৈঠকসহ হাতে-কলমে কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকেন। তাই কৃষকদেরকে বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এই বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন পদ্ধতি কৃষকদের আকৃষ্ট করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement