সাজেকে আগুন : ১৩০টির বেশি রিসোর্ট, কটেজ ও দোকান পুড়ে ছাই
- রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
- ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩:৫৩, আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:১৭

রাঙ্গামাটির পর্যটন কেন্দ্র সাজেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে ১৩০টির বেশি রিসোর্ট, কটেজ ও দোকান।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে একটি রিসোর্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আকতার জানিয়েছেন, সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে লাগা আগুন মুর্হুতেই আশেপাশের রিসোর্টে ছড়িয়ে পড়ে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত আগুন স্থায়ী হয়। এতে ১৩০ থেকে ১৩৫টির বেশি রিসোর্ট, কটেজ, দোকান ও বসতঘর পুড়ে গেছে। শেষ খবর পর্যন্ত এখনো হতাহতের কোনো খবর জানা যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার দুপুরে প্রথমে সাজেক অবকাশ রিসোর্টে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। পরে মুর্হূতে আগুন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে সাজেকের অবকাশ রির্সোট, ইকোভ্যালি রির্সোট, মেঘছুট রিসোর্ট, মনটানা রেষ্টুরেন্ট, মারুয়াতি রেষ্টুরেন্টসহ ১৫টি রিসোর্ট ও কটেজ পুড়ে যায়। এ আগুন নেভাতে স্থানীয়দের সাথে নিয়ে লড়ে যায় সেনাবাহিনীর বাঘাইহাট জোন, ২৭ ও ৫৪ বিজিবির জোয়ানরা।
রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, বেলা ১টার দিকে সাজেক ইকো ভ্যালি রিসোর্টে প্রথমে আগুন লাগে। পরে তা আশেপাশের বসতঘর ও রিসোর্ট-কটেজে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কয়েক শ’ পর্যটক আতঙ্কিত হয়ে রিসোর্ট ও কটেজ থেকে বেরিয়ে যান। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস পৌঁছাতে পারেনি। দুর্গমতার কারণে ফায়ার সার্ভিস ইউনটিগুলো পৌঁছাতে সময় লেগেছে এবং পানির সংকট থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রনে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে।
আগুন লাগার ঘটনার খবর পাওয়ার সাথে সাথে আগুন নির্বাপনের জন্য রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার ফায়ার সার্ভিস রওনা দেয়।
সাজেকের হিলভিউ রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী ইন্দ্রজিৎ চাকমা জানান, আগুন নেভাতে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় লোকজন চেষ্টা চালান। সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৩০টির বেশি রিসোর্ট-কটেজ পুড়ে গেছে। দিঘীনালা থেকে ফায়ার সার্ভিস সাজেকে পৌঁছাতে দু’ঘণ্টা লেগে যায়। এখানে যদি একটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট থাকতো এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না বলে তিনি জানান।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আকতার জানান, দুপুরের দিকে সাজেকের একটি রিসোর্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে সেনাবাহিনী ও স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। সাজেকে ফায়ার সার্ভিসের কোনো ইউনটি না থাকায় খবর পাওয়ার সাথে সাথে খাগড়াছড়ির দীঘনিালা থেকে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা চালায়। তবে কিভাবে আগুনের সূত্রপাত ও কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা পরে জানা যাবে বলে তিনি জানান ।
বিকেলে পর্যটন কেন্দ্র সাজেক ভ্যালিতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন সেনাবাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তা ও বাঘাইছড়ি উপজলো প্রশাসন।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সোমবার ১টা ১৫ মিনিটে সাজেক পর্যটন এলাকায় শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে সাজেক অবকাশ ম্যানুয়েল রিসোর্টসহ পাশের রিসোর্টে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। আগুন মুহূর্তেই আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার সাথে সাথে দ্রুত আগুন নির্বাপনের জন্য রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার ফায়ার সার্ভিসসহ স্থানীয়দের সাথে যোগাযোগের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর রিজিয়ন কমান্ডার রাঙ্গামাটি, রিজিয়ন কমান্ডার খাগড়াছড়ি, জোন কমান্ডার বাগাইহাট এবং খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ করে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
৩টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত আগুনে প্রায় একপাশ পুড়ে যায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৯০-৯৫ টির বেশি রিসোর্ট, ঘরবাড়ি, রেস্তোরাঁ আগুনে পুড়ে গেছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয়দের নিকট হতে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
দীঘিনালা উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছে,খাগড়াছড়ির ফায়ারসার্ভিস ইউনিটও এর সাথে যোগ দেয়। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের সাথে সবসময় যোগাযোগের মাধ্যমে পর্যটক গমন সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হয়েছে।
নিকটবর্তী দীঘিনালা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছেন।
সাজেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এয়ারফোর্সের ২টি হেলিকপ্টার মুভ করার জন্য প্রস্তত করা হলেও আগুন নিয়ন্ত্রনে আসা এবং সন্ধ্যা নামায় তা স্থগিত করা হয়েছে মর্মে সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা