যৌন নীপিড়ন ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে ওসির বিরুদ্ধে মামলা, বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ
- ঈদগাঁও (কক্সবাজার) সংবাদদাতা
- ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:২৪

মধ্যরাতে বসত ঘরে ঢুকে যৌন নিপীড়ন ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং ১ কক্সবাজারে এ মামলা করেন ভিকটিম জাহেদা বেগম। তিনি চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালী গ্রামের বাসিন্দা আবদুল গাফফারের স্ত্রী। একই মামলায় চকরিয়া থানার এসআই মো: শফিকুল ইসলাম রাজাসহ মোট পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী তৈয়বুল আলম জানান, বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া চকরিয়া থানায় যোগদানের পর থেকে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন স্তরের নিরীহ জনগণকে হয়রানি করে আসছেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি তার দেবরকে আটক করে জামিনযোগ্য ধারায় চালান দেয়ার কথা বলে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু ভিকটিম টাকা না দেয়ায় গভীর রাতে তার বসত ঘরে ঢুকে তাকে যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানি করেন ওসি।
অভিযুক্ত ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের বোয়ালখালী গ্রামের বাসিন্দা আকতার হোছাইন বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ছিলেন তৎকালীন ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মনজুর কাদের ভূঁইয়া। বিগত ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাওলানা দেলাওয়ার সাঈদীর বিরুদ্ধে সাজানো রায়ের প্রতিবাদে ঈদগাঁও বাজারে জনগণ মিছিল বের করলে মিছিলে গুলিবর্ষণ করেন মনজুর কাদের ভূইয়া। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তার ভাই রশিদ আহমদ। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি মনজুর কাদের এখন চকরিয়া থানার ওসি।
আকতার হোছাইন আরো বলেন, ওসির চেয়ারে বসে মামলা প্রত্যাহার করতে বহুমুখী চাপ দিচ্ছেন আসামি মনজুর।
জাতীয় দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের কক্সবাজারস্থ স্টাফ রিপোর্টার মনছুর আলম মুন্না বলেন, ওসি মনজুরের ঘুষ বাণিজ্য ও অনিয়মের ব্যাপারে সংবাদ প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হন ওসি। এর জের ধরে গত ২৫ ডিসেম্বর রাতে ৬০ কিলোমিটার দূরবর্তী চকরিয়া থেকে কক্সবাজার এসে তাকে অপহরণ করে চকরিয়া থানায় নিয়ে যান ওসি মনজুর। সারা রাত মারধর ও নির্যাতন শেষে পরদিন ওসি নিজেই মামলা করে সাংবাদিক মনছুরকে চালান দেন।
২১ দিন পর জামিনে কারামুক্ত হয়ে চকরিয়া থানার ওসি মনজুর, তিন এসআই ও চার কনস্টেবলের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে আদালতে মামলা করেন সাংবাদিক মনছুর।
মামলাটি সিআইডি পুলিশের নিকট তদন্তাধীন রয়েছে। আসামিরা এ মামলাটিও প্রত্যাহার করতে বহুমুখী চাপ দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এছাড়াও ওসি মনজুর কাদেরের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া আরো বিভিন্ন অভিযোগ পুলিশ হেড কোয়ার্টার, পুলিশ মহাপরিদর্শক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের নিকট তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।